‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ নিয়ে আরও এক ধাপ এগোল রাজ্য হেরিটেজ কমিশন। গত শনিবারই কমিশনে এ বিষয়ে একটি বিশেষ বৈঠক হয়। সেখানে প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, কোন জায়গার নাম ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে, সেই প্রস্তাব প্রথমে রাজ্য তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের কাছে পাঠাবে কমিশন। তার পর সরকারি স্তর থেকেই ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের (এএসআই) সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হবে। কারণ, দেশের কোন জায়গাকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে, কার নাম ইউনেসকোর কাছে পাঠানো হবে, এ ব্যাপারে চূড়ান্ত নিয়ামক সংস্থা এএসআই-ই। প্রসঙ্গত, ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ হিসেবে কোন জায়গাগুলির নাম প্রস্তাব আকারে পাঠানো হবে, তা নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরেই হেরিটেজ কমিশনে আলোচনা চলছিল। সেখানে শান্তিনিকেতনের নাম যেমন এসেছে, তেমনই এসেছে ডালহৌসি স্কোয়ারের নাম। আবার বিষ্ণুপুর নিয়েও তুমুল উৎসাহী কমিশনের সদস্যদের একাংশ। তার পরেই কমিশনের তরফে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ভাবে এগোনোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখন যেহেতু ইউনেসকোর কাছে বিশ্ব হেরিটেজ স্থান হিসেবে নাম পাঠানোর প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়মকানুন রয়েছে, তাই সে ক্ষেত্রে কী করা হবে, তা নিয়েই সে দিনের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। হেরিটেজ কমিশনের এক সদস্যের কথায়, ‘‘কমিশন শুধু প্রস্তাব আকারে কয়েকটি জায়গার নাম পাঠাতে পারে। কিন্তু এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এএসআই-ই নেবে। কারণ, তারাই ঠিক করে দেশের কোন জায়গার নাম ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণার জন্য ইউনেসকোর কাছে আবেদন করা হবে। ফলে তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের প্রয়োজন রয়েছে। যৌথ ভাবে কী ভাবে এক্ষেত্রে এগোনো যায়, সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে।’’
কমিশনের সদস্যদের একাংশের বক্তব্য, কলকাতা-সহ সারা রাজ্যেই প্রাকৃতিক ও স্থাপত্যের সমৃদ্ধশালী ঐতিহ্য রয়েছে, অথচ সেখানে রাজ্যে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এর মর্যাদা পেয়েছে মাত্র দু’টি জায়গা—সুন্দরবন ও দার্জিলিঙের টয় ট্রেন। কিন্তু বিশ্ব মানচিত্রে রাজ্যের আরও জায়গা যাতে ওই বিশেষ মর্যাদা পায়, তার জন্যই চেষ্টা শুরু করেছে কমিশন। তার প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কমিশন সদস্য অপরাজিতা দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেরিটেজের সংরক্ষণ নিয়ে উদ্যোগী হয়েছেন। তাই ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে রাজ্যের অন্য জায়গাও যাতে নির্বাচিত হতে পারে, সে জন্য কমিশনের তরফেও চেষ্টা হচ্ছে।’’ ২০১০-’১১ সালে শান্তিনিকেতনকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ হিসেবে ঘোষণার জন্য ইউনেসকোর কাছে নাম পাঠিয়েছিল এএসআই। কিন্তু তখন সে প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। শান্তিনিকেতনের নাম ফের পাঠানো হবে কিনা, তা নিয়েও এএসআই’-এর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ঠিক হবে বলে কমিশন সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy