যুব মোর্চার অনুষ্ঠানে মৌমিতা সাহা ও সৌমিত্র খাঁ। ফাইল চিত্র
বিধানসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর থেকেই রাজ্য বিজেপি-র নানা অন্তর্দ্বন্দ্ব সামনে আসতে শুরু করেছে। আর তাতে বড় অংশ নিয়েছে দলের যুব শাখা। নানা বেঁফাস মন্তব্য করে বিতর্ক তৈরি করেছেন যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। অস্বস্তিতে পড়েছে দল। আবার মোর্চার কার্যকারিণী বৈঠকে প্রকাশ্যে দিলীপ ঘোষের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন সৌমিত্র। এ সবের মধ্যেই গত সোমবার হেস্টিংসে মোর্চার বৈঠকে বচসা, হাতাহাতি ঘিরে উত্তেজনায় অসুস্থ হয়ে পড়েন মোর্চার রাজ্য সহ সভাপতি রাজু সরকার। পরে তাঁর মৃত্যুও হয়। সেই ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই তৈরি হয়েছে আর এক বিতর্ক। একটি মণ্ডলের সম্পাদক মৌমিতা সাহাকে সরাসরি রাজ্য সম্পাদক করে দেন সৌমিত্র। যা বিজেপি-র প্রথা বিরুদ্ধ বলে দাবি তুলে মোর্চারই একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ শুরু করে দেন। আর তা নিয়ে এখনও জলঘোলা চলছে। ইতিমধ্যেই বিক্ষুব্ধরা উচ্চ নেতৃত্বের কাছে নালিশও জানিয়েছেন।
কিন্তু ঠিক কী ঘটেছে? কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন সৌমিত্র? কী বলছেন বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা নেত্রী মৌমিতা? খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন।
মৌমিতাকে রাজ্য সম্পাদক হিসেবে নিয়োগের পরে গত বুধবার তাঁকে যুব মোর্চার অফিশিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত করা হয়। এর পরেই শুরু হয় বিতর্ক। যুব মোর্চার একাধিক কর্মীর আক্রমণের মুখে পড়েন সৌমিত্র ও মৌমিতা। শুধু তাই নয়, মৌমিতাকে দায়িত্ব দেওয়ার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব যুব মোর্চার রাজ্য নেতা আরুশ সাহু, বনশ্রী মণ্ডল এবং ঝিলম বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রুপ থেকে বের করে দেওয়া হয়। নিজের থেকে গ্রুপ ছেড়ে দেন প্রিয়াঙ্কা শর্মা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, দলের নিয়ম ভেঙে মৌমিতাকে জেলা থেকে সরাসরি রাজ্য কমিটিতে এনে সম্পাদক পদ দেওয়া হয়েছে। এটা সংগঠনের রীতি বিরুদ্ধ।
সৌমিত্র অবশ্য রীতি ভাঙা হয়েছে বলে মনে করেন না। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘মৌমিতা দলের পুরনো কর্মী। ওঁর পরিবারও বিজেপি-তে খুবই সক্রিয়। অনেক অত্যাচার সহ্য করে কাজ করেছেন গত বিধানসভা নির্বাচন পর্বে। প্রয়াত রাজু সরকার চেয়েছিলেন ওকে কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হোক। বলতে পারেন, আমি রাজুর শেষ ইচ্ছা পূরণ করেছি।’’মৌমিতা যে রাজুর ঘনিষ্ঠ ছিলেন সেটা অবশ্য অতীতে মোর্চার বিভিন্ন কর্মসূচিতেও দেখা গিয়েছে।কিন্তু মণ্ডল সম্পাদককে কি সরাসরি রাজ্য সম্পাদক করা যায়? সৌমিত্র বলেন, ‘‘এমন কোনও নিয়ম নেই যে করা যাবে না। মোর্চার সভাপতি হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে আমার। আর মৌমিতা আমার পরিচিত এমন কোনও ব্যাপার নেই। যোগ্যতার বিচারেই পদ দিয়েছি। সম্প্রতি ১৯ জনকে দলের বৈঠকে বক্তব্য রাখতে বলেছিলাম। সেখানে মৌমিতার কথা শুনে মনে হয়েছিল ও দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে পারবে। আর একা সিদ্ধান্ত নিইনি। সংগঠনের অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলেই ঘোষণা করেছি।’’
মৌমিতা অবশ্য এমন বিতর্কের মধ্যে চুপ থাকতে চাইছেন। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘আমি এই নিয়ে কোনও বিতর্কে যেতে চাই না। আমি তো কিছু করিনি। উচ্চ নেতৃত্ব আমায় রাজ্য সম্পাদক করেছেন। অতীতেও আমি নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত মেনে চলেছি, আগামী দিনেও মানব।’’ তাঁকে ঘিরে এত বিতর্কের পরেও তিনি চুপ কেন? জবাবে মৌমিতা বলেন, ‘‘একটু অপেক্ষা করুন, সবটা জানতে পারবেন। হয়তো আজ (শনিবার) বিকেলেই।’’
বিজেপি যুব মোর্চার কমিটি বিতর্ক নতুন কিছু নয়। বছর খানেক আগে গত অক্টোবরেই সৌমিত্রর গড়া সব জেলা কমিটি ভেঙে দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সে নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এ বার বিতর্ক চলছে সংগঠনের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। আপাতত তা বন্ধ করতে বিদ্রোহীদের গ্রুপ থেকে বের করে দেওয়ার পাশাপাশি সদস্যদের মন্তব্য করার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি সূত্রে খবর, এখন ওই গ্রুপে শুধু অ্যডমিনরাই পোস্ট করতে পারছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy