নির্ধারিত সময়ে হলফনামা দিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করবে রাজ্য। ফাইল চিত্র।
ডিএ নিয়ে আদালত অবমাননা মামলার শুনানির আগে রাজ্য কি আদৌ যাবে সুপ্রিম কোর্টে — সেই আলোচনা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে প্রশাসনের অন্দরে। অনেকের মতে, এখনই এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশ কমছে। বরং কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে নির্ধারিত সময়ে হলফনামা জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে প্রশাসনের শীর্ষমহলে।
তিন মাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেওয়া নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের রায়ের সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে অনেক দিনই। তাই, সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেছে কর্মচারী সংগঠনগুলি। সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, ৯ নভেম্বর সেই মামলার শুনানি রয়েছে। তার আগে ৪ নভেম্বর, শুক্রবারের মধ্যে রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিবকে হলফনামা দিয়ে ডিএ মেটানো নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানানোর কথা হাই কোর্টে। মঙ্গলবার পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও তথ্য পায়নি কর্মচারী সংগঠনগুলি। ফলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তবে কি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চাইছে রাজ্য!
প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, নির্দেশ মেনে নির্ধারিত সময়ে হলফনামা দিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করবে রাজ্য। আইনজীবীদের মতে, শুক্রবারের মধ্যে হলফনামা দেওয়া এড়াতে হলে আরও আগে সুপ্রিম কোর্টে যেতে হত রাজ্যকে। বৃহস্পতিবারেও যদি এই রাজ্য শীর্ষ আদালতে যায়, তা হলেও এত অল্প সময়ের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ আনা কার্যত অসম্ভব। আবার ৯ নভেম্বর সম্ভাব্য শুনানির আগে হলফনামা জমা না দেওয়ার ‘ঝুঁকি’ও হয়ত নেবে না রাজ্য।
রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় আগে থেকেই সর্বোচ্চ আদালতে ক্যাভিয়েট দাখিল করে রেখেছে কর্মচারী সংগঠনগুলি। আর্থিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ডিএ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার সুপ্রিম কোর্টে গেলেও তেমন লাভ হবে না। কারণ, যে কারণে কলকাতা হাই কোর্ট কর্মচারীদের ডিএ মিটিয়ে দিতে বলেছে, তা সুপ্রিম কোর্টে বদলে যাওয়া মুশকিল। বাম সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, কেন্দ্রীয় হারেই ডিএ দেবে সরকার। এমনকি, সেই সিদ্ধান্ত রোপা-তে নথিবদ্ধও রয়েছে। তাই সুপ্রিম কোর্টে গেলে মুখ পুড়তে পারে সরকারের। প্রসঙ্গত, গত মার্চে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা এবং সরবরাহ সংস্থার কর্মী-ইঞ্জিনিয়ারদের কেন্দ্রীয় সরকারের হারেই ডিএ দেওয়ার ক্ষেত্রে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ বহাল রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট।
কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়ের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘২০ মে আদালত বলেছিল তিন মাসের মধ্যে ডিএ দিতে হবে। ২২ সেপ্টেম্বর পুনর্বিবেচনার আর্জিও খারিজ করেছিল আদালত। তার পরেও এতদিন পর্যন্ত সরকারের কাছে ডিএ দেওয়ার সুযোগ ছিল। ৪ তারিখ মুখ্যসচিব-অর্থসচিব হলফনামা দিলে আমাদেরও বক্তব্য জানাতে হবে আদালতকে।’’ রাজ্য কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ শীলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘৯ তারিখ শুনানির আগে সুপ্রিম কোর্টে সরকার যাবে না, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। যাই হোক, আমরা তৈরি রয়েছি।’’
তৃণমূল প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের প্রবীণ নেতা মনোজ চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘সরকারি কর্মচারীরা উন্নয়নের এত বিপুল কাজ কার্যকর করছেন। আকাশছোঁয়া বাজারদরে তাঁরাই কার্যত অবহেলিত থাকছেন ডিএ না পেয়ে। সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব এবং কর্তব্য এ নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy