Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus

করোনা-আতঙ্ক: ট্রেন-বাস-মেট্রোতে যাতায়াত কতটা নিরাপদ?

নোভেল করোনাভাইরাসে এ দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ইতিমধ্যে দু’জনের মৃত্যুও হয়েছে। সে কারণে সচেতনতায় জোর দিয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য।

সংক্রমণ ঠেকাতে বাসে জীবাণুনাশক ব্যবহার। নিজস্ব চিত্র

সংক্রমণ ঠেকাতে বাসে জীবাণুনাশক ব্যবহার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২০ ১৮:০২
Share: Save:

নোভেল করোনাভাইরাসে এ দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ইতিমধ্যে দু’জনের মৃত্যুও হয়েছে। সে কারণে সচেতনতায় জোর দিয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য। জনবহুল এলাকা, বিশেষ করে যেখানে বহু মানুষ এক সঙ্গে সমবেত হয়, এমন স্থান এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। ফুটবল-ক্রিকেট-টেনিস এর মতো প্রতিযোগিতামূলক খেলাধূলাও স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্ত বাস-ট্রাম-মেট্রো-রেলের ভিড় এড়িয়ে কি দৈনন্দিন জীবনে চলা সম্ভব? গণ পরিবহণের ক্ষেত্রে কতটা প্রস্তুত রাজ্য সরকার? কেন্দ্রর তরফেও বা কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? পরিস্থিতি খতিয়ে দেখল আনন্দবাজার।

করোনাআতঙ্কে বাস-যাত্রা

রোজকার জীবনে সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশ সরকারি এবং বেসরকারি বাসের উপর নির্ভরশীল। তাই বাস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার উপর জোর দিচ্ছে রাজ্য। পরিবহণ দফতরের দাওয়াই, ডিপো থেকে বাস ছাড়ার আগে জীবানুনাশক স্প্রে করতে হবে। কলকাতার পাশাপাশি রাজ্যের অন্যান্য জেলায় বাস পরিষেবার ক্ষেত্রে একই রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বাস এবং কনডাক্টরদের দেওয়া হচ্ছে মাস্ক। শনিবার রাজ্য পরিবহণ নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজেনবীর সিংহ কপূর বলেন, “আমরা সব রকমের ব্যবস্থা নিচ্ছি। বাসে জীবানুনাশক স্প্রে করা শুরু হয়েছে।”

যাত্রীরা কী বলছেন?

টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশনে কাছে মুখে মাক্স পড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন বছর পঞ্চাশের এক যাত্রী। তিনি বলেন, “সতর্ক তো থাকতেই হবে। সে জন্যেই মাস্ক পড়েছি। খুবই আতঙ্কে রয়েছি।” বেহালাগামী একটি বাসের এক যুবক যাত্রী বলেন, “করোনা-আতঙ্ক গোটা দেশে ছড়িয়েছে। চিন্তা তো হওয়ারই কথা। তবে, রাজ্য সরকারকে আরও ব্যবস্থা নিতে হবে।”

ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাস পরিষেবা।

ট্রেন-মেট্রোতে সচেতনতায় জোর

বাস-মিনিবাসের মতো মেট্রোও এখন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরিবহণ মাধ্যম। প্রতি দিন গড়ে ছয় থেকে সাত লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন কলকাতা মেট্রোতে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রথম পর্যায়ের পরিষেবাও চালু হয়েছে। প্রচুর মানুষ মেট্রোয় সফর করেন। ফলে, সেখানে সংস্পর্শ এড়ানোটা কার্যত অসম্ভব। সে কারণে করোনাভাইরাসে মোকাবিলায় কী করণীয় তার প্রচার শুরু করেছে মেট্রো। রেলপথেও বিভিন্ন স্টেশনে পোস্টার লাগানো হয়েছে। লোকাল বা দূরপাল্লা— ট্রেনের কামরা জীবাণুমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে বলে রেল মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, “আমরা করোনা মোকাবিলায় প্রচার চালাচ্ছি। যে হেতু প্রচুর মানুষের ভিড় থাকে ট্রেনগুলিতে, তাই এই প্রচার আরও জরুরি।”

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় ওই রুটের সব ট্রেনের এসি কামরায় কাপড়ের পর্দা থাকবে না। এ ছাড়া কম্বল-চাদর দেওয়া হবে না রেল মন্ত্রক থেকে নির্দেশ না আসা পর্যন্ত। এর পাশাপাশি এসি কামরাগুলিতে তাপমাত্রাও কিছুটা বাড়ানো হতে পারে। যদিও কোনও যাত্রী চাদর বা কম্বল চাইলে, প্রয়োজন বুঝে তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল।

মেট্রো স্টেশনে করোনা সচেতনতা পোস্টার। নিজস্ব চিত্র

কলকাতা-বাগডোগরা বিমানবন্দরে নজরদারি

কলকাতা বিমানবন্দরে ২৪ ঘণ্টাই দেশ-বিদেশের বহু বিমান ওঠানামা করে। উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দর এখন বাগডোগরাও। এই দু’টি বিমানবন্দরেই যাত্রীদের ‘থার্মাল স্ক্যানিং’ করা হচ্ছে। সন্দেহ হলেই যাত্রীর নাম-ধাম জানানো হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। প্রয়োজনে তাঁকে ‘হোম আইসোলেশন’ অথবা হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের শেষ তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ওই দু’টি বিমানবন্দরে ৬৮ হাজার ৭৬১ জনের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে।

জলপথে যোগাযোগের হালহকিকত

জলপথেও বহু মানুষ যাতায়াত করেন। জেটিগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। এর পাশাপাশি রাজ্যের তিনটি বন্দরে পণ্য ওঠানামা করে। বন্দর থেকে জেটি— সর্বত্রই বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পরিবহণ দফতরের নজরদারি সমান ভাবে চলছে। দেশ-বিদেশের পণ্যবাহী জাহাজ এ রাজ্যের ঢোকার আগেই বন্দর কর্তৃপক্ষ মেডিক্যাল টিম পাঠিয়ে সাগরের কাছে পরীক্ষা করাচ্ছেন। বিপন্মুক্ত হলে তবেই তাদের বন্দরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে বলে জানান কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার। বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য বলছে, এখনও পর্যন্ত ৮ হাজার ১৪৫ জনের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে।

জাহাজ কর্মীদের শারীরিক পরীক্ষা। নিজস্ব চিত্র

অন্য বিষয়গুলি:

WB Transport Departmentl Rai Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy