আইএসএফ-তৃণমূল সংঘর্ষে ভাঙড়ে জ্বলছে গাড়ি। ছবি: পিটিআই।
রক্তপাত দিয়ে শুরু হয়েছিল পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব। শেষও হল রক্তপাতে। বৃহস্পতিবার পঞ্চম তথা শেষ দিনের মনোনয়নে কয়েকটি জায়গায় লাগামহীন হিংসার সাক্ষী থাকল বাংলা। গত দু’দিনের ধারা অব্যাহত রইল দক্ষিণ ২৪ পরগনার সেই ভাঙড়ে। বিরোধীদের অভিযোগ, পুলিশের সামনেই সেখানে অবাধে চলেছে যাবতীয় সন্ত্রাস। মুড়িমুড়কির মতো বোমা পড়ে। গুলি চলল। জ্বলল দোকানপাটও! বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত দু’জনের প্রাণ গিয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। তাঁদের মধ্যে এক জন আইএসএফ কর্মী, অন্য জন শাসক তৃণমূলের কর্মী— এমনটাই দাবি। তবে এ নিয়ে পুলিশ কোনও মন্তব্য করেনি।
গত শুক্রবার পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন শুরু হয়। সেই দিন মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে এক কংগ্রেস কর্মীকে গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে শাসকদলের বিরুদ্ধে। যদিও সেই ঘটনা মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। তার পর থেকে লাগাতার হিংসার ছবি দেখা গিয়েছে মনোনয়ন পর্বে। বার বার উত্তপ্ত হয়েছে মুর্শিদাবাদের রানিনগর, ডোমকল, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়, ক্যানিংয়ের পাশাপাশি বীরভূম ও বাঁকুড়ার বেশ কয়েকটি জায়গা। শেষ দিনও তার ব্যতিক্রম হল না। বরং, ছাপিয়ে গেল আগের কয়েকটি দিনকে।
বৃহস্পতিবার মনোনয়ন শুরু হওয়ার কিছু পরেই উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় গুলি চলার ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, সিপিএম প্রার্থীরা মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময় তাঁদের উপর হামলা হয়। দাবি, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ যায় এক জনের। জখম হন দু’জন। সিপিএমের অবশ্য দাবি, গুলিবিদ্ধ হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে, পুলিশ দাবি করেছে, চোপড়ায় কারও মৃত্যু হয়নি। চোপড়ার খুন নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই বোমা-গুলিতে তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়। সেখানে মনোনয়ন কেন্দ্রের সামনেই বোমা বিস্ফোরণ হয়। অভিযোগ, পুলিশের সামনেই সন্ত্রাস চলেছে। আইএসএফ কর্মীদের মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দিয়েছে শাসকদল। বিডিও অফিসের ভিতরেও আইএসএফ কর্মীদের মনোনয়নপত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। তা ঘিরেই সংঘর্ষে জড়ায় তৃণমূল-আইএসএফ। যা জারি থাকল মনোনয়ন শেষ হওয়ার পরেও। ভাঙড় এবং চোপড়ার ঘটনা নিয়ে দিনভর উত্তপ্ত থাকল রাজ্য রাজনীতি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলা, গুন্ডামি করে মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়া এবং পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সামনে বিক্ষোভ দেখায় বামেরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবশ্য বক্তব্য, চোপড়ার ঘটনায় তৃণমূল যুক্ত নয়। আর ভাঙড়ের ঘটনার জন্য আইএসএফকেই দায়ী করেছেন তিনি। মনোনয়নের শেষ দিনে অশান্তির ছবি দেখা গিয়েছে বীরভূমের আমোদপুর, বাঁকুড়ার কোতুলপুরে। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতেও সিপিএমকে মনোনয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। অন্য দিকে, পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে রাজ্য জুড়ে হিংসার ঘটনায় সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিদ্বজ্জনেদের একাংশ।
আবারও রণক্ষেত্র ভাঙড়
গত দু’দিনে অশান্তির জেরে থমথমেই ছিল ভাঙড়। মনোনয়নের শেষ দিনে অশান্তি এড়াতে জোরদার করা হয়েছিল নিরাপত্তা। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশি টহলদারি চলে। ভাঙ়ড়-১ এবং ২ ব্লকের বিডিও অফিসের বাইরে ১ কিলোমিটার এলাকা নিরাপত্তার চাদরে মু়ড়ে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু বেলা বাড়তেই চড়তে শুরু করে উত্তেজনার পারদ। কিছু ক্ষণের মধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়-২ ব্লক। বিজয়গঞ্জ বাজার রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে। সেখানকার কাঁঠালিয়া মোড়ে তৃণমূল এবং আইএসএফের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। বোমাবাজি এবং গুলি চালানোর অভিযোগও উঠেছে। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বিজয়গঞ্জ বাজারে। স্থানীয়দের দাবি, কমপক্ষে ১০০টি বোমা পড়ে। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক গাড়ি। ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চার দিক। দুপুর ৩টেয় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও চলতে থাকে অশান্তি। চারিদিকে বোমাবাজি, গুলিবৃষ্টি চলতে থাকে। আইএসএফের অভিযোগ, তাদের ৮২ জন প্রার্থী যাতে মনোনয়ন জমা দিতে পারেন, সেই নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। ভাঙড় ও কাশীপুর থানা থেকে পুলিশ তাঁদের পাহারা (এসকর্ট) দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় হামলা হয় শোনপুর বাজারের কাছে। বোমা-গুলি চলে। তাতেই আইএসএফ কর্মী মইনউদ্দিন গুলিবিদ্ধ হন এবং পরে তিনি মারা যান বলে দাবি করে আইএসএফ। অন্য দিকে, তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লার দাবি, তৃণমূল কর্মী রশিদ মোল্লাও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন। তিনি জীবনতলার বাসিন্দা। তাঁর তিনটি গুলি লেগেছে বলে তৃণমূলের দাবি। স্থানীয় সূত্রে খবর, ভাঙড়ের সংঘর্ষে জখমদের মধ্যে সেলিম মোল্লা এবং মনিরুল মোল্লা নামে দুই যুবককে ভর্তি করানো হয়েছে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে। তাঁদের দেহে বুলেটের ক্ষত রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। তাঁরা ‘এমসিএইচ ট্রমা কেয়ার ইউনিট’-এ ভর্তি রয়েছেন। সক্রিয় রাজনীতি না করলেও দাদা আইএসএফের সঙ্গে যুক্ত বলে জানিয়েছেন জখম সেলিমের ভাই নাসিফ মোল্লা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ তুলেছে আইএসএফ। যদিও তৃণমূলের দাবি, অশান্তির মূলে আইএসএফ রয়েছে। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। পরে সন্ধ্যার দিকে পানাপুকুর এলাকায় ব্লক অফিসের কাছ থেকে আরও এক জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেনি পুলিশ।
রক্তপাত চোপড়ায়
মনোনয়নের শেষ দিনে গুলি চলল চোপড়াতেও। বাম-কংগ্রেস কর্মীরা মিছিল করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চলে বলে অভিযোগ। গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে দাবি, গুলিতে এক জন সিপিএম কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। বেশ কয়েক জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অভিযোগ, মনোনয়ন কেন্দ্র থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে হামলা হয়। সিপিএমের দাবি, তাঁদের ২ কর্মী মারা গিয়েছেন। কংগ্রেসের দাবি, নিহতদের মধ্যে এক জন সিপিএম, এক জন কংগ্রেসের। যদিও পুলিশের দাবি, কেউ মারা যাননি। এক জনের অবস্থা ভীষণ আশঙ্কাজনক। তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। বাম-কংগ্রেসের দাবি, তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরে বুধবার পর্যন্ত তাদের প্রার্থীরা মনোনয়নই জমা দিতে পারেননি। তাই শেষ দিনে চোপড়ার লালবাজার থেকে এক সঙ্গে মিছিল করে বিডিও অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছিলেন কংগ্রেস ও সিপিএম প্রার্থীরা। আহত এক ব্যক্তির অভিযোগ, ‘‘আমরা মিছিল করে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ ওরা, তৃণমূলের লোকেরা এসে গুলি চালায়। আমাদের অনেকে আহত। বড় বড় বন্দুক দিয়ে মারধর করেছে।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জনবিচ্ছিন্ন হয়ে হামলা চালিয়েছে তৃণমূল।’’ দলের তরফে বিবৃতি প্রকাশ করেও বলা হয়, ‘‘চোপড়ায় মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার পথে বাম-কংগ্রেসের মিছিলের উপর তৃণমূলের গুন্ডাদের এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ হয়েছে। প্রাথমিক খবর অনুসারে, নিহত ২, আহত কমপক্ষে ২০।’’ পাল্টা তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের মতে, ‘‘তৃণমূল হিংসার বিরুদ্ধে। তাই এমন ঘটনা কম।’’ চোপড়ার ঘটনা নিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে কংগ্রেস। স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপের আর্জি প্রধান বিচারপতির কাছে।
কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা
ভাঙড়ের ঘটনা নিয়ে রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। অন্য দিকে, বিশৃঙ্খলা এবং প্রাণহানির ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা দায়ী করেছেন আইএসএফকে-ই। মমতা বলেন, ‘‘ভাঙড়ে একটা দল নতুন জিতেছে। তারাই পরশু দিন ওখানে গন্ডগোল, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ শুরু করে। বুধবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে তার প্রতিবাদ, প্রতিরোধ হয়েছিল। তবে শুরুটা করেছিল ওরা।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘আজ কী হয়েছে, আমি জানি না। আমি রাস্তায় ছিলাম। যা-ই হয়ে থাক, পুলিশকে বলব কড়া ব্যবস্থা নিতে।’’ চোপড়ার ঘটনার প্রেক্ষিতেও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “চোপড়া আর ইসলামপুরে যে সমস্যাটা হয়েছে, তাতে দল কোনও ভাবেই যুক্ত নয়। যারা এই কাজ করেছে, তাদের আমরা টিকিট দিইনি। তারা গতকাল (বুধবার) অবধি টিকিট চেয়েছে। কিন্তু তাদের কাজে দল সন্তুষ্ট নয় বলে টিকিট দেওয়া হয়নি।” বিরোধীদের নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে, ত্রিপুরায় তো ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে মনোনয়নই জমা দিতে দেওয়া হয় না। পকসো কেসেও অ্যারেস্ট হয় না। এখানে বিধানসভা ভোটের পরে নির্বাচন কমিশনের অধীনে আইনশৃঙ্খলা থাকার সময়েও যে মৃত্যু হয়েছে, তাঁর জন্যও আমাদের ছেলেদের অ্যারেস্ট করেছে। ১৫৫টা সেন্ট্রাল টিম পাঠানো হয়েছে। কোথাও মারছে, কোথাও কাটছে। কোর্টে গিয়েও খুন করে দিয়ে আসছে। দানবের রাজত্ব চলছে। কিন্তু সেখানে নক্কারজনক কয়েকটা রাজনৈতিক দল, যাদের নাম বলতে আমার ঘৃণা হয়। যারা মানুষকে খুন করত। নন্দীগ্রামে এখনও খুঁজলে হয়তো মৃতদেহ পাওয়া যাবে। হাত কাটত, পা কাটত, মুন্ডু কাটত, কাউকে নমিনেশন ফাইল করতে দেওয়া হত না। ১০০-এ ১০০ ভোট পেত, আর আজ তারা গলা উঁচিয়ে বড় বড় কথা বলছে।’’
কী বললেন রাজ্যপাল
পঞ্চায়েত ভোটের আবহে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবারই রাজ্যপালকে নিশানা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছেন, ‘‘উনি সাংবিধানিক পদে রয়েছেন। ওঁর চেয়ারকে সম্মান করি। ওঁর কাজকর্ম নিয়ে আগে বহুবার বলেছি। রাজ্যপালের যখন করার ছিল, কিছু করেননি। রাজীব সিংহকে আটকাতে পারতেন।’’ তার পরেই রাজ্যপালের লিখিত বার্তা, ‘‘শয়তানের খেলা শেষ হওয়া উচিত। বন্ধ হবে। পশ্চিমবঙ্গে শেষের শুরু হবে।’’ শুক্রবার তিনি ভাঙড়েও যেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। রাজভবন সূত্রে খবর, শুক্রবার নিজের যাবতীয় কর্মসূচি বাতিল করেছেন রাজ্যপাল। তবে ভাঙড়ে তিনি যাবেন কি না, তা স্পষ্ট ভাবে রাজভবনের তরফে জানানো হয়নি। বিবৃতিতে রাজ্যপাল মন্তব্য করেছেন, ‘‘গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদমাধ্যম আক্রান্ত। তার মানে গণতন্ত্র আক্রান্ত। সাধারণ মানুষ আক্রান্ত। দেশের সংবিধান আক্রান্ত। নতুন প্রজন্মও আক্রান্ত। শয়তানের এই খেলা বন্ধ হওয়া উচিত।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘গণতন্ত্রে মানুষই প্রভু। নির্ভয়ে নিজের ভোট দেওয়ার অধিকার রয়েছে তাঁদের। গণতান্ত্রিক নির্বাচনে হিংসার কোনও জায়গা নেই।’’
অশান্তি বাঁকুড়া, বীরভূমে
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বের শেষ দিনেও অশান্ত বাঁকুড়া এবং বীরভূম। দুই জায়গাতেই বিজেপিকে মনোনয়নে বাধা ও দলীয় কার্যালয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দু’টি ঘটনাতেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল। মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরুর দিন থেকেই বাঁকুড়ার কোতুলপুরে শাসক-বিরোধী দ্বন্দ্বে চাপান-উতোর ছিলই। মনোনয়ন পর্বের শেষ দিনে আর তা অভিযোগ ও পাল্টা-অভিযোগে সীমাবদ্ধ থাকল না। বৃহস্পতিবার দুপুরে কোতুলপুরে বিজেপির ১ নম্বর মণ্ডলে যখন মনোনয়নের জন্য দলীয় প্রার্থী, কর্মী-সমর্থকরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, সেই সময় আচমকাই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। বিজেপির দাবি, ৪০-৫০ জন দুষ্কৃতী ওই কার্যালয়ে লাঠি, রড ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। কার্যালয়ের ভিতরে থাকা যাবতীয় আসবাব ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। বাইরে থাকা বেশ কয়েকটি বাইকেও ভাঙচুর চালানো হয়। তৃণমূল হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বেলার দিকে উত্তপ্ত হয় বীরভূমে আমোদপুর। অভিযোগ, মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার আগে মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিল বিজেপি। সেই সময় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। তাতে কয়েক জন বিজেপি কর্মী আক্রান্ত হন। সেই সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
মনোনয়নের পরিসংখ্যান
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা পর্যন্ত মোট ২,১৫,০০০ মনোনয়ন জমা পড়েছে। যদিও গভীর রাত পর্যন্ত ১১টা জেলার সম্পূর্ণ তথ্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনে এসে পৌঁছয়নি, তাই মনোনয়নের সর্বশেষ পরিসংখ্যান শুক্রবার জানানো হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।
নাগরিক বিবৃতি
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গে যে ‘হিংস্র অরাজকতা’র তৈরি হয়েছে তাতে নাগরিক হিসাবে ‘আতঙ্কিত’ বোধ করছেন তাঁরা। এই মর্মে একটি বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন শহরের বিদ্বজ্জনদের একাংশ। যদিও তাঁদের অনেকেই বাম মনোভাবামন্ন বলেই শাসক শিবিরের মত। সেই বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘‘একটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার যে সংবিধান স্বীকৃত গণতান্ত্রিক অধিকার সমস্ত নাগরিকের রয়েছে, সেটি এই মুহূর্তে এই রাজ্যে সম্পূর্ণ ভাবে লাঞ্ছিত।’’ তাই তাঁরা দাবি জানিয়েছে, ‘‘একটি সুস্থ, হিংসা মুক্ত, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া চালু করতে যে যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, নির্বাচন কমিশন যেন তা অবিলম্বে গ্রহণ করে।’’ ওই বিবৃতে সই রয়েছে পবিত্র সরকার, সব্যসাচী চক্রবর্তী, অনীক দত্ত, চন্দন সেন (নাট্যকার),কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, মালিনী ভট্টাচার্য, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, বাদশা মৈত্র, দেবদূত ঘোষ, চন্দন সেন (অভিনেতা), অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy