আগের রাতেই গতির ‘লড়াই’ চলেছে দু’টি গাড়ির মধ্যে। উত্ত্যক্ত করায় ধাওয়া, না রেষারেষি, তা নিয়ে চাপান-উতোরের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক ও পানাগড়ে পুরনো জিটি রোডে পুলিশের নজরদারি ছিল না কেন? রাতে এই পথে নজরদারি কেমন থাকে, তা দেখতেই মোটরবাইকে বেরিয়েছিলাম সোমবার রাতে।
পানাগড়ের রাইসমিল রোডে ঢোকার মুখে যেখানে গাড়ি উল্টে মৃত্যু হয় চন্দননগরের সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের, সোমবার রাত ১০টা নাগাদ সেখানে পৌঁছে দেখা গেল, পুলিশ রয়েছে। আশপাশের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে আগের রাতের ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে। সেখান থেকে এগোলাম জাতীয় সড়কের দিকে। প্রায় এক কিলোমিটার দূরত্বে আলো নেই। জিটি রোড যেখানে জাতীয় সড়কে মিশেছে, সে মোড়ে দেখা নেই পুলিশের। পানাগড় সার কারখানার আন্ডারপাসের কাছে দেখা মিলল পুলিশের টহলদার গাড়ির। কলকাতার দিকে যাওয়ার লেন লাগোয়া সার্ভিস রোডে দাঁড়িয়ে। আরও ৪ কিমি এগিয়ে ফের পুলিশের গাড়ি নজরে পড়ল। সেটিও কলকাতা যাওয়ার লেনের দিকে সার্ভিসরোডে থেমে।
জাতীয় সড়ক ধরে ১০ কিমি গিয়েও, আসানসোলগামী লেনের দিকে পুলিশের টহলদার গাড়ি নজরে এল না। ঘটনাচক্রে, এই দিকের লেন ধরেই রবিবার রাতে ছুটেছিল সুতন্দ্রাদের গাড়ি ও সাদা এসইউভি। কেন শুধু কলকাতার দিকের লেনে নজর? পানাগড়ের ট্রাক মালিক সংগঠনের এক কর্তা বলেন, ‘‘শুধু ওই লেনে পুলিশ কেন থাকে, তা সহজেই অনুমেয়। এ বিষয়ে ট্রাক চালকেরা বেশি ভাল বলতে পারবেন।’’ একাধিক চালকের দাবি, কলকাতাগামী লেনে রাতে বহনক্ষমতার অতিরিক্ত বালি, পাথর বোঝাই ট্রাক চলে। অনেক পুলিশকর্মী তা নিয়ে ‘ব্যস্ত’ থাকেন।
আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেটের এক কর্তার দাবি, ‘‘টহলদার গাড়ি নানা জায়গায় থাকে। তবে জাতীয় সড়কে দ্রুত গতির গাড়িতে কী হচ্ছে, সার্ভিস রোড থেকে তা বোঝা যায় না। ট্রাকে নজর দিতে গিয়ে জাতীয় সড়কে নজর রাখায় গাফিলতি হয়— এমনঅভিযোগ পাইনি।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)