—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সন্দেশখালি মামলায় সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার! সন্দেশখালিতে জমি দখল ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় তদন্তের ভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবারই কলকাতা হাই কোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে গিয়েছে রাজ্য। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের বেঞ্চে আগামী ২৯ এপ্রিল এই মামলার শুনানি হবে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। উল্লেখ্য, শুক্রবার সকালেই সন্দেশখালিতে আবার হানা দিয়েছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একটি সূত্রে খবর, শাহজাহান শেখের এক ঘনিষ্ঠের আত্মীয়ের বাড়িতে প্রচুর অস্ত্র এবং বোমা মজুত রয়েছে, এমন খবর পাওয়া মাত্রই অভিযান চালানো হয়েছে। তল্লাশি অভিযানে মিলেওছে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র। ঘটনাচক্রে, একই দিনে সন্দেশখালিকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে রাজ্য শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বলে খবর। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সন্দেশখালি ঘটনার তদন্তভার সিবিআই নেওয়ার পর বেশ কয়েক বার সেখানে এসেছেন কেন্দ্রীয় সংস্থার গোয়েন্দারা। গত শনিবারও সন্দেশখালিতে এসেছিল সিবিআইয়ের দু’টি দল। একটি দল গিয়েছিল থানায়। অন্য দলটি গিয়েছিল সুন্দরীখালির দিকে। শুক্রবার সকালে সিবিআই হানা শাহজাহানের ঘনিষ্ঠের আত্মীয়ের বাড়িতে।
প্রসঙ্গত, সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান এবং তাঁর শাগরেদদের বিরুদ্ধে জমি দখল এবং নারী নির্যাতনের বহু অভিযোগ জমা পড়েছিল পুলিশের কাছে। সেই শাহজাহান পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর প্রথমে সিবিআই হেফাজত এবং তার পরে ইডি হেফাজতে ছিলেন। আপাতত তিনি জেলে। গ্রেফতার হয়েছেন শিবপ্রসাদ হাজরা ওরফে শিবু হাজরা-সহ শাহজাহানের শাগরেদরাও। অন্য দিকে, সন্দেশখালি নিয়ে বেশ কিছু মামলাও চলছে হাই কোর্টে।
সম্প্রতি সেই মামলার শুনানিতেই সিবিআইকে সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। গত ১০ এপ্রিল কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ সন্দেশখালি নিয়ে একটি ইমেল আইডি চালু করার নির্দেশও দেয়। যেখানে মূলত সন্দেশখালির মহিলাদের বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধ এবং জমি দখলের ঘটনার অভিযোগ জানানো যাবে এবং নির্যাতিতা মহিলাদের পরিচয় গোপন করা যাবে। আদালতের ওই নির্দেশের পরই ইমেল আইডি তৈরি করে সিবিআই। জেলাশাসকের মাধ্যমে এবং এলাকার সংবাদপত্রে নোটিস দিয়ে ওই ইমেল আইডি প্রচারের ব্যবস্থাও করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সিবিআই সূত্রে খবর, তার পর থেকেই সন্দেশখালি থেকে আসা লিখিত অভিযোগ উপচে পড়ে সিবিআইয়ের মেলবক্সে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইমেলে আসা সেই সব অভিযোগে নারী নির্যাতনের অভিযোগও করা হয়েছে। এর বাইরেও নানা বিষয় নিয়ে সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন সন্দেশখালির মানুষ। এর পর সেই সমস্ত অভিযোগের বিষয়বস্তু সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে গত শনিবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দু’টি দল সন্দেশখালিতে গিয়েছিল। সেখানে নারী নির্যাতনের অভিযোগ খতিয়ে দেখে বৃহস্পতিবারই সিবিআই নারী নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছে।
এর পরে শুক্রবার সকালে সন্দেশখালিতে হানা দেয় সিবিআই। শুক্রবার সন্দেশখালির সরবেড়িয়ার মল্লিকপুরে শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ হাফিজুল খাঁয়ের ভগিনীপতির বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে যান তদন্তকারীরা। মূল রাস্তা থেকে প্রায় ২০০ মিটার ভিতরে মাছের ভেড়িবেষ্টিত বাড়িটি। সেখানে যাওয়ার একটিই সরু ইট পাতা রাস্তা রয়েছে। সেই রাস্তা আটকে দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সিবিআই সূত্রে খবর, বাড়িটি থেকে প্রচুর অস্ত্র-বোমা উদ্ধার হয়েছে। দাবি, গোপন সূত্রে অস্ত্র-বোমা মজুতের খবর পাওয়া মাত্রই অভিযান চালানো হয়। সেই বাড়ির মাটি খুঁড়েই প্রচুর বিদেশি বন্দুক মিলেছে বলে দাবি। তদন্তকারীদের অনুমান, বাড়িতে প্রয়োজনীয় নথিপত্রও মিলতে পারে। সিবিআই আধিকারিকেরা এখনও বাড়ির ভিতরেই রয়েছেন বলে খবর। তার মধ্যেই রাজ্য সরকার সন্দেশখালিকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy