শহরের বিভিন্ন প্রান্তে নতুন করে এমনই ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। —নিজস্ব চিত্র
প্রতিদিনই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে রাজ্যে। গত কয়েক দিন ধরে যে ভাবে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে নতুন করে রাজ্যে লকডাউন হতে পারে বলে জল্পনা তুঙ্গে। যদিও এখনও পর্যন্ত নবান্ন থেকে লকডাউনের বিষয়ে ঘোষণা হয়নি। তবে সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকেই। সম্পূর্ণ লকডাউনের পথে না হেঁটে, যেখানে সংক্রমণের হার বেশি, সেই এলাকাগুলিকে লকডাউনের আওতায় আনা হতে পারে। ইতিমধ্যে কলকাতায় বেশ কয়েকটি এলাকায় লকডাউনের বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সিল করে দেওয়া হয়েছে বহুতল। বিভিন্ন রাস্তায় নতুন করে ব্যারিকেডও বসেছে। জরুরি বৈঠকে কলকাতা পুরসভা।
কলকাতায় এই বিধি-নিষেধের পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের একটি পরিকল্পনার খসড়া রাজ্যে নতুন করে লকডাউনের জল্পনা উস্কে দিয়েছে। ওই পরিকল্পনায় ১৪ দিনের জন্য বাজার, গণপরিবহণ, ধর্মীয় স্থান বন্ধ রাখার প্রস্তাব রয়েছে। মাত্র ২০ শতাংশ কর্মী নিয়ে অফিস-কারখানা চালানোর কথা বলা হয়েছে। দমদম থেকে আন্তর্জাতিক উড়ান বন্ধ রাখার প্রস্তাবও আছে ওই পরিকল্পনায়। তবে কবে থেকে এই পরিকল্পনা কার্যকর করা হবে, তার স্পষ্ট কোনও উল্লেখ নেই। বলা হয়েছে, পরিষেবা বন্ধ করার দু’দিন আগে থেকে মাইকে প্রচার করতে হবে।
রাজ্যে কোভিড সংক্রমণে প্রথম কলকাতা এবং তার পরেই উত্তর ২৪ পরগনা। কাজেই এই দুই এলাকায় কড়াকড়ির দরকার বলে প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের অভিমত। সূত্রের দাবি, কলকাতার বিভিন্ন থানার ওসি-দের নিজেদের এলাকায় করোনা হটস্পট চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে।
কলকাতায় এখনও পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৩৮৯ জন। তার মধ্যে সুস্থ হয়েছেন প্রায় সাড়ে চার হাজার। সক্রিয় করোনা আক্রান্ত ২ হাজার ৪১৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ৪২৮ জন।মঙ্গলবার সকালে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের এক সাব ইন্সপেক্টরের।তিনি চ্যাটার্জিহাট থানায় কর্মরত ছিলেন।
ভবানীপুর, বাগবাজার, পন্ডিতিয়া রোড, কাঁকুড়গাছি, আলিপুর, টালিগঞ্জ, উল্টোডাঙা, ইন্দ্রপুরি স্টুডিও, মুকুন্দপুর, গড়িয়াহাট লেক রোড-এ ১৮ টি এলাকা কন্টেনমেন্ট জোনের আওতায় রয়েছে। এই এলাকাগুলিতে ১ হাজার ৮৭২টি আইসোলেশন ইউনিট রয়েছে।
অন্যান্য জেলায় এতটা করুণ পরিস্থিতি নয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, নিয়মের তোয়াক্কা না করে বাজার-রাস্তায় মানুষের ভিড় বাড়ছে। মুখের মাস্ক থুতনিতে নেমে গিয়েছে। দূরত্ববিধি মানা শিকেয় উঠেছে। আগামী দিনে এই ছবিটা আরও ভয়াবহ হবে। ফের লকডাউনের পথেই হাঁটতে হবে।
আরও পড়ুন: দেশে মোট আক্রান্ত সাত লক্ষ ছাড়াল, মৃত্যু পেরলো ২০ হাজার
রাজ্যের পুর ও নগরন্নোমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, বিধি-নিষেধ লোকে মানছেন না। রাস্তায় বেরিয়ে আসছেন। সে কারণে পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। যাতে করোনা আক্রান্তরা রাস্তায় না বেরোয়। নিয়ম মানতে বলা হয়েছে। করোনা আক্রান্তদের ঘরে থাকার মতো নয়, তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে।
আরও পড়ুন: আগাম সতর্কতা, চিনকে টক্কর দিতে লাদাখে মোতায়েন বায়ুসেনার অ্যাপাচে
কলকাতার পরই সব থেকে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি উত্তর ২৪ পরগনায়। জেলাশাসকের সঙ্গে ব্যারাকপুর, বিধাননগরের পুলিশ প্রধান, বারাসত, বসিরহাট পুলিশ জেলার এসপি ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের বৈঠকে আলোচিত পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, সব বাজার-হাট বন্ধ থাকবে। শুধু নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের একক দোকান খোলা থাকবে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। অটো, টোটো, বাস পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। ১০ দিন পরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে। উত্তর ২৪ পরগনায় এখনও পর্যন্ত মোট আক্রান্তর সংখ্যা চার হাজার ছুঁই ছুঁই। মারা গিয়েছেন ১২৯জন। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২৯৯জন। সক্রিয় করোনা আক্রান্ত ১ হাজার ৫১৩জন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy