Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
E-Library

E-Library: করোনায় অযত্ন বইয়ের, ভাবনা ই-গ্রন্থাগারের

সুদীর্ঘ লকডাউনে সরকার পোষিত গ্রন্থাগারগুলিও তো বন্ধ। বিপুল সংখ্যক বইয়ের পাতা ওল্টানো হয়নি।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২১ ০৬:৪৫
Share: Save:

স্কুল, কলেজ-সহ নানা প্রতিষ্ঠানের মতো গ্রন্থাগারগুলিও অতিমারির দাপটে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ। কেমন আছে বইয়েরা? তাদের অনেকেই কি উইপোকার পেটে গেল? বর্ষার ঝড়জলে আলমারি ভিজে কি নষ্ট হল সারি সারি বই?

আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না পুস্তকপ্রেমীরা। সুদীর্ঘ লকডাউনে সরকার পোষিত গ্রন্থাগারগুলিও তো বন্ধ। বিপুল সংখ্যক বইয়ের পাতা ওল্টানো হয়নি। যথাযথ সংরক্ষণ ও পরিচর্চার অভাবে সেই হাজার হাজার বই ক্ষতিগ্রস্ত হল কি না, এ বার তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিলেন রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। তিনি জানান, এ বার থেকে পনেরো দিন অন্তর গ্রন্থাগারগুলি দেখভাল করতে বলা হয়েছে কর্মীদের। সেই সঙ্গে রাজ্যের সব গ্রন্থাগারকে কী ভাবে দ্রুত ই-লাইব্রেরিতে পরিবর্তন করা যায়, সেই বিষয়েও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।

মাঝখানে করোনার দাপট কিছুটা স্তিমিত হওয়ায় কিছু কিছু গ্রন্থাগার খোলা হয়েছিল। কিন্তু ফের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত ২২ এপ্রিল ফের সব বন্ধ হয়ে যায়। এমনিতেই গ্রন্থাগারে গিয়ে পড়াশোনা করেন, এমন পাঠকের সংখ্যা আগের থেকে অনেক কমেছে। তার উপরে বিভিন্ন গ্রন্থাগারে রয়েছে কর্মীর অভাব। সব মিলিয়ে রক্ষণাবেক্ষণে খামতি চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। ফলে কখনও বইয়ে উই ধরে, কখনও বা বইয়ের কাঠের তাকে ঘুণ লেগে বই নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছিল। করোনাকালে বন্ধ গ্রন্থাগারে বইয়ের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে পড়েছে। গ্রন্থাগারের কর্মীদের বক্তব্য, শুধু যে দীর্ঘ সময় গ্রন্থাগার বন্ধ, তা নয়। সেই সঙ্গে রয়েছে ঝড়বৃষ্টিও। যে-সব গ্রন্থাগার ভবনের রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা ভাল নয়, সেখানে আলমারি ভিজে বই নষ্ট হওয়ারও আশঙ্কা প্রবল।

পুরুলিয়ার কোটশিলা লেনিন গ্রন্থাগারের গ্রন্থাগারিক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, “লেনিন গ্রন্থাগার বাদেও জয়পুর ব্লকের ঋষি অরবিন্দ পাঠাগারেরও দায়িত্বে আছি। আমার মতো অনেকেই একসঙ্গে দু’টি গ্রন্থাগার দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন। এই করোনাকালে নিয়মিত যানবাহন চলছে না। এই পরিস্থিতিতে দু’টি গ্রন্থাগারের ঠিকমতো দেখভাল করা কি সম্ভব? যথাযথ পরিচর্চার জন্য আগে দরকার কর্মী নিয়োগ।”

গ্রন্থাগার দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে, ফেব্রুয়ারিতে গ্রামীণ গ্রন্থাগারগুলিতে ৭৩৮টি পদে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল। কিন্তু এখনও নিয়োগ হয়নি বলে অভিযোগ। “সরকারের ই-লাইব্রেরি করার পরিকল্পনা অনেক দিনের। সেই পরিকল্পনা তখনই বাস্তবায়িত হবে, যখন গ্রন্থাগারগুলিতে পর্যাপ্ত কর্মী নিয়োগ করা যাবে। অর্থ দফতরের মঞ্জুরি মেলার পরেও এখনও কেন গ্রন্থাগারগুলিতে পদ পূরণ হল না, বুঝতে পারছি না। কর্মী নিয়োগ হলে করোনার মধ্যেও গ্রন্থাগারের বইয়ের পরিচর্যা ঠিকঠাক হত। এত জীর্ণ দশা হত না,” বলেন জনসাধারণের গ্রন্থাগার ও কর্মী কল্যাণ সমিতির প্রধান উপদেষ্টা মনোজ চক্রবর্তী। গ্রন্থাগারমন্ত্রীর আশ্বাস, “বিভিন্ন গ্রন্থাগারে দ্রুত কর্মী নিয়োগ করা হবে। ১৯ জুলাই জেলার লাইব্রেরি অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক আছে। সেখানে অনেক বিশেষজ্ঞও থাকবেন। আগামী দিনে রাজ্যের গ্রন্থাগারগুলি কী ভাবে চলবে, তার রূপরেখা সেই বৈঠকেই নির্ধারণ করার কথা।”

অন্য বিষয়গুলি:

Siddiqullah Chowdhury Books Pandemic E-Library
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy