নিজস্ব চিত্র।
সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল আসনে জেতার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই কি আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপি এবং মোদী-বিরোধী প্রধান মুখ? গত কয়েক বছরে যে ভাবে বার বার মোদী সরকারের বিরোধিতায় বাকি বিরোধী দলগুলি মমতার ডাকে সাড়া দিয়েছে তাতে, তাঁর জয়ের পর এই জল্পনা আরও জোরালো হয়েছে। যে জল্পনা আরও একধাপ এগিয়ে গেল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক শেষে মমতা সকলের হয়ে ক্ষোভ উগরে দেওয়ায়।
মমতার অভিযোগ, কোনও মুখ্যমন্ত্রীকেই কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে প্রধানমন্ত্রী একতরফা বলে গিয়েছেন। যে সূত্রে মমতার অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী নিজেই যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো মানছেন না। তিনি আরও বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করেছেন!’’
যে সূত্রে মমতাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ২০২৪ সালে কি আপনি নেত্রী হবেন? বিজেপি বিরোধী মঞ্চ হলে মুখ হবেন? তার জবাবে মমতা বলেন, ‘‘আমি কোভিড নিয়ে লড়তে চাই। আমার ফার্স্ট প্রায়োরিটি কোভিড নিয়ে লড়াই করা।’’ সেই সঙ্গে মমতা আরও বলেন, ‘‘আমি মনে করি সারা দেশে বিজেপি বিরোধী একটা টিম হওয়া দরকার। যারা বিজেপি-র একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে। ডিক্টেটরশিপ বনাম ডেমোক্রেসির লড়াই হবে। আমরা ডেমোক্রেসির পক্ষে।’’
বৃহস্পতিবার মোদীর আহূত বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও মহারাষ্ট্র, কেরল, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তীসগড়, হরিয়ানা, ওড়িশা, রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশ ও পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রীরা ছিলেন। তার মধ্যে এক দিকে যেমন ছিল বিজেপি-শাসিত উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, তেমনই অন্যদিকে ছিল বাম-শাসিত কেরল, কংগ্রেস-শাসিত ছত্তীসগড়, রাজস্থান এবং শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি শাসিত মহারাষ্ট্রও।
বৈঠক শেষে মমতা সব মুখ্যমন্ত্রী হয়েই মোদীকে আক্রমণ করেছেন। বলেছেন, ‘‘হাতে প্রশ্ন নিয়ে পুতুলের মতো বসেছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীদের যদি বলতেই দেবেন না, তাহলে ডাকলেন কেন! জেলাশাসকদের নিয়েই তো বৈঠক করতে পারতেন প্রধানমন্ত্রী।’’ এই ঘটনায় যে তিনি অপমানিত, তা স্পষ্ট বলেছেন মমতা। আরও অভিযোগ করেছেন, সব রাজ্য নয়, শুধু মাত্র বিজেপি-শাসিত রাজ্যের জেলাশাসকদের সঙ্গেই নাকি কথা বলেছেন মোদী। তবে মমতার ক্ষোভের প্রসঙ্গে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘ওই বৈঠক মূলত জেলাশাসকদের সঙ্গে ছিল। মুখ্যমন্ত্রীরা কষ্ট পেতে পারেন। তাই তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আসলে ওঁর কাছের লোকেরা এখন জেলবন্দি। তাই মনের কষ্টে এই সব বলছেন মমতা।’’ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইট করেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ফের দেখালেন, প্রশাসনের প্রতি তাঁর আস্থা নেই। জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠককে রাজনৈতিক রং দেওয়ার চেষ্টা করলেন তিনি’। দ্বিতীয় একটি টুইটে শুভেন্দু লেখেন, ‘গত কয়েক মাসে বার বার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি একটি বৈঠকেও উপস্থিত হননি। এখন জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে থেকে রাজনীতি করছেন’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy