মাস্ক ছাড়াই আড্ডা। বেলেঘাটার সুরেন সরকার স্ট্রিটে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
‘কার গণ্ডি, কে মানে’ মনোভাব যেমন আছে, রয়েছে বিধি-ভাঙাদের বাগ মানানোর চেষ্টাও। নতুন করে লকডাউনের দ্বিতীয় দিন, শুক্রবার রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণের কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘুরে এমনই ছবি চোখে পড়েছে।
এ দিন বিকেলে মালদহের ইংরেজবাজারের ফোয়ারা মোড়ে মোটরবাইক চালিয়ে যাওয়া যুবকের পথ আটকান ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী। ‘কোথায় যাচ্ছেন’ শুনে ট্র্যাফিক পুলিশের হাতে ওই যুবক তুলে দেন একটি ‘প্রেসক্রিপশন’। খুঁটিয়ে দেখতে গিয়ে পুলিশকর্মীর নজরে আসে প্রেসক্রিপশনের তারিখ ২০১৭-র। ‘পুরনো প্রেসক্রিপশন!’ বলতে না বলতে মোটরবাইক ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ গতিতে উধাও হন যুবক। ওই পুলিশকর্মী বলেন, “লকডাউনে বাইরে বেরোতে অনেকেই দেখছি পুরনো প্রেসক্রিপশনকে হাতিয়ার করছেন।’’
কলকাতার ফুলবাগান, কাঁকুড়গাছি, বেনিয়াপুকুরের কন্টেনমেন্ট জ়োনে এ দিন মাস্ক ছাড়া ঘুরতে দেখা গিয়েছে অনেককে। উত্তর শহরতলির নাগেরবাজার, দমদম, বাঙুরের কন্টেনমেন্ট জ়োনের অনেক জায়গায় ব্যারিকেড ছিল না। দক্ষিণ কলকাতার বিজয়গড়, কসবার কন্টেনমেন্ট জ়োনে কয়েক জনকে দেখা গিয়েছে গার্ড-রেলের ফাঁক গলে বেরোতে। যে শিলিগুড়ি শহরে পূর্ণ লকডাউনের দাবি উঠেছে, সেখানেও কন্টেনমেন্ট জ়োন এলাকায় পুলিশ টহল দিয়ে চলে যেতেই সাইকেল বা মোটরবাইক নিয়ে, মাস্ক পকেটে গুঁজে বেরোচ্ছেন লোকজন। এমনই ছবি আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়িতেও।
আরও পড়ুন: টেস্টের অনুপাতে কোভিড পজিটিভ কেস লাফিয়ে বাড়ছে, উদ্বেগের ছবি রাজ্যে
বঙ্গে করোনা আক্রান্ত ২৭,১০৯
অ্যাক্টিভ রোগী ৮৮৮১
২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ১১৯৮
২৪ ঘণ্টায় মৃত ২৬
মোট মৃত ৮৮০
কো-মর্বিডিটির কারণে মৃত ৭০৬
(সূত্র: রাজ্য সরকার)
পূর্ব বর্ধমানের ৩১টি ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’-এর মধ্যে রাজগঞ্জ একটি। এ দিন বিকেলে সেখানে দোকান খোলা ছিল। ভিড়ও ছিল। এলাকার স্মৃতিকণা ভূমিজ, রাজু দত্তদের কথায়, “এখানকার করোনা-আক্রান্ত তো সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। তা হলে কন্টেনমেন্ট জ়োন করার কী দরকার!” পুরুলিয়া শহরের একমাত্র ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ ভুঁইয়াপাড়ায় ‘মাস্ক’ ছাড়া মহিলাদের গল্পগুজব করতে দেখা গিয়েছে। মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’-এর সামান্য দূরে তৃণমূল সভা করেছে। দলের নেতাদের দাবি, সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেই তা করা হয়েছে। ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ হলেও এ দিন সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের পোলেরহাট বাজার খোলে। বসে গরুর হাট। পুলিশি নজরদারি চোখে পড়েনি। উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া, অশোকনগর, বসিরহাটে ‘কন্টেনমেন্ট’ এলাকাতেও ঢিলেঢালা নজরদারির অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: শয্যা না-বাড়ালে কঠোর ব্যবস্থা
তবে কড়াকড়িও হয়েছে। ‘লকডাউন’ ভাঙায় মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জে ১০, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমায় ২০ এবং নদিয়ার কৃষ্ণনগরে ৪২ জনকে ধরেছে পুলিশ। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুককে পুলিশ অনেক দোকান বন্ধ করায়। বীরভূমের নানুরের বালিগুণী গ্রামে ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’-এর সামনে পুলিশকর্মীরা ‘মাস্ক’বিহীন পথচারীদের ‘মাস্ক’ পরতে বাধ্য করেছেন। নদিয়ার আসাননগর বাজারে ‘মাস্ক’ না পরায় জনা বারোকে ফেরায় পুলিশ। ভিড় হটাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের এক ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’-এ লাঠিও চালাতে হয়েছে পুলিশকে।
সংখ্যায় কম হলেও ‘লকডাউন’ মেনে চলার মতো ব্যতিক্রমও রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক পুর-এলাকার ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’-এ ব্যবসায়ীরা আগে থেকেই দোকান বন্ধ রেখেছিলেন। উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদের রাজাপুর, দেবীমোড় বাজার, থুবা বাজারে সব দোকান বন্ধ ছিল। পথে বেরোননি কেউ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy