সাইবার অপরাধের তদন্ত যথাযথ ভাবে করার জন্য এসওপি বা আদর্শ কার্যবিধি তৈরি করল রাজ্য পুলিশ। ইতিমধ্যেই ভবানী ভবনের তরফে ওই এসওপি প্রত্যেক জেলার সাইবার অপরাধ থানার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, ১৯ পাতার ওই এসওপিতে সাইবার অপরাধের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন বিষয়ে কী ভাবে তদন্তকারী অফিসারকে এগোতে হবে, তা বলা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া, সাইবার আর্থিক প্রতারণা, ই-মেল তদন্ত, ক্রিপ্টো কারেন্সির তদন্ত। হ্যাকিং হলে কী ভাবে তদন্ত করতে হবে বা সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কিত অপরাধের কিনারা করার জন্য কী পদ্ধতি মেনে চলতে হবে, সেই বিষয়েও বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়েছে পুলিশের ওই এসওপিতে।
কেন এসওপির দরকার পড়ল? পুলিশ সূত্রের খবর, নদিয়ার একটি থানা এলাকায় ধর্ষণের পরে এক মহিলার নগ্ন ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ থাকলেও তদন্তকারী অফিসার সাইবার অপরাধের ধারা প্রয়োগ করেননি বলে দাবি। সেই মামলায় রাজ্য পুলিশকে কার্যত ভর্ৎসনা করে কলকাতা হাই কোর্ট। এর আগে অন্য একটি সাইবার অপরাধের মামলায় একই ভাবে পুলিশকে তিরস্কার করেছিলেন বিচারপতি। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, আগামী দিনে যাতে সাইবার অপরাধের তদন্ত পদ্ধতিতে কোনও গাফিলতি না থাকে, তার জন্য ওই এসওপি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সাইবার অপরাধের সঙ্গে যুক্ত তদন্তকারী অফিসারদের জন্য প্রশিক্ষণের রূপরেখাও তৈরি হয়েছে।
সূত্রের খবর, এসওপিতে বলা হয়েছে, সাইবার অপরাধের তদন্তে তল্লাশি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল প্রমাণ সংগ্রহের সময় বিশেষ সর্তকতা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে তদন্তকারী অফিসারকে। কোনও তদন্তকারী অফিসারের যদি যথাযথ প্রশিক্ষণ না থাকে, তবে তাঁকে ডিজিটাল প্রমাণ সংগ্রহ করতে নিষেধ করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত বৈদ্যুতিন বস্তু ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য সাইবার ফরেন্সিক এবং ডিজিটাল প্রমাণ পরীক্ষার জন্য পাঠাতে বলা হয়েছে। তার আগে সেটি পাঠানোর জন্য আদালতের নির্দেশ মানতে বলা হয়েছে।
এক পুলিশ অফিসার জানান, সাইবার অপরাধের তদন্তের ক্ষেত্রটি যদি হয় সমাজমাধ্যম সম্পর্কিত, তা হলে অভিযোগ মেলার পরেই যথাযথ আইনে মামলা রুজু করতে
বলা হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)