তড়িঘড়ি দিল্লি যাচ্ছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার বিকেলেই রাজধানীর উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। বৃহস্পতিবার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে রাজভবনে গিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং দিলীপ ঘোষ। তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাতের পরেই রাজ্যপাল দিল্লি যাবেন বলে খবর। রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যপালকে ডেকে পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই তলবেই তড়িঘড়ি দিল্লি যাচ্ছেন তিনি। বাংলার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে শাহের আলোচনা হতে পারে।

বৃহস্পতিবার রাজভবনে সুকান্ত মজুমদার এবং দিলীপ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামের একটি সংগঠন মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল। সেই কর্মসূচিকে সমর্থন করেছিল বিজেপি। তার পরে বুধবার তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন বিজেপিকে। তাঁর কিছু মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বুধবার ওই মন্তব্যের প্রতিবাদে শাহকে চিঠি লিখেছিলেন সুকান্ত। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবিও জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:

বৃহস্পতিবার রাজভবনে (বাঁ দিকে) সুকান্ত মজুমদার এবং দিলীপ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লেখার পর বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের সঙ্গেও দেখা করেছেন সুকান্ত। সেখানেও এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়েছেন এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রাজভবন থেকে বেরিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘রাজ্যের সর্বোচ্চ পদে থেকে কেউ এই ধরনের মন্তব্য করতে পারেন বলে আমার মনে হয় না। ওঁর মন্তব্যের কথা বাংলাদেশের জামাতের মিল পাওয়া যাচ্ছে। অসম, ওড়িশার মতো রাজ্যের বিরুদ্ধেও কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আমরা সে বিষয়ে আমাদের উদ্বেগের কথা রাজ্যপালকে জানিয়েছি। ওঁকে জানিয়েছি, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে, সাংবিধানিক ভাবে আপনার যা করার করুন।’’
কী বলেছিলেন মমতা? কোন মন্তব্য নিয়ে এত বিতর্ক?
আরও পড়ুন:
বুধবার মেয়ো রোডের সভা থেকে আরজি কর প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আমরা বলেছিলাম বদলা নয়, বদল চাই। আজ বলছি, ওই কথা নয়। আজ বলছি, যেটা করার দরকার, সেটা আপনারা ভাল বুঝে করবেন।’’ শাহকে লেখা চিঠিতে এই মন্তব্য উদ্ধৃত করেছিলেন সুকান্ত। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর নির্লজ্জ মন্তব্যের প্রতি আমি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। এর মাধ্যমে তিনি বদলার রাজনীতিকেই প্রশ্রয় দিচ্ছেন।’’ এ ছাড়া, মমতার আরও একটি মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘‘বাংলায় আগুন জ্বললে অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং দিল্লিও জ্বলবে।’’ এই মন্তব্যের পরে অসম, ওড়িশার মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি মমতাকে একযোগে আক্রমণ করেছিল। তাঁর মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এবং ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝি। কেন্দ্রকে চিঠি দেওয়ার পর সুকান্ত রাজ্যপালের কাছেও মমতার মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। তার পরেই দিল্লি থেকে রাজ্যপালকে ডাকা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।