শুভেন্দু অধিকারী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও পরস্পরের প্রতি যুযুধান। —ফাইল চিত্র।
দ্বৈরথ চরমে উঠেছিল ভোটের সময়। ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পরেও সেই যুদ্ধ চলছেই। কমার লক্ষণ তো নেই-ই বরং আরও বেড়েছে যুদ্ধের তেজ। শুভেন্দু অধিকারী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও পরস্পরের প্রতি যুযুধান। এখন তরজা শুরু হয়েছে কে কোন স্তরের নেতা তা নিয়ে।
তৃমমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার পর সোমবার অভিষেক শুভেন্দু সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘‘উনি দিল্লির বশ্যতা স্বীকার করে কুৎসা না করে বিরোধী দলনেতার মতো দায়িত্বশীল আচরণ করুন। গঠনমূলক ভূমিকা পালন করুন। এই অনুরোধই করব।’’ যার জবাবে মঙ্গলবার দিল্লিতে শুভেন্দু বলেন, ‘‘প্রথমত, তৃণমূল কোনও দলই নয়! ওটা একটা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। একটা আঞ্চলিক পার্টি। আমি ওই পার্টির কোনও নেতার প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নই। আমার লেভেলের কোনও নেতাকে বলতে বলবেন, তার উত্তর আমি দিয়ে দেব।’’ সেখানেই না-থেমে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা একধাপ এগিয়ে বলেন, ‘‘শাসকদলের হয়ে নির্বাচনে জেতা যায়। শাসকদলের হয়ে অনেক বড় বড় কথা বলা যায়। (নিজের বুকে আঙুল ঠেকিয়ে) আমি শুভেন্দু অধিকারী বামফ্রন্টের আমলে ২০০৬ সালের বিধায়ক। আমি শুভেন্দু অধিকারী ২১৩ সিট নিয়ে জিতে-আসা মুখ্যমন্ত্রীকে হারিয়েছি। সরকারি ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে জিতেছি এমনটাও নয়। ২০১১ সালের পর যাঁরা সোনার চামচ মুখে নিয়ে ২,০০০ পুলিশ নিয়ে রাস্তা পেরোয়, সরকারি হেলিকপ্টার নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, তাদের কথার উত্তর শুভেন্দু অধিকারীর মতো স্রোতের বিরুদ্ধে থেকে শাসকদলের বিরুদ্ধে থেকে লক্ষ্ণণ শেঠ, মমতা ব্যানার্জিকে হারানো লোক দেবে না!’’
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০০৯ সালে হলদিয়া লোকসভা কেন্দ্রে সিপিএমের নেতা লক্ষ্ণণকে হারিয়েছিলেন শুভেন্দু। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের পর তখন তাঁর উত্থান হচ্ছে উল্কার গতিতে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে বিজেপি-কে যাওয়ার পর অবশ্য় তিনিই অঙ্গীকার করেছিলেন, নন্দীগ্রাম থেকে ‘হাফ লাখ’ ভোটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাবেন। ভোটে তিনি জিতেছেন ঠিকই। তবে ব্যবধান ২,০০০ ভোটেরও কম।
শুভেন্দুর দিল্লিতে অভিষেক প্রসঙ্গে ওই কথা বলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তৃণমূল নেতা গিয়েছিলেন দলের প্রবীণ নেতা তথা সাংসদ সৌগত রায়ের বাড়িতে। সেখান থেকে বেরিয়ে অভিষেক শুভেন্দুর আক্রমণের জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘উনি আজকে বলেছেন উনি আমার লেভেলের না! ওঁর লেভেলটা কী, আমি জানতে চাইছি। তিনমাস আগে যখন প্রতিটা সভায় আমার বাপবাপান্ত করে কথা বলতেন, তখন ওঁর লেভেলটা কি উপরে উঠে গিয়েছিল? নাকি এখন লেভেলটা নেমে গিয়েছে? ওঁর লেভেলটা কী?’’ অভিষেকের আরও কটাক্ষ, ‘‘এই যে তিনি এত বড় বড় কথা বলছেন! ওঁর বাড়ির লোক তো ত্রিপল চুরিতে অভিযুক্ত! নিশ্চিতভাবেই উনি ঠিকই বলেছেন, ওটা ওঁর লেভেল নয়। তাই ওটা আমারও লেভেল নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy