ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারই বাংলার কৃষকদের কেন্দ্রীয় সরকারি সাহায্য পেতে দিচ্ছে না বলে কেন্দ্রের তরফে বার বার অভিযোগ করা হয়। এ বার কেন্দ্রের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে তার পাল্টা দিল নবান্ন। কেন্দ্রীয় সরকারের পিএম কিসান প্রকল্পে ঠিকমতো টাকা মিলছে না বলে অভিযোগ জানাল রাজ্য।
কেন্দ্রের পিএম কিসান প্রকল্পের সঙ্গে রাজ্যের কৃষকবন্ধুর দ্বৈরথে অতীতে বহু বার রাজনীতির পারদ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে পিএম কিসানে ঠিকঠাক টাকা না-পাওয়ার অভিযোগে সরব হয়েছেন। সোমবার কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল সব রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করেন। উত্তরপ্রদেশের তরফে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বৈঠকে থাকলেও বাকি সব রাজ্যের পক্ষে আলোচনায় যোগ দেন কৃষিমন্ত্রী বা কৃষিসচিবেরাই। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ছিলেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং কৃষিসচিব ওঙ্কার সিংহ মিনা। বৈঠকে রাজ্যের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, পিএম কিসানে যথাযথ ভাবে টাকা পাওয়া যাচ্ছে না।
এ দিনের বৈঠকে পরিসংখ্যান-সহ জানানো হয়, পিএম কিসানের জন্য যাচাই করে কেন্দ্রীয় পোর্টালে ৪৬.০২ লক্ষ উপভোক্তার নাম আপলোড করে রাজ্য সরকার। তাঁদের মধ্যে ৩৮.৫১ লক্ষ উপভোক্তা টাকা পাবেন বলে মঞ্জুরি দেয় কেন্দ্র। কিন্তু তার পরেও কেন্দ্রীয় আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন মাত্র ২৩.৭৭ লক্ষ উপভোক্তা। বাকি অন্তত ১৫ লক্ষ কৃষক কেন কেন্দ্রের আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, সেই প্রশ্নও তুলেছে রাজ্য। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এর কোনও নির্দিষ্ট উত্তর মেলেনি। কেন্দ্রের বক্তব্য, সংশ্লিষ্টদের আয়কর বা আধার কার্ডের তথ্য সময়মতো না-পাওয়ার দরুন এই সমস্যা হয়েছে। রাজ্যের বক্তব্য, সব যাচাই করেই কেন্দ্রে উপভোক্তাদের নাম পাঠানো হয়েছিল। বাকি তথ্য সরবরাহ করার কথা কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির। সেই কাজ যদি ঠিকমতো না-হয়ে থাকে, তা হলে কেন্দ্রের উচিত ওই সংস্থাগুলিকেই চেপে ধরা।
এ দিনের বৈঠকের বিষয়বস্তুর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, বিভিন্ন প্রকল্পের সংশোধন, পিএম কিসান, কিসান ক্রেডিট কার্ড, জাতীয় কৃষক তথ্যভান্ডার, ডাল ও ভোজ্য তেল উৎপাদনে স্বনির্ভর হয়ে ওঠা। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, যোগী আদিত্যনাথ ছাড়া অন্যেরা বৈঠকে বলার তেমন সুযোগই পাননি। রাজনৈতিক শিবিরের অনুমান, উত্তরপ্রদেশে আগামী বছর নির্বাচন থাকায় তাদেরই কথা বলার বেশি সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে যে-স্বল্প সময় পাওয়া গিয়েছিল, তাতে পশ্চিমবঙ্গ জানিয়েছে, খাদ্যশস্য এবং আনাজ উৎপাদনে তারা স্বনির্ভর। কৃষকদের পক্ষে উপযোগী একাধিক প্রকল্প থাকায় এ রাজ্যে উৎপাদনের গতি বেড়েছে অনেকটাই।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী ২০১৭-১৮ সালে রাজ্যে কৃষি উৎপাদনের হার ছিল ১৭৭%, ২০১৯-২০ সালে তা বেড়ে হয় ১৯০%। কৃষি ক্ষেত্রে ২০১০-১১ আর্থিক বছরে ১৮০.৭ কোটি বাজেট বেড়ে ২০২০-২১ আর্থিক বছরে হয়েছে ৫৮৬৯ কোটি টাকা। ২০১০-১১ সালে রাজ্যে খাদ্যশস্য উৎপাদনের মাত্রা ছিল ১৪৮.১ লক্ষ মেট্রিক টন। সেটাই ২০১৯-২০ সালে বেড়ে হয়েছে দু’লক্ষ মেট্রিক টন। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের দাবি, তারা ভর্তুকির ব্যবস্থা করলে উত্তরবঙ্গ বা পশ্চিমাঞ্চলের কিছু জেলায় তৈলবীজ উৎপাদনের চেষ্টা করা হবে। কারণ, বেশি শীতে তৈলবীজের চাষ ভাল হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy