প্রতীকী ছবি।
‘এগিয়ে বাংলা’। তবে চড়া মূল্যবৃদ্ধির হারে।
এমনিতেই বাজারে জিনিসপত্রের দাম আমজনতার কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। দু’দিন আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্যে দেখা গিয়েছে, সেপ্টেম্বরে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের উপরে। পশ্চিমবঙ্গের বাজারে এই মূল্যবৃদ্ধির হার আবার আরও বেশি। প্রায় সাড়ে নয় শতাংশের কাছাকাছি।
দেশের সমস্ত রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেই মূল্যবৃদ্ধির হার সব থেকে বেশি ছিল সেপ্টেম্বরে। এর আগে অগস্টেও রাজ্যগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল সর্বোচ্চ। আরও চিন্তার কথা হল, এই দু’মাসেই রাজ্যে গ্রামের বাজারে ওই হার ছিল ১০ শতাংশের উপরে। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের যদিও অভিযোগ, কেন্দ্রে মোদী সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই নিশানা করছে পশ্চিমবঙ্গকে।
জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত ছ’মাস, অর্থাৎ এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে তিন মাসে (এপ্রিল, অগস্ট ও সেপ্টেম্বর) পশ্চিমবঙ্গ মূল্যবৃদ্ধির হারে বাকি সব রাজ্যকে পিছনে ফেলে দিয়েছিল। এই তিন মাসেই রাজ্যে গ্রামের বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ১০ শতাংশের উপরে ছিল। অর্থাৎ, শহরের তুলনায়
মূল্যবৃদ্ধির আঁচ গ্রামের গরিব মানুষের পকেটে আরও বেশি করে পড়ছে।
২১ জুলাইয়ের জনসভার মঞ্চে মূল্যবৃদ্ধি-জিএসটি নিয়ে মোদী সরকারকে তোপ দেগে মঞ্চে মুড়ি, নকল সিলিন্ডার আনিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই জুলাইয়েও পশ্চিমবঙ্গ মূল্যবৃদ্ধির নিরিখে রাজ্যগুলির মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে ছিল।
কেন মূল্যবৃদ্ধির হারে অন্যান্য রাজ্যকে বার বার ছাপিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ?
পরিসংখ্যান মন্ত্রক সূত্রের ব্যাখ্যা, খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হারের সূচক নির্ভর করে পরিবারের কেনাকাটার উপরে। এক-এক রাজ্যে এক-এক রকম জিনিসপত্রের চাহিদা। শহর ও গ্রামের মধ্যেও কেনাকাটার ফারাক দেখা যায়। সেই সব জিনিসপত্রের দামের উপরে সেই রাজ্যের মূল্যবৃদ্ধির সূচকের ওঠা-নামা নির্ভর করে। যেমন, পশ্চিমবঙ্গে খাদ্যপণ্যের দামের উপরে মূল্যবৃদ্ধির সূচক অনেকখানি নির্ভর করে। যে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার সারা দেশেই চিন্তার কারণ। এ রাজ্যে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সূচক বেড়ে যাওয়ার অর্থ, জোগানে সমস্যা থাকা, না হলে পরিবহণের বেশি খরচ, বা হয়তো দু’টোই। পশ্চিমবঙ্গে অন্য অনেক রাজ্যের তুলনায় জ্বালানির উপরে ভ্যাটের হার বেশির দিকে হওয়ায় ডিজ়েলের দাম বেশি। সে ক্ষেত্রে পরিবহণের খরচ খাদ্যপণ্যের দামে প্রভাব ফেলছে।
চন্দ্রিমার অবশ্য প্রতিক্রিয়া, “এই তথ্য কোথা থেকে ওরা পেয়েছে, জানি না। মূল্যস্ফীতি নিয়ে ওদের বক্তব্যের মধ্যেই তো মিল নেই! ওরা নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে আমাদের রাজ্যকে বেছে নিচ্ছে বার বার! শুধু পশ্চিমবঙ্গে কী করে মূল্যস্ফীতি বাড়ে! সারা দেশেই কেন্দ্র মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে ব্যর্থ। এমনকি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যকে তাঁর মন্ত্রক সমর্থন করে না। ফলে এই তথ্যের যৌক্তিকতা বোঝা যাচ্ছে না।”
অর্থনীতিবিদদের একাংশ বলছেন, যখনই পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে মূল্যবৃদ্ধির হার ১০ শতাংশ ছাপিয়ে যাচ্ছে, তখনই রাজ্য সার্বিক ভাবে মূল্যবৃদ্ধির হারে সবাইকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। কেন রাজ্যের গ্রামে মূল্যবৃদ্ধির হার চড়া, তা খতিয়ে দেখা দরকার। চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ছ’মাসেই (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) পশ্চিমবঙ্গে মূল্যবৃদ্ধির হার জাতীয় হারের থেকে বেশি ছিল। মে, জুন বাদে বাকি চার মাসেই মূল্যবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশের বেশি। এই চার মাসে বাংলার গ্রামে মূল্যবৃদ্ধির হারও ৯ শতাংশ বা তার বেশি ছিল।
তথ্য সহায়তা: চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy