—প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার উন্নয়নের নানা মাপকাঠিতে সাফল্যের খতিয়ান দিতে গিয়ে বার বার শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের সাফল্য তুলে ধরে। আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করতে গিয়ে শুক্রবারও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিসংখ্যান দিয়ে ফের রাজ্যের অগ্রগতির দাবি করেছেন। প্রাকৃতিক গ্যাস এবং তেল ক্ষেত্র-সহ শিল্পের পরিকাঠামোর নিরিখে নতুন সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছেন।
একগুচ্ছ নতুন প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, আগামী পাঁচ বছরে সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি এবং স্বনির্ভর ক্ষেত্রে এ রাজ্যে আরও ১.৫০ কোটি নতুন কর্মসংস্থান হবে। আর সেই লক্ষ্য ছোঁয়ার জন্যই ২০২১-২২ সালের বাজেটে ১২,০৩০ কোটি টাকার সংস্থান করা হয়েছে। যদিও সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁদের ও সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের প্রশ্ন, রাজ্যে শিল্পের প্রকৃত ছবি আদৌ কতটা রঙিন? করোনা সঙ্কটে বহু পরিযায়ী শ্রমিকের ঘরে ফেরাই বা কাজের সুযোগ নিয়ে কীসের ইঙ্গিত দেয়?
অসুস্থতার জন্য এ দিন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বিধানসভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। তাই অন্তর্বর্তী বাজেট বক্তৃতা পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। গোড়াতেই তাঁর দাবি, অতিমারি, আমপানের মতো ভয়ঙ্কর ঝড় এবং কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়েও গত বছর ‘অপরাজিত’ থেকেছে এ রাজ্য। শুধু দেশ নয়, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নতুন ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে ‘বাংলা’। রাজ্য জ়ুড়ে বিভিন্ন শিল্প পার্ক, রাজারহাটে সিলিকন ভ্যালি, ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্প (এমএসএমই), সব ক্ষেত্রেই গত ১০ বছরে জোয়ার এসেছে। আর তার হাত ধরে তৈরি হয়েছে ১ কোটি সাড়ে ১২ লক্ষ কাজ।
শিল্পের প্রসারে বিশেষ প্রকল্পের মধ্যে তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে অশোকনগরে প্রাকৃতিক গ্যাস এবং ডেউচা পাঁচামি কয়লা উত্তোলন প্রকল্প বাজেট বক্তৃতায় জায়গা পেয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ডেউচা পাঁচামিতে প্রথম দু’বছরে শুধু সরকারি জমিতে কাজ হবে। কাউকে তাঁর জমি থেকে উচ্ছেদ করা হবে না।
পাশাপাশি পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের ২৪৮৩ একর জমিতে শিল্পনগরী— ‘জঙ্গল সুন্দরী কর্মনগরী’ গড়তে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য। বর্ধমান, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়াকে ঘিরে বিশেষ শিল্প-করিডর, অন্ডাল বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত করার কথা বলা হয়েছে। মমতার আশা, রাজারহাটের সিলিকন ভ্যালিতে পাঁচ বছরে ৪০০০ কোটি টাকা লগ্নি আসবে। যেখানে ৫০ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির সম্ভাবনা।
বাজেটে অতিমারিতে বিধ্বস্ত পর্যটন শিল্প সংস্থাকে ৫০ হাজার থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যাঙ্ক ঋণ পাওযার সুবিধা দেওয়ার কথাও এ দিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সুদের ৫০% প্রথম বছরে বহন করবে রাজ্য। এই প্রকল্পের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বাজেটে।
রাজ্যের এই বাজেটে প্রাথমকি ভাবে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে শিল্পমহল। ইন্ডিয়ান চেম্বারের প্রেসিডেন্ট বিকাশ আগরওয়াল এবং মার্চেন্টস চেম্বারের প্রেসিডেন্ট আকাশ শাহ, ভারত চেম্বারের প্রেসিডেন্ট রমেশ কুমার সারাওগির মতে, অতিমারি বিধ্বস্ত আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রের উন্নয়ন গুরুত্ব পেয়েছে। তবে রমেশের দাবি, পূর্ব ঘোষিত তাজপুরের প্রকল্পটির বরাদ্দ ছাড়া রাজ্যের অর্থনীতি বা ব্যবসা কেন্দ্রিক উন্নয়নের তেমন দিশা নেই। তাঁরা কর ছাড়ের আশাও করেছিলেন।
শিল্পমহলের একাংশের আবার বক্তব্য, পর্যটনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের মতোই রাজ্যও ঋণের সুবিধা কথা বলেছে। কিন্তু এই শিল্পের যা দশা, তাতে নতুন করে ঋণ নেওয়ার মতো অবস্থায় ক’জন রয়েছে? বরং সরাসরি আর্থিক সুবিধা পেলে ভাল হত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy