হাড়োয়ায় তৃণমূলের প্রার্থী নিয়ে জল্পনা। ইনসেটে বিতর্কিত সেই ফ্লেক্স। ছবি: সংগৃহীত।
হাড়োয়া বিধানসভার উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে চেয়ে অনেক নামের আবেদন জমা পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে। তারই মধ্যে হাড়োয়া এলাকায় স্থানীয় প্রার্থীর দাবিতে একটি ফ্লেক্স বিতর্ক বাড়িয়েছে শাসকদলের অন্দরে।
বসিরহাটের প্রয়াত সংসদ হাজি নুরুল ইসলামের পদত্যাগের কারণে খালি হওয়া এই বিধানসভার আসনে দাবিদার অনেকে। বসিরহাট লোকসভায় জয়ী হওয়ার পর তিনি বিধায়ক পদ ছেড়েছিলেন। কিন্তু ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি প্রয়াত হয়েছেন। আর তাঁর শূন্যস্থান পূরণে দলীয় নেতৃত্বকেও প্রার্থী ঠিক করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। এর মধ্যে হাড়োয়া এলাকায় দেখা গিয়েছে বিতর্কিত ফ্লেক্স। তাতে লেখা হয়েছে, ‘‘আসন্ন ১২১ হাড়োয়া বিধানসভার উপনির্বাচনে হাড়োয়া বিধানসভার ভূমিপুত্রকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায় হাড়োয়া বিধানসভা সাধারণ জনগণ।’’ ঘটনাচক্রে, প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন প্রয়াত সাংসদ হাজি নজরুলের দুই পুত্রও। তাঁর বড় ছেলে আনারুল ইসলাম এবং মেজো ছেলে রবিউল ইসলাম। যিনি সম্প্রতি জেলা পরিষদ সদস্যের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই তাঁর নামে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে সুপারিশ করেছেন রাজ্যের এক মন্ত্রী এবং এক সাংসদ।
কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কন্যা প্রিয়দর্শিনী হাকিমের নাম নিয়েও আলোচনা চলছে বলেই তৃণমূল সূত্রে খবর। লোকসভা নির্বাচনের মাস ছয়েক আগে থেকেই বসিরহাট লোকসভায় যাতায়াত বাড়িয়েছিলেন প্রিয়দর্শিনী। সেই সময় তাঁর বসিরহাটে প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। কিন্তু লোকসভায় হাজি নুরুলকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দেওয়ায় যাবতীয় জল্পনা থেমে যায়। সম্প্রতি হাজি নুরুল প্রয়াত হওয়ার পর আবারও প্রিয়দর্শিনীর নাম নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, হাড়োয়া বিধানসভার উপনির্বাচনেও প্রার্থী হতে পারেন মেয়র-কন্যা। কারণ, প্রার্থিপদ নিয়ে স্থানীয় নেতৃত্বের মধ্যে দ্বন্দ্ব মেটাতে কলকাতা থেকে প্রিয়দর্শিনীকে প্রার্থী হিসাবে নিয়ে যাওয়া হতেই পারে।
কেন প্রার্থিপদ নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিতে পারে? কারণ, হাজি নজরুলের দুই পুত্র ছাড়াও প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন স্থানীয় বেশ কয়েক জন নেতা। প্রার্থী হিসাবে দৌড়ে রয়েছেন মিনাখাঁ ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি আব্দুল খালেক মোল্লা। যিনি আবার মিনাখাঁ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতিও বটে। হাড়োয়া ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শফিক আহমেদ টিকিট পাওয়ার জন্য দরবার শুরু করেছেন বলেই তৃণমূল সূত্রে খবর। বারাসাত-২ নম্বর ব্লকের অধীন দাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আব্দুল হাই আবার বারাসাত এলাকার একটি নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত। উপনির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে বারাসত-২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শম্ভুনাথ ঘোষ। বামফ্রন্ট সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী মোর্তাজা হোসেনকেও অনেকে এই লড়াইয়ে রাখছেন। তবে তাঁর টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় রয়েছে। হাড়োয়া বিধানসভা এলাকা সুন্নি মুসলমান অধ্যুষিত। আর মোর্তাজা একজন শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত। তিনি আবার বাদুড়িয়ার বাসিন্দা। এ ছাড়াও বসিরহাট উত্তরের প্রাক্তন বিধায়ক এটিএম আব্দুল্লাকেও এই আসনের যোগ্যপ্রার্থী মনে করছেন বসিরহাট জেলা তৃণমূলের একাংশ। তবে তিনিও হাড়োয়ার বাসিন্দা নন। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘যাঁরাই স্থানীয় প্রার্থীর দাবিতে পোস্টার ঝুলিয়েছেন, তাঁরা মোটেই ভাল কাজ করেননি। দল যাঁকে টিকিট দেবেন, তিনিই আমাদের প্রার্থী। এ ভাবে দলের নেতৃত্বের ওপর ‘চাপ’ তৈরি করা সঠিক পন্থা নয়।’’ প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে হাড়োয়া থেকে হাজি নুরুল ১ লক্ষ ১০ হাজার ভোটে এগিয়েছিলেন। তাই এমন একটি নিশ্চিত আসনে মনোনয়ন পেতে চাইছেন টিকিট প্রত্যাশীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy