পরীক্ষা শুরুর আগেই মাধ্যমিকের ইংরেজি প্রশ্নপত্র ‘ঘুরে বেড়িয়েছে’ বলে অভিযোগ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পরীক্ষা চলাকালীন মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে, শুক্রবার এমনই অভিযোগ তুললেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শুক্রবার মাধ্যমিকের দ্বিতীয় ভাষার পরীক্ষা চলাকালীনই টুইটারে ‘ইংরেজি প্রশ্নপত্রের’ ৩টি পাতার ছবি পোস্ট করেন তিনি। সুকান্তের পোস্ট করা প্রশ্নপত্রের ছবি দেখে পরীক্ষা দিয়ে বেরোনোর পর কয়েক জন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী জানিয়েছে, এটি এ বারের ১৬ পাতার ইংরেজি প্রশ্নপত্রেরই ৩টি পাতা। পরীক্ষা চলাকালীন সুকান্ত ‘প্রশ্নপত্রের’ একাংশ সামনে এনে বিধিভঙ্গ করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সুকান্তের পোস্টের তলায় টুইটারে এ নিয়ে মন্তব্যও করেছেন অনেকে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়।
শুক্রবার ছিল মাধ্যমিকের দ্বিতীয় ভাষার পরীক্ষা। সেই পরীক্ষা চলাকালীন দুপুর ১টা ৪২ মিনিটে টুইটারে সুকান্ত লেখেন, ‘‘আজ মাধ্যমিকের ইংরেজি পরীক্ষা। সকল পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাই। যদিও আজ সকাল থেকেই এ বারের মাধ্যমিক পরিক্ষার ইংরেজি প্রশ্নপত্র বলে এই প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিছু সময়ের মধ্যেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে কি না তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’ সঙ্গে উল্লিখিত তিনটি পাতার ছবি।
আজ মাধ্যমিকের ইংরেজি পরিক্ষা। সকল পরিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাই। যদিও আজ সকাল থেকেই এবারের মাধ্যমিক পরিক্ষার ইংরেজি প্রশ্নপত্র বলে এই প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিছু সময়ের মধ্যেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে কি না তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। pic.twitter.com/sVaNqJiJvE
— Dr. Sukanta Majumdar (@DrSukantaBJP) February 24, 2023
কিন্তু যে ‘প্রশ্নপত্র’ সুকান্ত টুইট করেছেন, তা পরীক্ষার শেষেও পরীক্ষার্থীদের বাইরে আনার নিয়ম নেই। প্রশ্নপত্রেই উত্তর লিখতে হয়। ফলে সুকান্ত কী ভাবে ‘প্রশ্নপত্র’ পেলেন, সে প্রশ্ন উঠেছে। সুকান্তর পোস্ট করার ‘প্রশ্নপত্রের’ পাতার ছবিতে একটি হাতের ছবি দেখা যাচ্ছে। যা দেখে মনে করা হচ্ছে, কোনও পরীক্ষার্থী গোপনে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু পরীক্ষাকেন্দ্রের নজরদারি এড়িয়ে কী ভাবে ওই পরীক্ষার্থী প্রশ্নপত্রের ছবি তুলল এবং পাঠাল— তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
ইংরেজি প্রশ্নপত্র নিয়ে টুইট প্রসঙ্গে সুকান্তের সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে ১২টা ৪৮ মিনিটে হোয়াটসঅ্যাপে এই প্রশ্নপত্র এসে যায়। ফলে এটি যে প্রশ্নপত্র ফাঁস, তা নিয়ে আমার কোনও দ্বিমত নেই।’’ এর পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘যদি বলা হয়ে থাকে, কোনও পরীক্ষার্থী ভিতর থেকে ছবি তুলে বার করেছে তবে তা তো মধ্যশিক্ষা পর্ষদেরই দেখা উচিত। কী করে সেটা সম্ভব হল? মাধ্যমিক পরীক্ষার হলে তো মোবাইল নিয়ে ঢোকার নিয়ম নেই।’’ সুকান্তের দাবি, ১২টা ৪৮-এ প্রশ্নপত্র পেলেও দেড়টার পরে যে হেতু পরীক্ষার্থীরা বাইরে আসতে পারেন, তাই সে সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে তিনি টুইট করেছেন।
একটা অংশের মতে, সুকান্তের এই টুইটে বিধিভঙ্গ হয়নি। কারণ, তিন যখন ‘প্রশ্নপত্রের’ একাংশ টুইট করেছেন, তার ১ ঘণ্টা ৪২ মিনিট আগে, বেলা ১২টায় পরীক্ষা শুরু হয়েছে। দেড়টার পর থেকে খাতা জমা দিয়ে বাইরে আসার সুযোগ পেয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। ফলে ‘টেকনিক্যালি’ বিষয়টিতে ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস’ বলা যায় না।
এ বিষয়ে পর্ষদ সভাপতি রামানুজ বলেন, ‘‘ইংরেজি প্রশ্নপত্রের ২, ৩ এবং ১০ নম্বর পাতার ছবি তোলা হয়েছে। বেলা দেড়টা থেকে পৌনে ২টোর মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে। কোনও এক পরীক্ষার্থী মোবাইলে ছবিটি তুলেছেন। আদালতের নির্দেশে আমরা ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করতে পারি না। এই ঘটনায় পরীক্ষার উপর প্রভাব পড়েনি। কারণ, দেড় ঘণ্টা পরে ঘটনাটি ঘটেছে।’’ কিন্তু কী ভাবে পরীক্ষাকেন্দ্রে ছবি তোলা হল? পর্ষদ সভাপতি বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকা নিষেধ। কিন্তু আমরা তো ‘মেটাল ডিটেক্টর’ ব্যবহার করি না। শিক্ষক-শিক্ষিকারাই নজর রাখেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy