বিভিন্ন রোগে দ্রুত আরামের রাস্তা দেখায় সে। আবার বিপত্তিও ডেকে আনে সেই সব অ্যান্টিবায়োটিকের নির্বিচার ব্যবহার। সেই জন্যই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে রাশ টানতে চেয়ে ২০১৬ সালে একটি রূপরেখা তৈরি করে দিয়েছিল কেন্দ্র। এ বার সেই পথে হাঁটছে পশ্চিমবঙ্গও। তৈরি হচ্ছে গাইডলাইন বা নির্দেশিকা।
কিন্তু বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন ও সংশয়, কেন্দ্র রূপরেখা তৈরি করে দেওয়ার পরেও পরিস্থিতির বিশেষ কোনও পরিবর্তন হয়নি। কেননা রূপরেখা না-মানলে শাস্তির কোনও রকম ব্যবস্থাই নেই। এই অবস্থায় রাজ্য নতুন নির্দেশিকা তৈরি করে দিলেও পরিস্থিতির কোনও বদল হবে কি!
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী দেশের ৫০ শতাংশ হাসপাতালে অ্যান্টিবায়োটিকের ‘উপযুক্ত ব্যবহার’ হয় না। ২০১৬ সালে ওই মন্ত্রক থেকে প্রকাশিত ‘ন্যাশনাল ট্রিটমেন্ট গাইডলাইনস অব অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল ইউজ’ শীর্ষক প্রবন্ধে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা ও মাপকাঠি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সেই ধাঁচেই এ বার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরে তৈরি হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের রূপরেখা। ২০১৯ সালের মধ্যেই সেই রূপরেখা রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, অনেক সময়েই দেখা যায়, রোগী অ্যান্টিবায়োটিকের ‘কোর্স’ সম্পূর্ণ করছেন না। ফলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধে দেহের ভিতরে ব্যাক্টিরিয়ার জিনগত পরিবর্তন ঘটে যায়।
তখন অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজই করে না। আবার কখনও কখনও রোগের প্রথম ধাপেই রোগীকে প্রয়োজনের তুলনায় অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয় অনেক বেশি পরিমাণে। ফলে কমে যায় সেই প্রতিষেধকের কার্যক্ষমতা।
মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের অভি়জ্ঞতা, পেটের অসুখ বা ‘কমন কোল্ড’-এর মতো সমস্যায় অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয় না। তবু অনেক সময় রোগীকে অতিরিক্ত মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। ফলে সমস্যা জটিল হয়ে পড়ে। ‘‘চিকিৎসাবিজ্ঞানে গাইডলাইন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রে সেটা থাকলে চিকিৎসকদের সুবিধা হবে,’’ বলেন অরুণাংশুবাবু।
সরকারি ও বেসরকারি সব চিকিৎসকেরই অ্যান্টিবায়োটিক গাইডলাইন মেনে চলা জরুরি বলে মনে করছেন, মেডিসিনের আর এক চিকিৎসক অরিন্দম নাগ। তিনি জানান, মূত্রনালিতে সংক্রমণের মতো সমস্যার ক্ষেত্রে প্রথমেই পরীক্ষা করা জরুরি। সংক্রমণের ধরন দেখে তবেই অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স দিতে হবে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগী আগেই অ্যান্টিবায়োটিক খেতে শুরু করেন। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি-বেসরকারি সব পক্ষের সঙ্গেই আলোচনা করে রাজ্যের ইনস্টিটিউট অব হেল্থ অ্যান্ড ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার রূপরেখা তৈরির কাজ শুরু করেছে। ওই প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা কৃষ্ণাংশু রায় জানান, কাজ চলছে। দ্রুত সরকারি হাসপাতালে নির্দেশিকা পৌঁছে যাবে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের প্রশ্ন, রূপরেখা না-মানলে কি কোনও শাস্তি দেওয়া হবে? স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, গাইডলাইন কোনও আইন নয়। তাই কখনওই তাতে শাস্তির কোনও কথা থাকতে পারে না। তবে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে কি না, সে-দিকে নজর রাখবেন সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy