—ফাইল চিত্র।
রেজাল্ট ভাল হয়নি। দিদির ক্লাসে যাওয়ার আগে কেউ ডুবে লজ্জায়। কারও বা ভয়ে বুক দুরুদুরু।
আজ, শুক্রবার তৃণমূল ভবনে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠকে বসবেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে জেলা নেতাদের পাওয়া গেল ভিন্ন মেজাজে। তবে সে মেজাজ যে তুরীয় নয় তা অজানা নয় কারও। যেমন মনমেজাজ ভাল নেই তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির! একদা ছায়াসঙ্গী যুব নেতা রমাপ্রসাদ গিরি দল ছেড়ে বিজেপি- শিবিরে ভিড়ে যাওয়ায় দলের অন্দরে তাঁকে কম কটূক্তি শুনতে হয়নি। কারও কারও মন্তব্য ছিল, ‘‘কাকা- ভাইপোর জুটি ভেঙে গেল।’’ সেই রমাপ্রসাদ আবার শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে তৃণমূলে ফিরে আসার পরেও দলের অন্দরে অজিতকে কটাক্ষ শুনতে হয়েছে।
এরমধ্যে আবার কাটমানি ফেরত চেয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে তৃণমূল কাউন্সিলরদের বাড়ির সামনে, ওয়ার্ডে। পড়ছে ফ্লেক্স, পোস্টার। পরিস্থিতি দেখে কাটমানি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই বিঁধেছেন বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর মৌ রায়। মৌ- এর কথায়, ‘‘দিদি যদি মনে করে থাকেন তিনি একাই সৎ, ভুল করছেন। আমাদের মতো কিছু মানুষও (সৎ) রয়েছেন, যাঁরা এখন বিপদে পড়ছেন।’’ এই মন্তব্য দলে শোরগোল ফেলেছে। এই পরিস্থিতিতেই আজ, শুক্রবার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে যাচ্ছেন অজিতরা।
সকলের মনেই কী হয়, কী হয় ভাব। শাসকদলের একাংশের অনুমান, জেলার কয়েকজন নেতা নিশ্চিতভাবেই নেত্রীর ভর্ৎসনার মুখে পড়বেন। ওই নেতাদের নানা প্রশ্ন করতে পারেন মমতা। সূত্রের খবর, ফলপ্রকাশের পরে একদফায় নেত্রীর ভর্ৎসনার মুখে পড়েছেন জেলা সভাপতি। দলের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘নেত্রীর কাছে কে যে ধমক- চমক খাবেন, তা আগে থেকে বলা মুশকিল। আমিও হয়তো বকাঝকা খেতে পারি!’’ তাঁর কথায়, ‘‘সবটাই নেত্রীর মুডের উপর নির্ভর করছে। মুড কেমন থাকে সেটাই দেখার!’’
লোকসভায় খারাপ ফলের পরে জেলা ধরে ধরে বৈঠক করতে শুরু করেছেন মমতা। শুরুটা হয়েছিল হুগলি জেলা দিয়ে। পরে নদিয়া জেলার সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে। এরপরই ডাক পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের নেতাদের। পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৫টি বিধানসভার আসন রয়েছে। এরমধ্যে লোকসভার নিরিখে ৭টি আসনেই বিজেপির কাছে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। শাসক দলের কাছে যা অশনি সঙ্কেত! ফলে, দলের ‘মাথাব্যথা’র তালিকায় একধাক্কায় এই জেলা অনেকটা উপরে উঠে চলে এসেছে বলে মনে করছেন দলেরই একাংশ কর্মী। তাঁদের অনেকেই বলছেন, ‘‘দিদির মুখোমুখি হতে এখন কেউ লজ্জা পাচ্ছেন, কেউ ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু এখন এসব ভেবে লাভ নেই। বকাঝকা শুনে দিদির কথা মেনে কাজ করতে হবে।’’
এখন কার্যত ভাঙনের মুখে তৃণমূল। জেলায় প্রায় রোজই তৃণমূলের ঘর ভাঙছে বিজেপি। দলের নেতাকর্মীদের মুষড়ে না পড়ার বার্তা দিচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমাদের ভুল ছিল। তাই মানুষ আমাদের হারিয়ে দিয়েছে। আমরা ভুল সংশোধন করে ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে ২০২১ সালেও জিততে পারব না।’’
আজ, শুক্রবার কী করতে হবে—বলবেন নেত্রী। লাজে, ভয়ে, ত্রাসে তাই শুনবেন নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy