প্রতীকী ছবি।
মাধ্যমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার প্রায় প্রতিটি স্তরে এ বার প্রশ্নপত্র-বিভ্রাট নিয়ে ব্যাপক শোরগোল হয়েছে। সব ক্ষেত্রে রহস্য এখনও ভেদ করা যায়নি। তবে সেই বিভ্রাট-বিতর্ক থেকে শিক্ষা নিয়ে বি এড পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্রের নিরাপত্তা সংক্রান্ত দায়িত্বে নিজেদের প্রতিনিধি নিয়োগ করছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অব টিচার্স ট্রেনিং, এডুকেশন প্ল্যানিং অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। ‘‘এই পরীক্ষায় ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে,’’ বলছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুধু প্রশ্ন ফাঁস নয়, এ বছর পরীক্ষার মরসুমে আগেভাগে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলে ফেলা, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্নপত্র বেরিয়ে যাওয়া, পরীক্ষার তারিখ-বিভ্রাটের মতো বিচিত্র অভিযোগ উঠেছিল। মাধ্যমিক পরীক্ষায় ময়নাগুড়ির সুভাষনগর হাইস্কুলে নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার অভিযোগ ওঠে ওই স্কুলেরই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে জলঘোলা হয়। ঠিক কী ঘটেছিল, সেটা রহস্যই থেকে গিয়েছে। কেননা চূড়ান্ত নিষ্পত্তির আগেই বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায় বলে অভিযোগ শিক্ষা শিবিরের। তার পরে উচ্চ মাধ্যমিকে হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্নপত্র বাইরে চলে আসা এবং সর্বোপরি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পরীক্ষায় পরের দিনের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পৌঁছনো নিয়ে বিতর্ক হয়।
এই পরিস্থিতিতেই থানা থেকে প্রশ্নপত্র পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনো এবং উত্তরপত্র সিল করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিজেদের পরিদর্শক-প্রতিনিধিদের দিচ্ছে শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে দু’জন পরিদর্শক থাকবেন। থানা থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পৌঁছে দেবেন তাঁরা। প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা এবং পরীক্ষার পরে উত্তরপত্র প্যাকেটবন্দি করে সিল করার দায়িত্বও তাঁদের। ওই সব সাধারণ পরিদর্শকের পাশাপাশি প্রতি পাঁচটি পরীক্ষা কেন্দ্র-পিছু দু’জন ‘স্পেশ্যাল অবজার্ভার’ বা বিশেষ পরিদর্শকও নিয়োগ করা হচ্ছে।
সুরক্ষা ব্যূহ
• থানা থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট আনবেন দু’জন পরিদর্শক-প্রতিনিধি।
• প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলবেন তাঁরাই।
• পরীক্ষা শেষে উত্তরপত্রের প্যাকেটে সিল করে সই করবেন ওই পরিদর্শকেরা।
শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক দেবীপ্রসাদ নাগচৌধুরী জানান, ২৪ মে শুরু হচ্ছে শিক্ষক প্রশিক্ষণের বিভিন্ন স্তরের পরীক্ষা। ৩০ মে পর্যন্ত চলবে প্রথম ও তৃতীয় সেমেস্টারের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা। ৩১ মে থেকে ২০ জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় ও চতুর্থ সেমেস্টারের বি এড এবং এম এড পরীক্ষা হবে। প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে নিযুক্ত দু’জন সাধারণ পরিদর্শক থানা থেকে প্রশ্নপত্র নিয়ে এসে সেই প্যাকেট খুলবেন। এত দিন এই দায়িত্বে ছিলেন সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রের অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষ। পরীক্ষা শেষে উত্তরপত্রের প্যাকেট বন্ধ করার সময়েও সই করতে হবে ওই পরিদর্শকদের। বিশেষ পরিদর্শকেরা যখন-তখন পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন।
এমন বিশেষ বন্দোবস্ত কেন?
‘‘এই পরীক্ষা পাশ করার পরেই ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষক বা শিক্ষিকা হবেন। তাই এখানে স্বচ্ছতা থাকা খুব প্রয়োজন। তাই বাড়তি ব্যবস্থা নিতেই হচ্ছে,’’ বলেন উপাচার্য সোমাদেবী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy