Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Visva Bharati

বিশ্বভারতীতে হামলা চালাল কারা, পরিচয় নিয়ে তরজা

বুধবার রাতের ওই হামলায় শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে অচিন্ত্য বাগদি ও সাবের আলি বক্সকে।

বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে অচিন্ত্য বাগদি। ফাইল চিত্র

বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে অচিন্ত্য বাগদি। ফাইল চিত্র

বাসুদেব ঘোষ 
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৩৩
Share: Save:

ক্যাম্পাসের মধ্যে বিদ্যাভবন হস্টেলে রাতের অন্ধকারে লাঠি, রড, উইকেট নিয়ে কারা হামলা চালাল, তাঁরা কোন সংগঠনের সদস্য— বৃহস্পতিবার দিনভর বিশ্বভারতীতে সেই তরজা চলল। তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে পরস্পর-বিরোধী মত উঠে এসেছে। এসএফআই এবং ছাত্রছাত্রীদের একাংশের দাবি, এবিভিপি-ই রয়েছে হামলার পিছনে। তৃণমূলেরও একই দাবি। যদিও এবিভিপি অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলছে, অভিযুক্তেরা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত।

বুধবার রাতের ওই হামলায় শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে অচিন্ত্য বাগদি ও সাবের আলি বক্সকে। আর এক অভিযুক্ত সুলভ কর্মকার অধরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় বুধবার রাতের হামলার যে-সব ভিডিয়ো ফুটেজ ঘুরছে, তাতে এদের তিন জনকেই দেখা গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অচিন্ত্যের বাড়ি শান্তিনিকেতনের সুরুল গ্রামে। বর্তমানে বিশ্বভারতীর দর্শন বিভাগের এমএ প্রথম বর্ষের ছাত্র। সুলভের বাড়ি নানুরের বাসাপাড়ায়। এখন ইতিহাস বিভাগের বিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। সুলভকে কিছু দিন আগেও এবিভিপি-র বিভিন্ন কাজে দেখা গিয়েছে বলে পড়ুয়াদের অভিযোগ। আর এক ধৃত সাবেরের বাড়ি বোলপুরের মহিদাপুরে। তিনি কোন বিভাগের ছাত্র, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। বছর দু’য়েক আগে বিদ্যাভবন হস্টেলের এক আবাসিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল সাবেরের বিরুদ্ধে। তখনও পুলিশে অভিযোগ হয়েছিল।

ছাত্রছাত্রীদের অনেকের দাবি, অচিন্ত্য, সাবের তৃণমূল ঘনিষ্ঠ। তৃণমূলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও পরিচিত মুখ ছিলেন তাঁরা। রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের সঙ্গে ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে। আবার কিছু মহলের দাবি, অভিযুক্তেরা আগে তৃণমূল করলেও এখন গেরুয়া শিবিরের নাম লিখিয়েছেন। অচিন্ত্য পাল্টা দাবি করেছেন, ‘‘আমরা এবিভিপি, এসএফআই করি না। আজীবন তৃণমূলেরই সদস্য। এসএফআই এবং এবিভিপি মিলেই আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, বিদ্যাভবন হস্টেলে বুধবার রাতে মিটিং করতে ঢুকেছিলেন যাদবপুর এবং জেএনইউ-এর কিছু পড়ুয়া। হস্টেলের ছাত্রেরা বাধা দিলে তাঁদের মারধর করা হয়।

আরও পড়ুন: ‘হস্টেলে ঢুকেছিস কেন, বলে মার শুরু’

অচিন্ত্য, সাবের দলের সঙ্গে যুক্ত নন বলে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের। ২০১৮ সালে ওই দু’জন-সহ বেশ কয়েক জনকে দল বিরোধী কাজকর্মের জন্য বহিষ্কার করা হয়। তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য তথা বিশ্বভারতীর কর্মিসভার সভাপতি গগন সরকার বলেন, ‘‘ওরা দলের কেউ নয়।’’ চন্দ্রনাথ সিংহের মন্তব্য, ‘‘ঘটনা এক রকম ঘটে। আর এক রকম ভাবে সামনে আসে। আমার সঙ্গে ওই ছেলেটির ছবি দেখানো হচ্ছে। এখন ওই ছেলেটির কী অবস্থান, তা আমায় জেনে বলতে হবে।’’ এবিভিপি-র বীরভূম জেলা নেতা রমেশ প্রামাণিকের আবার দাবি, ‘‘যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে এবিভিপি কোনও ভাবেই যুক্ত নয়। ধৃতেরা এবিভিপি-র সদস্যও নয়। আমরাও এই ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি।’’

তবে, ধৃতেরা উপাচার্যের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের অনেকের অভিযোগ। তাঁরা মনে করাচ্ছেন, ‘‘এ বার নির্দিষ্ট সময়ের পরেও পৌষমেলা চলায় অভিযানে নেমেছিলেন উপাচার্য। তখনও অচিন্ত্য, সাবেররা উপাচার্যের সঙ্গে ছিল। মেলা তুলতে ওরা প্রচণ্ড সক্রিয় ছিল। একাধিক সভা, মিছিলেও পরিচিত

মুখ ওরা।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Violence Visva Bharati ABVP Injury Student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE