মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নতুন আলু বাজারে আসার আগে পর্যন্ত ভিন্রাজ্যে আলু রফতানি না করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার বিকেলে তা নিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের উপর দৃশ্যত ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। কেন তাঁকে না জানিয়ে আলু রফতানি করা হয়েছে? নজরদারি কোথায় ছিল? তা নিয়ে উষ্মাও প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “সব আলু বেরিয়ে গিয়েছে। মাথায় রেখো। আজ আলুর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।”
সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আলুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা পর্যালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তখনই মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আসে ভিন্রাজ্যে আলু রফতানির বিষয়টি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল, বাজারে নতুন আলু ওঠার আগে পর্যন্ত রাজ্যে যাতে পর্যাপ্ত আলু মজুত থাকে। কিন্তু বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁকে এক প্রকার অন্ধকারে রেখেই ভিন্রাজ্যে আলু রফতানি হয়েছে। আর এই পরিস্থিতির জন্যই আলুর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি।
রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্নাকে পরিস্থিতির উপর নজর রাখার নির্দেশ দেন মমতা। তাঁকে কৃষি বিপণন দফতরের চেয়ারম্যান পদে বসান। রাজ্যে কোন জেলায় কী পরিস্থিতি রয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য নির্দিষ্ট সময় অন্তর মুখ্যমন্ত্রীকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোথায় কত আলু মজুত ছিল, কত আলু বেরিয়েছে এবং কত মজুত রয়েছে— সে বিষয়ে তথ্য চান মমতা।
রাজ্যের আলু চাষিদের একাংশের উপরেও প্রথমে দৃশ্যত অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী। যদিও পরে মমতা জানান, চাষিদের ‘দোষ’ নয়। কিছু মধ্যসত্ত্বভোগী এই কাজ করেন। তাঁর বক্তব্য, রাজ্যের প্রয়োজন মিটিয়ে ভিন্রাজ্যে আলু বিক্রি করা হলে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু বাংলায় আলুর দাম বৃদ্ধি করে অন্য জায়গা থেকে মুনাফা অর্জন নিয়ে আপত্তি রয়েছে মমতার। তাঁর কথায়, “বাংলায় মূল্য বৃদ্ধি করে অন্য জায়গা থেকে মুনাফা করা হবে এবং রাজ্য সরকার আলু চাষিদের জন্য বিমা করবে— দু’টি একসঙ্গে চলতে পারে না।”
অন্য রাজ্যে আলুর দামের সঙ্গে বাংলায় আলুর দামের তুলনাও টানতে চান না মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, আলুর দাম এক এক রাজ্যে এক এক রকম হতেই পারে। অন্য রাজ্যে আলুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে এ রাজ্যেও আলুর দাম বৃদ্ধি পাবে তার কোনও মানে নেই। তিনি বলেন, “অন্য রাজ্যে আলু সরবরাহ করে নিজের রাজ্যে দাম বৃদ্ধি হবে— এই যুক্তির মানে হয় না।” রাজ্যের চাহিদা পূরণ হওয়ার পরই ভিন্রাজ্যে আলু পাঠানোর পক্ষপাতী মুখ্যমন্ত্রী। আন্তঃরাজ্য সীমানা দিয়ে আলু ভিন্রাজ্যে যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে নির্দেশ দেন তিনি।
শুধু আলুই নয়, পেঁয়াজ রফতানি নিয়েও উষ্মাপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলা এখনও পেঁয়াজে ‘স্বনির্ভর’ নয়। ভিন্রাজ্য থেকে এখনও পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে রাজ্যে পেঁয়াজ চাষ আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেও কেন অর্ধেক ভিন্রাজ্যে রফতানি হয়ে যাবে? তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা। টাস্ক ফোর্সকে নজরদারি আরও বৃদ্ধি করার নির্দেশ দেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy