চায়ে চুমুক দিচ্ছেন খড়দহ বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বুথ ঘুরে দেখছেন বিজেপি প্রার্থী জয় সাহা। (ডান দিকে) ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
শনিবার সকাল ১১টা। রহড়া বাজারে নির্বাচনী কার্যালয়ে বসে, লিকার চায়ের কাপে চুমুক দেওয়ার ফাঁকে এলাকার খোঁজ নিচ্ছিলেন জোড়া ফুলের প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বিলাকান্দা, মহিষপোতা, তেঘরিয়া-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় তখন চরকি পাক খাচ্ছেন পদ্ম শিবিরের জয় সাহা।
নির্বাচনের দিন এমন ভাবে কার্যালয়ে বসে থাকা কেন? টেনশন হয় না? প্রশ্নটা করতেই হেসে ফেললেন আট বার বিধানসভা ভোটে জিতে আসা শোভনদেব। বললেন, “এটা নবম বিধানসভা নির্বাচন লড়ছি। কত বার এজেন্টও হয়েছি। তাই এখন এ সব টেনশন হয় না। আর হলেও সেটার বহিঃপ্রকাশ করি না। তবে খড়দহে আমি জিতব।” শনিবার সকালে মুড়ি-দই খেয়ে কল্যাণনগর-সহ কয়েকটি জায়গার ভোটকেন্দ্র ঘুরে পৌনে ৯টা নাগাদ সোজা রহড়ার ‘ওয়ার রুমে’ চলে এসেছিলেন শোভনদেব। ভাত-মোচা-পাবদা মাছ দিয়ে মধ্যাহ্নভোজন সেরে ভোট শেষ হওয়া পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন তিনি। ‘আপনি বেরোলেন না কেন?’ তাঁর যুক্তি, বেরোলেই ভিড় বাড়বে।
এ দিন অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ ছাড়া বড় কোনও ঘটনা ঘটেনি খড়দহ উপনির্বাচনে। সকালে জুগবেড়িয়া এলাকায় গেলে তাঁকে ঘিরে তৃণমূল কর্মীরা গো-ব্যাক স্লোগান দেন বলে অভিযোগ করেন জয়। “দলীয় প্রতীক লাগানো গাড়ি নিয়ে এলাকায় ঘুরে উনি ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। তাই কর্মীরা প্রতিবাদ করেছেন,” পাল্টা জবাব শোভনদেবের। আবার তিনি অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে। কারণ, টিকার দু’টি ডোজ়ের শংসাপত্র না থাকলে ভোটারদের কল্যাণনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেন জওয়ানেরা। শোভনদেবকেও প্রথমে বাধা দেওয়া হয়। পরে অবশ্য দুই সমস্যারই সমাধান হয়। তবে সকাল ১০টা নাগাদ উত্তর দমদমের প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যকে খড়দহ রেল গেটের কাছে কেউ বা কারা পিছন থেকে ইট ছুড়ে আহত করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। ঘাড়ে আঘাত পান তন্ময়।
শোভনদেব বলেন, “বিরোধী দলের কাউকে কোনও বাধা যাতে না দেওয়া হয়, তার জন্য কর্মীদের কড়া নির্দেশ দেওয়া ছিল। যে-ই মেরে থাকুক, অন্যায় করেছে। তবে তন্ময়বাবু কেন এলাকায় ঘুরছিলেন জানি না।” শোভনদেবের ছেলে সায়নদেব কেন খড়দহে রয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন জয়ও। এক বার এলাকায় বেরনোর কিছু ক্ষণ পরেই রহড়ার ‘ওয়ার রুমে’ ফিরে গিয়েছেন সায়নও।
গত বিধানসভা ভোটে খড়দহের তৃণমূল প্রার্থী কাজল সিংহের ‘ওয়ার রুম’ সামলে ছিলেন ভাইপো রাজদীপ। এ দিন সেই ভূমিকাতেই দেখা গেল তাঁকে। করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে শুয়েই ভোটের খবরাখবর নিয়েছিলেন কাজল। ২৮ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হলেও তা জানতে পারেননি। আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। সেই সব দিনের কথা এ দিন খুব মনে পড়ছে বলে জানালেন কাজলের স্ত্রী নন্দিতা। আর শোভনদেবের কথায়, “কাজল স্থানীয় ছেলে। তাঁর স্মৃতি তো থাকবেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy