Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Subiresh Bhattacharya

স্ত্রীর সামনে কাঁদছেন সুবীরেশ, জড়িয়ে ধরলেন মেয়ে, আদালতে বিধ্বস্ত চেহারায় গোটা পরিবার

সোমবার এসএসসি সংক্রান্ত সিবিআই মামলার শুনানিতে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয় প্রাক্তন এসএসসি চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে। যাঁকে এর আগে ‘প্রভাবশালী’ বলে মন্তব্য করেন তদন্তকারীরা।

আদালত কক্ষে কান্নায় ভেঙে পড়লেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য।

আদালত কক্ষে কান্নায় ভেঙে পড়লেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২২ ১৩:৩৯
Share: Save:

সিবিআই বলেছে, নিয়োগ দুর্নীতিতে সুবীরেশ ভট্টাচার্যই ‘বড় মাথা’। পদ গেলেও এখনও বিপুল প্রভাব প্রতিপত্তি রয়েছে। অথচ সোমবার আদালত কক্ষে সেই প্রভাবশালী সুবীরেশকেই দেখা গেল চোখের জল ফেলতে। এসএসসির সিবিআই মামলায় সোমবার আদালতে সশরীরের হাজির ছিলেন নিয়োগ দুর্নীতির মূল অভিযুক্তরা। ছিলেন এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশও। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী, পুত্র এবং কন্যা। ভিড়ের আড়ালে স্বজনবেষ্টিত হয়েই ক্রমাগত রুমালের কোনে চোখের জল মুছতে দেখা গেল তাঁকে।

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁরই আমলে যাবতীয় অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। অন্য দিকে, সুবীরেশের বক্তব্য ছিল তিনি কোনও দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন না। তাঁর আমলে একটি নিয়োগেও দুর্নীতি হয়নি। পদ্ধতিগত কিছু ত্রুটি থাকতে পারে। তবে ওটুকুই। অবশ্য সুবীরেশের এই বক্তব্য ধোপে টেকেনি। তাঁকে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার করে সিবিআই। এত দিন তিনি জেল হেফাজতেই ছিলেন। সোমবার আদালতে তোলা হয় তাঁকে। সেখানেই প্রকাশ্যে কাঁদতে দেখা যায় প্রাক্তন এসএসসির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যকে।

আদালতে তখন শুনানি শেষের পথে। পিছনের দিকে স্ত্রী ছেলে এবং মেয়ের সঙ্গে বসেছিলেন সুবীরেশ। ক্রন্দনরত সুবীরশকে বোঝাতে দেখা যায় স্ত্রী এবং ছেলেকে। মেয়েও এসে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেন বাবাকে। যদিও তার পরও চোখ মোছা বন্ধ হয়নি সুবীরেশের।

উল্লেখ্য, সুবীরেশ এসএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। এসএসসি দুর্নীতি সংক্রান্ত কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও ওই সময়েই শিক্ষা নিয়োগে দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে। সিবিআইয়ের বক্তব্য ছিল, সুবীরেশকে তাঁর জমানায় এই নিয়োগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সহযোগিতা করেননি। পরে সিবিআই এ-ও বলে যে, এসএসসির চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে যাওয়ার পরও সুবীরেশের প্রভাব প্রতিপত্তি রয়েছে। তিনি চেয়ারম্যান পদ থেকে সরেও একই সঙ্গে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং দার্জিলিং হিলস বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ছিলেন। সেই সঙ্গে কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ কলেজের অধ্যক্ষ, নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি এবং রাজ্যের উপাচার্য পরিষদের সম্পাদক পদেও নাম রয়েছে তাঁর।

বহু পদের অধিকারী এই সুবীরেশ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি চক্রের ‘বড় মাথা’ ছিলেন বলে সেই সময় আদালতকে জানিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। বিষয়টির গভীরে পৌঁছতেই সুবীরেশকে হেফাজতে নেয় সিবিআই। পরে অবশ্য সুবীরেশকে হেফাজতে নিয়েও জেরা করা হয়নি এই অভিযোগে তাঁকে সিবিআই হেফাজত থেকে সরিয়ে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE