Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
tajpur

তাজপুর বন্দর নিয়ে চুক্তি শীঘ্রই

টেন্ডার-প্রক্রিয়ায় তাজপুর বন্দর গড়ার ক্ষেত্রে রাজ্য বেছে নিয়েছে আদানিদেরই। রাজ্য মন্ত্রিসভা তাদের লেটার অব ইনটেন্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে সম্মতি দিয়েছিল।

তাজপুরের গভীর সমুদ্রবন্দর নিয়ে আশা ক্রমশ বাড়ছে প্রশাসনের অন্দরে।

তাজপুরের গভীর সমুদ্রবন্দর নিয়ে আশা ক্রমশ বাড়ছে প্রশাসনের অন্দরে। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২২ ০৭:২৫
Share: Save:

শুরুতে কিছু প্রশ্ন থাকলেও তাজপুরের গভীর সমুদ্রবন্দর নিয়ে আশা ক্রমশ বাড়ছে প্রশাসনের অন্দরে। সূত্রের খবর, শীঘ্রই আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে এ নিয়ে চুক্তি করবে রাজ্য সরকার। তার পরেই পরিকাঠামো-সহ বন্দরের মূল কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। তবে চ্যালেঞ্জ রয়ে গিয়েছে পরিকাঠামো গঠনের বিষয়ে। কারণ, একদিকে হলদিয়া, অন্যদিকে আদানিদেরই ধামড়া বন্দর রয়েছে। এই দু’য়ের মধ্যে অবস্থিত তাজপুরকে লাভজনক করে তুলতে গেলে পরিকাঠামোর বিশেষ উন্নয়ন প্রয়োজন বলেই মনে করেন বন্দর বিশেষজ্ঞদের অনেকে।

টেন্ডার-প্রক্রিয়ায় তাজপুর বন্দর গড়ার ক্ষেত্রে রাজ্য বেছে নিয়েছে আদানিদেরই। রাজ্য মন্ত্রিসভা তাদের লেটার অব ইনটেন্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে সম্মতি দিয়েছিল। গত ১২ অক্টোবর সরকারি বিজয়া সম্মেলন অনুষ্ঠানে গোষ্ঠীর অন্যতম কর্ণধার করণ আদানির হাতে তা তুলেও দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, নিয়ম অনুযায়ী, সেই প্রক্রিয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে আদানি গোষ্ঠী রাজ্যকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্মতিও (অ্যাকসেপটেন্স) জানিয়েছে। এ বার বাকি রয়েছে চুক্তি সম্পাদনের কাজ। তা হয়ে গেলেই পরিকাঠামো-সহ বন্দর গড়ার ব্যাপারে সমীক্ষা করা হবে। সমান্তরালে প্রকল্পের জন্য চাওয়া হবে পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র।

প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তা বলেন, “প্রকল্পকে ঘিরে সরাসরি প্রায় ২৫ হাজার কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে। পরোক্ষ ভাবে কর্মসংস্থান হতে পারে এক লক্ষ।” তবে প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, চুক্তি সম্পাদনের পরেই পুরো চিত্রটা স্পষ্ট হবে। এমন হতে পারে, বন্দর নির্মাণ, তা পরিচালনা এবং পরে রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার দায়িত্ব থাকতে পারে আদানি গোষ্ঠীর উপরে। বন্দর পরিচালনার সময় লাভের অংশীদারিত্বও রাজ্যকে দিতে পারে তারা। তাজপুরের কাছেই কলকাতা ও হলদিয়া নদী বন্দর এবং ওড়িশার ধামড়া সমুদ্রবন্দর থাকায় পরিকাঠামোয় বাড়তি নজর দিতে হচ্ছে রাজ্যকে। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, স্থলভাগের কাছাকাছি সমুদ্র-এলাকায় ৭-৮ মিটার নাব্যতা থাকার কথা। তার একটু দূরত্বে নাব্যতা হবে ১২.১ মিটার। জোয়ারের কারণে অতিরিক্ত আরও ৩.১ মিটার গভীরতা পাওয়া সম্ভব। তবে বন্দরের জন্য স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের ভিতর পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি চ্যানেল তৈরি করতে হবে। তাতে সাধারণ ভাবে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টন ভার বহনে সক্ষম জাহাজ বন্দরে আনা সম্ভব। বন্দর-বিশেষজ্ঞদের অনেকেই জানাচ্ছেন, কন্টেনারে আনা হয় না এমন ধরনের ‘বাল্ক-কার্গো’ ( মূলত কয়লা, আকরিক, ফ্লাই অ্যাশ, ভারী যন্ত্রপাতি) নিয়ে ধামড়া বন্দরে কাজ করে আদানি গোষ্ঠী। তাজপুর বন্দরের ক্ষেত্রে হয়ত আরও বেশি কাজ সম্ভব হবে। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “ওড়িশার তুলনায় পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের বাজারের সম্ভাবনা অনেক বেশি। ফলে তাজপুরের সম্ভাবনা যথেষ্ট।”

প্রসঙ্গত, গ্রিনফিল্ড প্রযুক্তিতে বন্দরটি তৈরিতে ১৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়াও পরিকাঠামো তৈরিতে বিনিয়োগ হবে আরও প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। পরিকাঠামো তৈরির কাজ কী ভাবে হবে, তা সমীক্ষার পরে চূড়ান্ত হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য। তবে সড়ক এবং রেল যোগাযোগের উপর বন্দরের ভবিষ্যৎ অনেকাংশে নির্ভর করছে। প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, ইতিমধ্যে বন্দরের সঙ্গে সুগম যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি পরিকল্পনা চলছে।

অন্য বিষয়গুলি:

tajpur Adani Group
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE