রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।— ফাইল চিত্র।
মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত রাজ্যপালের বক্তৃতা অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্তে সরকারপক্ষ অটল। অন্যদিকে সেই ভাষণের বাইরে ‘নিজের কথা’ বলতে অনড় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও। এমনই এক বেনজির পরিস্থিতিতে আজ শুক্রবার শুরু হচ্ছে বিধানসভার বাজেট অধিবেশন।
রাজ্যপাল বৃহস্পতিবার ফের ঘোষণা করেছেন সরকারের তৈরি করে দেওয়া বক্তৃতার সঙ্গেই তিনি বিভিন্ন বিষয়ে নিজস্ব বক্তব্যও জানাবেন। তাঁর দাবি, এটা তিনি করবেন তাঁর সাংবিধানিক অধিকারের সীমা লঙ্ঘন না করে। এদিন শান্তিনিকেতনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘সরকার রাজ্যপালের ভাষণের মাধ্যমে নিজের নীতি বলতে পারে। কিন্তু আমিও আমার প্রস্তাব দিতে পারি। আমি সরকারের ভাষণ পাঠ করব, কিন্তু নিজের প্রস্তাবও দেব। আমার ভাষণে সরকারের বক্তব্যের উপর টিপ্পনী থাকবে। প্রয়োজনীয় অংশে নিজস্ব পর্যবেক্ষণ ও মতামতও জানাব।’’
সংবিধান বিশেষজ্ঞরা অনেকেই মনে করেন রাজ্যপাল ‘অনুমোদিত’ ভাষণের বাইরে যেতে পারেন না। সিপিএম ও কংগ্রেসের মতো বিরোধীরাও এর সঙ্গে সহমত।
সূত্রের খবর, রাজ্যপালকে নানাভাবে এই বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। ফলে বিধানসভায় লিখিত ভাষণ পড়ার পরে আলাদাভাবে তিনি ‘নিজের কথা’ জানানোর পথে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে সাংবাদিক সম্মেলন বা প্রেস বিবৃতি, দুই পথই তাঁর সামনে খোলা।
আরও পড়ুন: যাদবপুরে প্রার্থী দিল এবিভিপি
এই অবস্থায় প্রয়োজনে রাজনৈতিকভাবে তার মোকাবিলা করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘‘এই আবহ অবশ্য রাজ্যপালই তৈরি করেছেন। তবু আশা করব, তিনি সংবিধান ও আইনসভার বিধি মেনেই নিজের কর্তব্য পালন করবেন।’’
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা, নারী-সুরক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতির মতো কিছু বিষয় নিয়ে রাজ্যপাল নিজের অসন্তোষের কথা সামনে এনেছেন। সেই সঙ্গে কিছু কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্য সরকার সেগুলি কার্যকর না করায় নবান্নের দিকে আঙুলও তুলেছেন। রাজনৈতিক শিবিরের অনেকের ধারণা, ‘নিজের কথা’ হিসেবে এই সব বিষয় তিনি তুলে ধরতে পারেন।
আরও পড়ুন: বিলগ্নিকরণ নিয়ে সরব অভিষেক
এদিন রাজভবন থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়, মন্ত্রিসভার তৈরি বক্তৃতার খসড়া দেখে রাজ্যপাল কিছু কিছু জায়গায় পরিবর্তন ও সংযোজন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সেই সুপারিশ মানা হয়নি। সরকার এদিন সন্ধ্যায় তাঁকে জানিয়ে দেয় যে বক্তৃতা পাঠানো হয়েছে, তা চূড়ান্ত। তবে রাজ্যপাল ‘লক্ষ্মণরেখা’ লঙ্ঘন করতে চান না। আবার প্রশাসন বা অন্য কোনও কর্তৃপক্ষ সংবিধানের বিচ্যুতি ঘটালে তা-ও মানা হবে না।
অন্যদিকে পরিষদীয় মহলের খবর, রাজ্যপাল যদি তাঁর বক্তৃতায় ‘নিজের কথা’ বলতে শুরু করেন তাহলে প্রথমেই শাসক বেঞ্চ থেকে জোরাল প্রতিবাদ জানানো হবে। স্পিকার আগেই জানিয়ে রেখেছেন, লিখিত বক্তৃতার বাইরে রাজ্যপালের কোনও কথা নথিভূক্ত হবে না। সেক্ষেত্রে শুধু লিখিত বক্তৃতাটি পড়া হয়েছে বলে নথিতে থাকবে।
পাশাপাশি রাজ্যপালের ভাষণের উপর বিতর্কের সময় সরকারপক্ষ তাঁর ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করতে পারে। সে সবই বিধানসভায় নথিভূক্ত থাকবে। যেটা রাজ্যপালের পদমর্যাদার পক্ষে বেমানান।
আর যদি রাজ্যপাল সভার বাইরে নিজস্ব মতামত জানান রাজনৈতিকভাবে তার ‘পাল্টা’ প্রতিবাদ করার পথও খোলা থাকছে শাসকদলের সামনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy