শাস্ত্র মেনে পুজোর উদ্যোগ নিতে চায় বিজেপি। প্রতীকী চিত্র
শ্রাবণ মানে বাবার মাস। বাঙালি এই মাসে তারকেশ্বরে শিবের মাথায় জল ঢালতে যায়। সেই বাবার মাসেই কালী মায়ের আরাধনা করতে চলেছে রাজ্য বিজেপি। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের কালীপুজোর উপচার সংক্রান্ত ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যের প্রতিবাদেই কলকাতায় আগামী ২৮ জুলাই, বৃহস্পতিবার শ্রাবণের অমাবস্যায় ধুমধাম করে কালীপুজোর আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে গেরুয়া শিবির। সেই পুজো ঘিরে রাজ্যের সর্বত্র প্রচারের লক্ষ্যে জেলায় জেলায় মুষ্টিভিক্ষার কর্মসূচিও নিতে চলেছে বিজেপি।
বাংলায় কালীপুজো মূলত হয় দুর্গাপুজোর পর কার্তিক মাসের অমাবস্যায়। তবে শ্রাবণের অমাবস্যায় কালীপুজো করায় শাস্ত্রে কোনও বাধা নেই। বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘কার্তিক মাসের অমাবস্যায় হয় দীপান্বিতা কালীপুজো। সে ছাড়া ফলহারিণী বা রটন্তী কালীপুজোর চলও রয়েছে। মলমাস ছাড়া যে কোনও অমাবস্যাতেই দেবী কালীর আরাধনা করা যায়। এ ছাড়াও শনি বা মঙ্গলবারেও কালীপুজোর চল রয়েছে।’’
মহুয়ার কালী সংক্রান্ত মন্তব্যের পর তৃণমূল সাংসদকে গ্রেফতারের দাবিতে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় এফআইআর করেছিল বিজেপি। তবে বিষয়টিকে আন্দোলনের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেনি তারা। তৃণমূল মহুয়ার বক্তব্যের সঙ্গে ঘোষিত ভাবে দূরত্ব তৈরি করে ফেলায় সে ভাবে রাজনৈতিক সুবিধাও নিতে পারেনি গেরুয়া শিবির। এখন ওই প্রসঙ্গকে নতুন করে রাজনীতির আলোচ্য করে তুলতে কেন্দ্রীয় বিজেপির তরফেই রাজ্যকে পুজোর আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
জেলায় জেলায় কালীপুজোর আয়োজনও চান বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজ্য নেতৃত্ব ঠিক করেছেন, মহিলা মোর্চা কালীপুজো আয়োজনের দায়িত্ব সামলাবে। মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী তনুজা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা এমন ভাবনাচিন্তা শুরু করেছি। কলকাতায় খুব তাড়াতাড়ি পুজো হবে। এর পর জেলায় জেলায় একই ভাবে মায়ের আরাধনা করা যায় কি না, তা-ও ভাবা হবে। খুব তাড়াতাড়ি বিস্তারিত ঘোষণা হবে।’’
এখনই জেলায় জেলায় কালীপুজোর আয়োজন করতে না পারলেও কলকাতার পুজো ঘিরে রাজ্য জুড়ে প্রচারের পরিকল্পনা রয়েছে বিজেপির। দল ঠিক করেছে, মহিলা মোর্চার প্রতিনিধিরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মুষ্টিভিক্ষা হিসাবে চাল, ডাল সংগ্রহ করবেন। সেই চাল, ডাল দিয়েই কলকাতার পুজোয় দেবীর ভোগের আয়োজন করা হবে। তবে কলকাতার কোথায় পুজো হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। রাজ্য বিজেপির পক্ষে ইদানীং বিধাননগরের পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে (ইজেডসিসি) দলের পক্ষে দুর্গাপুজো চালু করা হয়েছে। কালীপুজোও সেখানে হতে পারে। আবার হেস্টিংস বা মুরলীধর সেন লেনের দলীয় দফতরেও হতে পারে পুজোর আয়োজন।
বাংলায় কালীপুজো নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার দুপুরে উপরাষ্ট্রপতি পদে জগদীপ ধনখড় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী তাঁকে নিয়ে হেঁটে আসছিলেন সংসদ ভবনের করিডর দিয়ে। উল্টো দিক থেকে আসছিলেন বিজেপির হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। রাজনৈতিক সূত্রে খবর, মুখোমুখি হতেই মোদী তাঁকে বলেন, ‘‘বাংলায় মা কালীর পুজো ঠিকমতো হচ্ছে তো?’’ জবাবে লকেট বলেন, ‘‘ঠিকমতোই কালীর অর্চনা হচ্ছে।’’
রাজ্যে মহিলা মোর্চার আয়োজনে হতে চলা কালীপুজোর প্রস্তুতি নিয়েই মোদী-লকেটের কথা হয়েছে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, কালীপুজোর আয়োজন যাতে শাস্ত্রসম্মত হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পুজোর আয়োজনে বিশিষ্ট শাস্ত্রজ্ঞ ও পুরোহিতদের সঙ্গেও আলোচনা করা হচ্ছে বলে মহিলা মোর্চা সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy