বেসরকারি স্কুলে লাগামহীন বেতন বৃদ্ধি রুখতে একটি আইন চালু করার পথে এগোচ্ছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার বিধানসভায় এমনটাই জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বেসরকারি স্কুলের ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে প্রশ্ন করেন বাঁকুড়া জেলার ছাতনার বিজেপি বিধায়ক সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায়। জবাবে বেসরকারি বিদ্যালয়গুলিতে বেতন বৃদ্ধি, তা নিয়ে অভিভাবকদের উপর চাপ, বিদ্যালয়ের কাচ ভেঙে পড়ার মতো অভিযোগের কথা মেনে নেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি জানান, এমন বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ সরকারের কাছে পৌঁছেছে। এগুলি বন্ধ করতে একটি কমিশন গঠন করার পথে এগোচ্ছে রাজ্য সরকার। বেসরকারি স্কুলের বেতন বৃদ্ধি রুখতে সরকার বিধানসভায় একটি বিল আনতে চলেছে বলেও জানান ব্রাত্য।
বস্তুত, রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলিতে বেতন বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইভেট স্কুল রেগুলেটরি কমিশন’ গঠনের জন্য ২০২৩ সালের অগস্ট মাসে নীতিগত অনুমোদন দেয় রাজ্য মন্ত্রিসভা। শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, কমিশনে মোট ১১ জন সদস্য থাকবেন, যার প্রধান হবেন এক জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। কমিশনের বাকি সদস্যদের মধ্যে থাকবেন স্কুল শিক্ষা কমিশনার, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চশিক্ষা সংসদের সভাপতি, শিক্ষামন্ত্রী মনোনীত দু’জন শিক্ষাবিদ। এ ছাড়া সিবিএসই এবং আইসিএসই বোর্ডের প্রতিনিধিরাও থাকবেন বেসরকারি স্কুলে বেতন বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের এই কমিশনে। বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের বেতন সংক্রান্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে তা সমাধানের দায়িত্ব থাকবে এই কমিশনের উপর। এই কমিশন গঠনের মূল উদ্দেশ্য হল বেসরকারি স্কুলগুলির অতিরিক্ত বেতন নেওয়া আটকানো এবং বেতন সংক্রান্ত অন্য অভিযোগগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি করা।
আরও পড়ুন:
শিক্ষামন্ত্রী জানান, পরবর্তী সময়ে বেসরকারি স্কুলগুলিতে বেতন বৃদ্ধির উপর নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য একটি কড়া আইনও চালু করা হবে। তার জন্য রাজ্য বিধানসভায় একটি বিল পেশ করবে সরকার। বেসরকারি স্কুলে বেতন বৃদ্ধি নিয়ে মাঝেমধ্যেই অভিভাবকদের অভিযোগ এবং বিক্ষোভ প্রকাশ্যে আসে। বেসরকারি স্কুলগুলিতে ভর্তির জন্য মাত্রাছাড়া অর্থ নেওয়ারও অভিযোগ শোনা যায় অনেক সময়ে। রাজ্য সরকার এই সংক্রান্ত বিল পেশ করে তা আইনে পরিণত করলে বেসরকারি স্কুলের বেতন নিয়ে অভিভাবকদের দীর্ঘ অভিযোগের সমাধান হতে পারে বলে অনুমান।