Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Lockdown

বন্ধ নাচের আসর, সুদিনের আশায় ছৌ-‘মাস্ক’

শিল্পীদের দাবি, এই ‘মাস্ক’ পরে ঘোরাঘুরি করতে যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য কাগজের মণ্ড ও কাপড় দিয়ে পাতলা আস্তরণ করে ওজন কমানো হয়েছে মুখোশের।

ছৌ মুখোশের আদলে মাস্ক। নিজস্ব চিত্র

ছৌ মুখোশের আদলে মাস্ক। নিজস্ব চিত্র

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঘমুণ্ডি শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২০ ০৪:২১
Share: Save:

করোনা-আবহে বন্ধ ছৌ-নাচের আসর। পর্যটকদের আনাগোনা বন্ধ হওয়ায় ছৌ-মুখোশের বিক্রিও নেই। এই পরিস্থিতিতে করোনা ঠেকানোর উপায় হিসেবে পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডির ‘মুখোশের গ্রাম’ চড়িদার শিল্পীরা বাজারে এনেছেন ছৌ-এর ‘মাস্ক’।

এত দিন তাঁরা ছৌ-নাচের জন্য যেমন দেব-দেবী, অসুর-সিংহের মুখোশ তৈরি করতেন, ‘মাস্ক’-ও তেমনই। শুধু চিবুক থেকে নাকের কিছুটা উপর পর্যন্ত মুখোশ থাকছে। শিল্পীদের দাবি, এই ‘মাস্ক’ পরে ঘোরাঘুরি করতে যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য কাগজের মণ্ড ও কাপড় দিয়ে পাতলা আস্তরণ করে ওজন কমানো হয়েছে মুখোশের। অক্সিজেন ঢুকতে যাতে বাধা না পায়, সে জন্য মুখোশের নাকে ছিদ্র রাখা হয়েছে। সাবধানের মার নেই মনে করে শিল্পীরা আবার মুখোশের ভিতরে কাপড়ের ‘মাস্ক’ আলাদা ভাবে দিচ্ছেন। ‘পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ’-এর পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক তথা পুরুলিয়া মেডিক্যালের চিকিৎসক নয়ন মুখোপাধ্যায় মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘নতুনত্বের জন্য ছৌ-এর ‘মাস্ক’ ব্যবহার করতে গেলে, কতগুলি বিষয়ে সাবধানতা নেওয়া জরুরি। ছৌ-এর ‘মাস্ক’ নিয়মিত স্যানিটাইজ় করতে হবে। তার ভিতরের কাপড়ের ‘মাস্ক’-ও রোজ সাবান দিয়ে ধুতে হবে। ছৌ-এর ‘মাস্ক’ পরে যাতে শ্বাস নিতে অসুবিধা না হয়, সে দিকেও খেয়াল রাখা জরুরি।’’

এই ‘মাস্ক’-এর দৌলতে সুদিন ফেরার আশা করছেন মুখোশ-শিল্পীরা। শিল্পী উদ্ধব সূত্রধরের কথায়, ‘‘করোনার বাড়বাড়ন্তে মুখোশ শিল্প ধুঁকছে। কী ভাবে ঘুরে দাঁড়ানো যায়, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে করতে রোগ ঠেকানোর জন্য ‘মাস্ক’ তৈরির ভাবনা সবার মধ্যে আসে।’’ গত কয়েকসপ্তাহ ধরে ছৌ-এর ‘মাস্ক’ তৈরি করে ঝাড়খণ্ডের একটি সংস্থার মাধ্যমে বিক্রি শুরু করে আয়ের মুখ দেখতে শুরু করেছেন বলে দাবি শিল্পীদের। মুখোশ শিল্পী ফাল্গুনী সূত্রধর জানাচ্ছেন, এক-একটা ‘মাস্ক’-এর দাম দেড়শো টাকা।

আরও পড়ুন: আক্রান্তের চেয়ে সুস্থের সংখ্যা বেশি, রাজ্যে এক দিনে মৃত ৪ চিকিৎসক

চড়িদার ‘ছৌ মুখোশ শিল্পী সূত্রধর সমিতি’-র সভাপতি রাজেশ সূত্রধর বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামে প্রায় তিনশো জন মুখোশ-শিল্পে যুক্ত। তাঁদের মধ্যে অনেকেই এখন মুখোশের আদলে ‘মাস্ক’ তৈরি করছেন।’’ প্রবীণ মুখোশ শিল্পী জগদীশ সূত্রধর বলেন, ‘‘এখন হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার, সাবান আর ‘মাস্ক’ চাল-আলুর মতোই নিত্য প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। ছৌ-এর ‘মাস্ক’-ই হয়তো চড়িদার দুর্দিন কাটাবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy