ফাইল চিত্র।
কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল্যায়ন ঘিরে বিভ্রান্তির অভিযোগ করে মূল্যায়নের পদ্ধতি নিয়েই আপত্তি তুলেছে রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি (ওয়েবকুটা)। তাদের বক্তব্য, ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশিকা ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত পন্থা নিয়ে টানাপড়েনের পরে মূল্যায়নের যে-ব্যবস্থা হচ্ছে, তাতে শিক্ষক ও পড়ুয়া দু’পক্ষেরই বিভ্রান্তি ও সমস্যা বাড়ছে।
রাজ্য সরকার জুলাইয়ে জানিয়েছিল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী সিমেস্টার পরীক্ষা নিতে হবে। পরে ইউজিসি-র নির্দেশ আসে, পরীক্ষা নয়, অন্তর্বর্তী সিমেস্টারের মূল্যায়ন করতে হবে আগের সিমেস্টারের ফল এবং বর্তমান সিমেস্টারের অন্তর্বর্তী মূল্যায়নের ফলাফলের ভিত্তিতে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সম্প্রতি জানিয়ে দেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্বাধিকার রয়েছে। তারাই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিক।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, ইউজিসি-র নির্দেশ মেনে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ নম্বর কলেজগুলির অন্তর্বর্তী মূল্যায়ন থেকে গৃহীত হবে। বাকি ৫০ শতাংশ নেওয়া হবে পূর্ববর্তী সিমেস্টারে প্রাপ্ত নম্বর থেকে। চতুর্থ সিমেস্টারের পরীক্ষা চলছে। দ্বিতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা শুরু হবে। সহ-উপাচার্য আশিস চট্টোপাধ্যায় জানান, অন্তর্বর্তী মূল্যায়নে এই পরীক্ষার নম্বর, উপস্থিতির নম্বর, কলেজ যে-অন্তর্বর্তী মূল্যায়ন করেছে, সব মিলিয়ে তার থেকে ৫০ শতাংশ নম্বর নেওয়া হবে।
মূল্যায়নের এই পদ্ধতি নিয়েই আপত্তি ওয়েবকুটা-র। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কেশব ভট্টাচার্য সোমবার এক বিবৃতিতে জানান, বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। এর ফলে মূল্যায়ন শেষ পর্যন্ত কোন পদ্ধতিতে হবে, তা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মনে সংশয় ও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ-রকম ‘একতরফা এবং স্ববিরোধী’ সিদ্ধান্তের জেরে কলেজের শিক্ষকেরা হেনস্থাও হচ্ছেন। পরীক্ষা, মূল্যায়নের জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হচ্ছে না। তাঁরা বুঝতেও পারছেন না, তাঁদের আপলোড করা নম্বর গ্রাহ্য হবে কি না। সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস সরকার বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় যদি প্রশ্নপত্র দেয়, তাকে কোনও ভাবেই অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন বলা যায় না। আর যদি তা বলা যায়, তা হলে অতিমারির পর থেকে প্রায় সব পরীক্ষাই অন্তর্বর্তী মূল্যায়ন বলে ধরতে হবে। কারণ, প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র বিশ্ববিদ্যালয় দিয়েছিল। খাতা দেখা এবং নম্বর দেওয়ার কাজ করেছে কলেজ।’’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগে পরীক্ষা হচ্ছে না। ইউজিসি-র নির্দেশমাফিক মূল্যায়ন করা হবে বলে কর্তৃপক্ষ আগেই জানিয়েছেন। চলতি সপ্তাহে বিজ্ঞান বিভাগের সিদ্ধান্ত হবে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শিবাজীপ্রতিম বসু বলেন, ‘‘পরীক্ষার সব প্রস্তুতি সারা। এর পরে যদি উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে নতুন কোনও নির্দেশ আসে, তখন দেখা যাবে।’’ আজ, মঙ্গলবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডার গ্র্যাজুয়েট (ইউজি) কাউন্সিলের বৈঠকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা।
রবীন্দ্রভারতীর কর্মসমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা অন্তর্বর্তী সিমেস্টারের মূল্যায়ন করবে ইউজিসি-র নির্দেশ মেনেই। বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ১৬ অগস্ট থেকে স্নাতকে অন্তর্বর্তী সিমেস্টার পরীক্ষার রুটিন দিয়েছে। পরীক্ষা বাতিলের বিজ্ঞপ্তি এখনও বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ জারি করেননি বলেই জানালেন এক অধ্যক্ষ। বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য মহুয়া দাসের সঙ্গে ফোন এবং মেসেজ করেও কথা বলা যায়নি। তবে ইউজিসি-র নির্দেশ আসার পরে কল্যাণী ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় এই পরীক্ষা নিয়েছে। ইউজিসি-র নির্দেশ আসার আগেই জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছিল। ইউজিসি-র নির্দেশ যখন আসে, তত ক্ষণে অনেক বিভাগেই পরীক্ষা শেষ। রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার জানান, সেই সব পরীক্ষার ফলপ্রকাশেরও সময় এসে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy