—নিজস্ব চিত্র।
নবান্ন অভিযানের প্রথম রাউন্ডে বাজিমাত করেছিল বামেরা। দ্বিতীয় রাউন্ডে ছাপ ফেলল প্রদেশ কংগ্রেস। মঙ্গলবার তাদের নবান্ন অভিযানের মুখ ঘুরিয়ে রাজপথ অবরোধের কৌশল নিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। ফলে বামেদের মতো আগ্রাসী না হলেও শান্তিপূর্ণ অথচ কৌশলী অবরোধে প্রদেশ কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের চাঙ্গা করতে যথেষ্ট সফল রাজ্য নেতৃত্ব।
সবংয়ে কলেজ চত্বরে ছাত্রহত্যা, কেতুগ্রামে সংখ্যালঘু ছাত্রী খুনের ঘটনা ও সর্বোপরি রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং সন্ত্রাসের প্রতিবাদ জানাতে এ দিন নবান্ন অভিযানের ঘোষণা আগেই করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী। সেখানে ডিজি-র দফতরে দাবিপত্র পেশের কর্মসূচি ছিল দলের। কিন্তু, ডিজি শহরের বাইরে এবং তাঁর কোনও প্রতিনিধি ওই দাবিপত্র নিতে পারবেন না বলে আগেই জানানো হয়েছিল। ফলে রাজ্য সরকারের তরফে কৌশলে এই অভিযান ভোঁতা করে দেওয়ার একটা প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু, এ্রর পাল্টা হিসাবে কৌশলী চাল খেললেন অধীরও। এ দিন দুপুর হাওড়া স্টেশন, সাঁতরাগাছি ও রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে দলীয় নেতা-কর্মী-সমর্থকদের জমায়েতের কথা ছিল। সেইমতো জমায়েত শুরুও হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, আবু হাশেম খান চৌধুরী, মৌসম বেনজির নূর এবং প্রদীপ ভট্টাচার্য-সহ বহু হাই-প্রোফাইল নেতা। রানি রাসমণি রোডে ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড-সহ জলকামান, কাঁদানে গ্যাস নিয়ে তৈরি ছিল পুলিশও। কিন্তু, দুপুর আড়াইটে নাগাদ রানি রাসমণি রোডের অস্থায়ী মঞ্চ থেকে অধীর হঠাৎই ঘোষণা করেন, “চলো, রাজপথ অবরোধ করি। আমরা তো আর মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার দখল করতে যাচ্ছি না।”
এই কৌশলে পরাস্ত হল পুলিশও। অধীরের নেতৃত্বে দলীয় নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা ডোরিনা ক্রসিং থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ দিয়ে জওহরলাল নেহরু রোডের দিকে এগোলেন। মধ্য কলকাতার এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় আচমকা অবরোধের ফলে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় শহরের যানচলাচল ব্যবস্থা। চৌরঙ্গির দু’টি লেন বন্ধ হয়ে যায় দলীয় সমর্থকেদের ভিড়ে। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
কংগ্রেসের নবান্ন অভিযানে ভোগান্তি শহরবাসীর
তবে অবরোধ চললেও কর্মীদের কাছে তা শান্তিপূর্ণ রাখার আবেদন জানান অধীর। তিনি বলেন, “কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না। হিংসাত্মক ঘটনা ঘটাবেন না।” তাঁর কথা রেখেছেন দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা। শান্তিপূর্ণ ভাবেই অবস্থান-বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। এরই মাঝে অবরোধকারীরা ‘রাবণী’ নামে কুশপুত্তলিকাও দাহ করেন।
এ দিনের কর্মসূচিকে সফল বলেই দাবি করছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। অবরোধের মাঝেই মৌসম বেনজির নূরের দাবি, “এ দিনের অবরোধে কংগ্রেসের ঐক্যবদ্ধ চেহারা চোখে পড়েছে।” অন্য দিকে, প্রদীপ ভট্টাচার্যের কথায়, “অবরোধ কর্মসূচি নেওয়া ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। আমাদের তো নবান্নে যেতে দেওয়া হল না।” একই সঙ্গে তাঁর দাবি, “পুলিশের কোনও কর্তা এখানে এসে স্মারকলিপি না নেওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে।” শেষ পর্যন্ত পুলিশের এসিপি আর শিবকুমার ধর্মতলায় ডোরিনা ক্রসিংয়ে অবরোধকারীদের থেকে স্মারকলিপি নেন। এর পর অবরোধ সরিয়ে নেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy