কী বলবে প্রচারে? — ফাইল চিত্র।
গত বিধানসভা নির্বাচনের ফল পর্যালোচনা করে দেখা গিয়েছিল, রাজ্যের মহিলা ভোট অনেকটাই সাফল্য দিয়েছে তৃণমূলকে। কালীঘাটের ‘অগ্নিকন্যা’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই মহিলাদের কাছে শ্রদ্ধা, ভালবাসা পেয়ে এসেছেন। আগেই কন্যাশ্রী প্রকল্প ছিল, তৃতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে রাজ্যে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্প এনে সাড়া ফেলে দেন। এ বার সেই মহিলা ভোটে ভাগ বসাতে মরিয়া বিজেপি। প্রতিটি লোকসভা আসনে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের মহিলাদের জন্য প্রকল্পের প্রচারের পাশাপাশি রাজ্যের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের ত্রুটির প্রচারও করা হবে বলে সিদ্ধান্ত রাজ্য বিজেপি মহিলা মোর্চার।
শুধু বাংলা নয়, গোটা দেশেই লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। তারই অঙ্গ হিসাবে ‘কমল মিত্রা’ কর্মসূচি শুরু হতে চলেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় দিল্লি থেকে সেই কর্মসূচির সূচনা করবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। রাজ্য বিজেপি মহিলা মোর্চার প্রতিনিধিরা দলের সল্টলেক সেক্টর ফাইভের নতুন দফতর থেকে সেই কর্মসূচিতে যোগ দেবে। এ দিন কর্মসূচির সূচনা হয়ে গেলেও এখনই বিজেপি প্রচারে নামবে না। প্রথমে প্রতি লোকসভা আসনে ২০০ জন মহিলার দল বানাতে হবে। এই মহিলাদের নাম হবে ‘কমল মিত্রা’। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে প্রশিক্ষণ। এর পরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলবেন তাঁরা।
‘কমল মিত্রা’রা মোদী সরকারের উজ্জ্বলা ও সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা নিয়ে যেমন কথা বলবেন, তেমনই মহিলাদের জানাবেন বাড়িতে শৌচাগার এবং আবাস যোজনার কথা। সেই সঙ্গে কেন্দ্রের মাতৃ বন্দনা যোজনারও প্রচার হবে। যার মাধ্যমে কমপক্ষে ১৯ বছরের মহিলাদের প্রথম সন্তানের জন্মের সময়ে তিন কিস্তিতে পাঁচ হাজার টাকা দেয় কেন্দ্র। এমন মোট ১৫টি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প নিয়ে প্রচারের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ ছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যের জন্য বিশেষ কিছু জুড়ে নেওয়ার ছাড় দিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
২০২১ সালের ২ মে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়। আর চার মাসের মাথায় ১ সেপ্টেম্বর থেকে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্প চালু করেন মমতা। যার মাধ্যমে বিবাহিত মহিলাদের মাসে ৫০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়। তফসিলি জাতি, জনজাতির ক্ষেত্রে অঙ্কটা ১০০০ টাকা। বিজেপি মনে করছে, আগামী পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে এই প্রকল্পের জন্য বাড়তি সুবিধা পাবে তৃণমূল। তাই ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ নিয়ে বাড়তি প্রচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র বলেন, ‘‘মোদীজির যত প্রকল্প রয়েছে তাতেই মহিলাদের টানা যাবে। লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা দিয়ে দুর্নীতিকে চাপা দেওয়া যায় না। তবে আমরা মহিলাদের এটাও বোঝাব যে, রোজগারের সুযোগ না করে দিয়ে ৫০০ টাকা দিয়ে ভোট কেনা হচ্ছে। আর এই টাকা আসছে মদ বিক্রি করে। যার জন্য অনেক সংসার ভাঙছে, অশান্তি হচ্ছে। সন্তানকে মদ বিক্রি করা আয়ে মাকে টাকা দেওয়া হচ্ছে।’’
বিজেপির এই পরিকল্পনাকে অবশ্য গুরুত্বই দিতে চাইছে না তৃণমূল। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘বিজেপি মহিলাদের যে দল বানাবে, অত মহিলা রয়েছে কি ওদের সঙ্গে! আমাদের মুখ্যমন্ত্রী একাই একশো। তার সঙ্গে রয়েছে বিশাল নারী বাহিনী। তাই ও সব প্রচারে কোনও কাজ হবে না। আর লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে কাউকে কিছু বলতে গেলে তাড়া খেতে হবে।’’ প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনে মহিলা ভোটের দখল রাখতে ইতিমধ্যেই সক্রিয় তৃণমূল। বুথভিত্তিক ‘চলো গ্রামে যাই’ কর্মসূচি চালু করেছে দলের মহিলা শাখা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy