ছবি: এএফপি।
লকডাউনের মধ্যেই আজ, সোমবার থেকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ শিথিল করতে চলেছে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার। প্রধানমন্ত্রী আগেই ঘোষণা করেছিলেন যে, ২০ এপ্রিল থেকে কিছু ছাড় দেওয়া হবে। রবিবার জেলাশাসকদের মাধ্যমে রাজ্যকে নির্দেশিকা পাঠিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলেছে, যে এলাকাগুলি হটস্পট বা ক্লাস্টার নয়, সেখানে আংশিক ভাবে আর্থিক কর্মকাণ্ড শুরু করা যাবে। সেই মোতাবেক প্রস্তুতি নিয়েছে রাজ্যও।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, ‘হটস্পট’ চিহ্নিত জেলাগুলির মধ্যে ‘কন্টেনমেন্ট’-এর জন্য শনাক্ত এলাকা আপাতত সিল করা হচ্ছে। হাওড়া, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনার কিছু অংশকে ‘কন্টেনমেন্ট’ করা হয়েছে। সেখানে বাড়ি থেকে মানুষকে যাতে না বেরোতে হয়, তা নিশ্চিত করা হবে। সরকারি ভাবে মুখ খুলতে না চাইলেও প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, জেলা প্রতি দু’জন করে নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের এক জন খাদ্যসামগ্রী সংক্রান্ত চাহিদা দেখভাল করবেন। অন্য জন বাকি জরুরি পরিষেবার চাহিদা মেটাবেন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ‘কন্টেনমেন্ট’ এলাকার বাসিন্দারা প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট জেলার কন্ট্রোলরুম নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন। কেন্দ্রীয় ভাবে পাওয়া সেই চাহিদা-বার্তা সংশ্লিষ্ট নোডাল অফিসারকে জানিয়ে দেওয়া হবে। তিনি জরুরি জিনিসপত্র স্থানীয় প্রশাসন বা পুলিশের মাধ্যমে পৌঁছে দেবেন। অনলাইনে কেউ অভিযোগ জানালে সেই তথ্য নবান্ন ছাড়াও জেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে যাবে। অভিযোগের নিষ্পত্তি করার পরে সংশ্লিষ্ট জেলা বা প্রশাসন অনলাইনেই সেই তথ্য জমা করবে।
আরও পড়ুন: চিনের কিট চলে এল, র্যাপিড টেস্ট কী জেনে নিন
পারস্পরিক দূরত্ব-বিধি মেনেই মাস্ক বিতরণ পুলিশের। রবিবার বড়বাজার এলাকায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকাভিত্তিক ভাবে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ এবং স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে যে দল গঠন করা হয়েছে, তারা পরিস্থিতির উপর নজর রাখবে। ‘সিল’ করা এলাকায় কেউ অসুস্থ হলে তাঁর চিকিৎসা এবং প্রয়োজনে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। কলকাতা পুরসভার ওয়ার্ড পিছু একজন করে সিনিয়র অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ২০০-৪০০টি বাড়িসমেত এলাকাতেও একজন করে অফিসার নিযুক্ত করা হয়েছে। বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে বস্তি এবং ঘিঞ্জি এলাকায়।
আরও পড়ুন: সার্ক দেশে কেন ‘মন্থর’ করোনা? গবেষণার ডাক বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্টে
সোমবার থেকে কোন কোন ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ শিথিল
(আক্রান্ত হয়েছে এমন এলাকায় নয়)
• ডেপুটি সেক্রেটারি থেকে উচ্চতর পদের সরকারি অফিসার
• গ্রুপ-সি এবং তার নীচের পদের সহকারী
• পর্যায়ক্রমে দফতরে ২৫% কর্মীর হাজিরা
• চটকলে ১৫% কর্মী এক দিন অন্তর
• ইটভাটায় ১৫% কর্মীকে কাজের অনুমতি
• একশো দিনের কাজে ৫০% শ্রমিক
• চা বাগানে ২৫% কর্মী ঘুরিয়ে ফিরিয়ে
• ফুলবাজার খোলা
• মিষ্টির দোকান সকাল ৮টা-বিকেল ৪টে পর্যন্ত
• ডাক্তারখানা, বাজার, ওষুধ, অত্যাবশ্যক পণ্যের দোকান খোলা
• কৃষিকাজ করা যাবে
• গ্রামীণ এলাকায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট বা ক্লাস্টারে কাজ শুরু করতে চাইলে বিবেচনা
• অঙ্গনওয়াড়ি, মিড-ডে মিলে খাদ্যসামগ্রী বিলি
• অত্যাবশ্যক পণ্যে হোম ডেলিভারি
• গ্রামে গিয়ে বোরো ধান কেনার শিবির
• জনস্বাস্থ্য কারিগরি, সেচ, রাস্তার কাজ, পুকুর খননের কাজ শুরু
• রেশন পরিষেবা
• লকডাউন বিধি এবং প্রোটোকল প্রযোজ্য
শনিবারই রাজ্য জানিয়েছিল, ‘কন্টেনমেন্ট’ এলাকায় ব্যারিকেড করা, জরুরি পণ্য পৌঁছে দেওয়া-সহ ১০০ শতাংশ পরিকল্পনা করেই কাজ শুরু করা হচ্ছে। ফলে আজ, সোমবার অন্যত্র কিছু কিছু নিয়ন্ত্রণ শিথিল করা হলেও ‘কন্টেনমেন্ট’ লকডাউন বিধির কঠোর প্রয়োগ হবে।
এ দিকে দেশ জুড়ে রোজ যেখানে গড়ে হাজারখানেক লোক সংক্রমিত হচ্ছেন, তখন আংশিক ছাড় চালু করার পদ্ধতি কী হবে, তা নিয়ে শনিবার বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার পর মন্ত্রক জানায়, হটস্পট এলাকার বাইরে, বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে অর্থনৈতিক কাজকর্ম খানিকটা শুরু করতে হবে। তার জন্য কোথাও যদি শ্রমিকদের অন্য জায়গা থেকে আনতে বা পাঠাতে হয়, তার ব্যবস্থা করতে হবে জেলাশাসককে। শ্রমিকদের যাতায়াত কেবলমাত্র রাজ্যের মধ্যেই হবে এবং সংশ্লিষ্ট শিল্পসংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে জেলা প্রশাসনকে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy