Advertisement
২১ অক্টোবর ২০২৪
Junior Doctors’ Protest

‘পঙ্গপালের মতো’ বৈঠকে যেতে চাইছেন না জুনিয়র ডাক্তারেরা, চাইছেন কথা হোক ‘নির্দিষ্ট ও গঠনমূলক’

বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কী ভাবে জুনিয়র ডাক্তারেরা নিজেদের বক্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বলতে পারেন, তা নিয়েও জিবিতে আলোচনা হয়। সময় নষ্ট না করে নিজেদের দাবিদাওয়া তুলে ধরতে চান তাঁরা।

রবিবার ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারেরা।

রবিবার ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারেরা। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:৩১
Share: Save:

নবান্নের ‘শর্ত’ মেনে নয়, অনশন না তুলেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করতে যাবেন বলে রবিবার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে প্যান জিবি বৈঠকের পর জানিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচ্য বিষয়ের রূপরেখা ঠিক করতেই বৈঠকে বসেছিলেন তাঁরা।

সোমবার বিকেলে নবান্নের বৈঠকে কত জন যেতে পারেন, কারা কারা যেতে পারেন, ১০ দফা দাবি নিয়ে রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাঁদের কী কী বক্তব্য হতে পারে, তা নিয়ে জিবিতে আলোচনা হয়েছে। অতীতে বৈঠকে প্রতিনিধি সংখ্যা নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের ‘মতবিরোধ’ দেখা গিয়েছিল। তবে সোমবারের বৈঠকে যাতে প্রতিনিধি সংখ্যা ‘অন্তরায়’ হয়ে না দাঁড়ায়, জিবিতে তেমন মতপ্রকাশ করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁরা চান মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হোক গঠনমূলক। ‘অধিক সন্ন্যাসী’ থাকলে ‘গাজন’ নষ্ট হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। আন্দোলনকারীদের একাংশের কথায়, তাঁরা ‘পঙ্গপালের মতো’ যেতে চান না। তাঁরা চান, আলোচনা হোক ‘নির্দিষ্ট এবং গঠনমূলক’। প্রচুর লোক গেলে সেই পরিসর সঙ্কুচিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

প্রসঙ্গত, বৈঠকের বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার পরে শনিবার মুখ্যসচিব আন্দোলনকারীদের ইমেলে জানান, অনশন প্রত্যাহার করে বৈঠকে যোগ দিতে হবে। পাশাপাশিই বলা হয়, ১০ জনের বেশি বৈঠকে থাকা যাবে না। বিকেল সাড়ে ৪টের মধ্যে পৌঁছতে হবে নবান্নে। বৈঠক শুরু হবে ৫টায়। চলবে ৪৫ মিনিট।

সোমবারের বৈঠকে শেষ পর্যন্ত কত জন যাবেন, সেই সংখ্যা স্থির হয়নি। সরকারের বেঁধে দেওয়া সংখ্যার মধ্যে বা তার থেকে সামান্য বেশি প্রতিনিধি নিয়েই জুনিয়র ডাক্তারেরা নবান্নে যাবেন বলেই অনেকে মনে করছেন। তবে তা কখনওই ‘বাড়াবাড়ি’র পর্যায়ে যাবে না। প্রতিনিধিদের সংখ্যা এবং নাম ঠিক করতে ধর্মতলায় সোমবার দুপুরে শেষ পর্যায়ের আলোচনায় বসবেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।

মুখ্যসচিবের চিঠি পাওয়ার পরে শনিবার রাতেই তড়িঘড়ি বৈঠকে বসেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। অনশন তুলে বৈঠকে যোগ দেওয়ার সংক্রান্ত নবান্নের ‘শর্ত’ মেনে বৈঠকে যোগ দেবেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়। তবে শনিবার সে বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে না-পারায় রবিবার আবার প্যান জিবি হয় এনআরএসে। মুখ্যসচিবের চিঠির উত্তরে ইমেলে কী কী লেখা থাকবে, তা ঠিক হয় ওই বৈঠকে। এ ছাড়াও আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে জিবিতে আলোচনা করা হয়েছে। অতীতের তুলনায় সোমবারের বৈঠক আরও ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলে মনে করছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। কারণ, ধর্মতলায় ‘আমরণ অনশন’ চলছে এবং আন্দোলন এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে আলোচনা আরও গুরুত্ব সহকারে হওয়া উচিত বলে মনে করছেন তাঁরা। সেই আলোচনায় জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা কী ভাবে, কী কী বিষয়ে কথা বলবেন, তা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।

জুনিয়র ডাক্তাররা জোর দিতে চান তাঁদের দাবি কী ভাবে প্রশাসন মানবে, মূলত সেই বিষয়েই। নবান্নের বেঁধে দেওয়া ৪৫ মিনিটে কী ভাবে তাঁরা নিজেদের বক্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বলতে পারেন, তা নিয়েও জিবিতে আলোচনা হয়। সময় নষ্ট না করে প্রতিটি মিনিট ধরে নিজেদের দাবিদাওয়া তুলে ধরতে চান জুনিয়র ডাক্তারেরা। একই সঙ্গে ১০ দফা দাবির প্রেক্ষিতে সরকারকে কিছু ‘পরামর্শ’ও দিতে চান তাঁরা। কী কী করা যেতে পারে, সে বিষয়েও জিবিতে আলোচনা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মুখ্যসচিবের পাঠানো শনিবারের ইমেলে জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ দফা দাবির প্রেক্ষিতে সরকার কী কী কাজ করেছে, তার আভাস দেওয়া হয়েছিল। জবাবে জুনিয়র ডাক্তারেরা জানান, তাঁদের দাবির মধ্যে চারটিই হাসপাতালের নিরাপত্তা এবং পরিকাঠামো বিষয়ক। হাসপাতালগুলিতে কেন্দ্রীয় ভাবে ‘রেফারেল’ ব্যবস্থা, শূন্য বেড সংখ্যার ডিজিটাল মনিটরিং, কলেজ ভিত্তিক টাস্ক ফোর্স, সিসিটিভি, প্যানিক বাটন, হেল্পলাইন নম্বর এবং সিভিকের বদলে মহিলা পুলিশকর্মীর দাবি। সেই ক্ষেত্রে সরকার কী পদক্ষেপ করছে তার সুস্পষ্ট ধারণা চান জুনিয়র ডাক্তারেরা। এ ছাড়াও কিছু দাবির ক্ষেত্রে রাজ্য সেগুলিকে ‘বিচারাধীন বিষয়’ বলে উল্লেখ করেছে। সেই বিষয়গুলিতে সরকার কতটা কী করতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হয় জিবিতে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE