Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Migrant Labour

টাকা শেষ, কাজ নেই, ভিন্ রাজ্যে অসহায় বঙ্গবাসী

দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির শ’খানেক শ্রমিক আটকে পড়েছেন কেরলের ভাটকারায়।

পায়ে হেঁটে ঘরের পথে।—ছবি পিটিআই।

পায়ে হেঁটে ঘরের পথে।—ছবি পিটিআই।

দীক্ষা ভুঁইয়া ও ফিরোজ ইসলাম
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২০ ০৩:৪৮
Share: Save:

কেউ চিকিৎসা করাতে গিয়েছেন। কেউ আবার ভিন্‌ রাজ্যে গিয়েছেন কাজের সূত্রে। করোনা-ত্রাসে ভারতজোড়া লকডাউনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়েছেন পশ্চিমবঙ্গের অসংখ্য বাসিন্দা। টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় কী খাবেন, কোথায় কী ভাবে থাকবেন, রোগ-আশঙ্কার সঙ্গে সেই চিন্তাই গ্রাস করেছে তাঁদের।

যেমন শিলিগুড়ির বাসিন্দা সাথী দে বন্দ্যোপাধ্যয় এবং তাঁর পরিবার। সাথীদেবী পার্কিনসন্সে আক্রান্ত শয্যাশায়ী বৃদ্ধ শ্বশুরকে (৭৬) নিয়ে বেঙ্গালুরুতে আটকে পড়েছেন। তাঁরা যে-লজে উঠেছেন, সেখানে কোনও কর্মী নেই, নেই খাবারদাবারও। এমনকি পানীয় জল আর জরুরি ওষুধ পেতেও সমস্যা হচ্ছে বলে ফোনে জানান সাথীদেবী। এ দিকে লজের মালিক অগ্রিম টাকা চাইছেন। কাছাকাছি থাকা লঙ্গর থেকে নানা হাত ঘুরে কখনও-সখনও খাবারের প্যাকেট আসছে, কিন্তু সেখানেও সংক্রমণের আশঙ্কা। স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি, ১০ বছরের মেয়েকে নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটছে সাথীদেবীর।

বেঙ্গালুরুর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেল্‌থ অ্যান্ড নিউরোসায়েন্সে (নিমহানস) চিকিৎসা করাতে গিয়ে যে এমন আতান্তরে পড়তে হবে, সাথীদেবীরা তা কল্পনাও করতে পারেননি। ২৩ মার্চ রাত ২টোয় তিনসুকিয়া-বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেসে ফেরার টিকিট ছিল তাঁদের। ট্রেনে ওঠার মাত্র দু’ঘণ্টা আগে লকডাউন শুরু হয়। তাঁর মতো ৮৫ জন বঙ্গবাসী সেখানে আটকে আছেন। ‘‘স্বামী অটো চালান। সঞ্চয় ফুরিয়ে আসছে। কী ভাবে চলবে, বুঝতে পারছি না,’’ ফোনে বললেন সাথীদেবী।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির শ’খানেক শ্রমিক আটকে পড়েছেন কেরলের ভাটকারায়। রাজমিস্ত্রি, জোগাড়ের কাজে বাংলা থেকে দল বেঁধে গিয়েছেন কানাই মাইতি এবং তাঁর মতো কুলতলির অনেক যুবক। রবিবার কানাইবাবু ফোনে জানান, তাঁদের ভাড়াবাড়িতে ৪৪-৪৫ জন আছেন। সকলেই কুলতলি থানা এলাকার। আশপাশের আরও কয়েকটি বাড়িতে রয়েছেন অনেকে। কিন্তু ১২ দিন ধরে তাঁদের কোনও কাজ নেই। হাতে যে-টাকা ছিল, তা শেষ হয়ে গিয়েছে। সাহায্যের জন্য রবিবার তাঁরা সকলে মিলে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বলা হয়, পঞ্চায়েত থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু মাথাপিছু ২৫ টাকা দিতে হবে। কানাইবাবু বলেন, ‘‘ভাড়াবাড়িতে থাকি। ভাড়া দিতে হবে না বলে জানিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু আমাদের কাছে ২৫ টাকা করেও নেই। খাবার কিনে খাব কী করে? জানি না, কী হবে! ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থাও নেই।’’

বাঁকুড়া থেকে রৌরকেলায় এনটিপিসি-র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে নির্মাণকাজে গিয়ে আটকে পড়েছেন ১৫০ জন শ্রমিক। স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে সে-ভাবে কোনও সাহায্য না-পেয়ে বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Migrant Labour West Bengal Lockdown Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy