Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ভেজাল থেকে রক্ষা চাই

পাড়ার রোলের দোকান চালায় যে ছেলেটি, বা শহরের নামী একটি রেস্তোরাঁর মালিক, দু’জনের সঙ্গেই অনেক দিনের চেনা। সেই সব দোকানেই যদি চিকেন মটনের বদলে কাক কুকুরের মাংস দেওয়া হয়, কী করে আর কাকে বিশ্বাস করব? লিখছেন কিশোর সাহা।পাড়ার রোলের দোকান চালায় যে ছেলেটি, বা শহরের নামী একটি রেস্তোরাঁর মালিক, দু’জনের সঙ্গেই অনেক দিনের চেনা। সেই সব দোকানেই যদি চিকেন মটনের বদলে কাক কুকুরের মাংস দেওয়া হয়, কী করে আর কাকে বিশ্বাস করব? লিখছেন কিশোর সাহা।

অখাদ্য: মালদহে পুরসভার অভিযানে নামী রেস্তোরাঁয় ধরা পড়ল এই পচা মাংস।

অখাদ্য: মালদহে পুরসভার অভিযানে নামী রেস্তোরাঁয় ধরা পড়ল এই পচা মাংস।

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৮ ০২:১৪
Share: Save:

মহা সমস্যায় পড়েছেন রঘুনাথ কর। শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের ফোসিন গেটের উল্টোদিক থেকে একটু এগিয়ে মিত্র সম্মিলনী হলের গলিতে ঢোকার মুখেই তাঁর ‘রোল’-এর দোকান। সেখানে চিকেন তন্দুর, চিকেন কাবাব সহ নানা পদও বানান। কিন্তু, ভেজাল মাংস নিয়ে এমন তোলপাড় হয়েছে যে চিকেনের চাহিদা এখন প্রায় তলানিতে। ফলে, রঘুবাবুর ব্যবসা প্রায় বন্ধ। এখন যা বিক্রি হচ্ছে তার বেশির ভাগই ‘এগ রোল’।

অথচ রঘুবাবু নিজে বাজার থেকে মুরগি কেনেন বাছাই করে। দোকানে নিয়ে গিয়ে কর্মীদের দিয়ে সেই মুরগি কাটিয়ে নানা পদ বানান। রঘুবাবু বলেন, ‘‘কী করব! লোকজনের মনে সন্দেহ ঢুকলে তা চট করে দূর হয় না। কিছুদিন সময় লাগবে। শিলিগুড়িতে এমন জালি মাংসের কারবার খুব একটা হয় না বলে আমার মনে হয়।’’

‘খুব একটা’ না হলেও একটু-আধটু তো হতেই পারে! তাতেই আতঙ্ক। কারণ, শিলিগুড়ির কয়েকটি মুরগির বাজারে বড় বড় থার্মোকলের বাক্সে বরফ দিয়ে মরা মুরগি রাখার অভিযোগও কম নেই। সাতসকালে তা দোকানের সামনে সদ্য জবাই মুরগির রক্তে ভিজিয়ে টাটকা মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রির অভিয়োগও শুনেছেন হোটেল মালিকদের অনেকে। তাই বেশির বাগ হোটেল মালিকই নিজেরাই কর্মীদের দাঁড় করিয়ে মুরগি কাটিয়ে সেটা হেঁসেলে ঢোকান। বিধান মার্কেটের একটি হোটেলের কর্ণধার বিপ্লব ঘোষ যেমন নিজে জ্যান্ত মুরগি কিনে হোটেলে নিয়ে কাটিয়ে মাংস হেঁসেলে ঢোকান। বিপ্লববাবু বলেন, ‘‘এটা আমাদের বরাবরেই নিয়ম। মাছ বাইরে থেকে পিস করে আনি। কিন্তু, মুরগি জ্যান্ত কিনে হোটেলে এনে কাটাই।’’ খাসি-পাঁঠার মাংসের ক্ষেত্রে বাঁদা দোকান রয়েছে বেশির বাগ হোটেলেরই। সেখানে বিশ্বাসভঙ্গের আশঙ্কা কম বলে হোটেল মালিকদের দাবি।

• ভেজাল মাংস খেলে টক্সোপ্লাজমোসিস রোগ হতে পারে।

• মানুষের শরীরের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হতে পারে।

• জ্বর, খিঁচুনি জাতীয় সংক্রমণ হতে পারে। কুকুর বেড়াল থেকে এই রোগ ছড়ায়।

• পচা মাংস খেলে পেটের রোগ হয়। ডায়েরিয়া, জন্ডিস হতে পারে।

সঞ্জয় ঢালি, চিকিৎসক, জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল

এতদসত্ত্বেও শিলিগুড়িতে বাসি মাংসের রমরমা রয়েছে অনেক জায়গাতেই বলে অভিযোগ। শিলিগুড়ির প্রাণীসম্পদ দফতরের কাছে অভিযোগ পৌঁছেছে, বেশ কয়েকটি ফুটপাতের স্টলে বিরিয়ানি, মোমোয় বাসি মাংস মিশিয়ে বিক্রি হচ্ছে। এমনকী, চিকেন স্যুপ, চিকেন মোমোয় আদতে কতটা টাটকা মাংস আর কতটা বাসি দেওয়া হচ্ছে তা নিয়েও বিশদে তদন্তের প্রয়োজন বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE