—প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হতেই এ যেন আর এক যুদ্ধ। সেখানেও রোজ পড়ছে দীর্ঘ লাইন। জমা পড়ছে বিপুল নথি। ব্লক দফতরে বসে গলদঘর্ম হচ্ছেন কর্মীরা। এই লড়াই ওবিসি বা অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির শংসাপত্র জোগাড় করা। সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী হতে লাগবে সেই শংসাপত্র। রোজকার এই দীর্ঘ লাইন দেখে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে যে তফসিলি জাতি ও ওবিসিদের শংসাপত্র দেওয়ার জন্য বাড়তি জোর দেওয়া হয়েছিল, তাতে লাভ কী হল?
এই ভিড় দেখা যাচ্ছে হাওড়ার ব্লক অফিসগুলিতে। জেলা প্রশাসনের দাবি, ‘দুয়ারে সরকারে’ সব আবেদনকারীকেই ওবিসি শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। যাঁদের চাকরি বা বৃত্তি প্রয়োজন, দুয়ারে সরকারে তাঁরাই মূলত আবেদন করেছিলেন। ভোটে প্রার্থী হতে পারেন, এমন লোকজন আগে আবেদন করেননি। তাই এই পরিস্থিতি। যদিও সংখ্যালঘু প্রধান পাঁচলার ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা ফরিদ মোল্লার দাবি, ‘‘দুয়ারে সরকারে আবেদন জমা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বেশিরভাগকেই সেই সময় শংসাপত্র দেওয়া হয়নি।’’ জেলাশাসক মুক্তা আর্য বলেন, ‘‘নির্বাচনে যাঁরা প্রার্থী হচ্ছেন, তাঁরা যদি শর্ত পূরণ করেন, তা হলে তাঁদের দ্রুত শংসাপত্র দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’
হাওড়ায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে মোট আসন ৩৫৪৩টি। এর মধ্যে সংখ্যালঘু প্রধান এলাকাগুলিতেই ওবিসি সংরক্ষিত আসন বেশি পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে। তাই ওবিসি সংরক্ষিত আসনগুলির বহু প্রার্থী হত্যে দিয়ে পড়ে আছেন ব্লক অফিসগুলিতে। প্রশাসন সূত্রের খবর, নির্দিষ্ট শর্ত মেনে আবেদনপত্র পূরণ করে জমা দিতে হয় সংশ্লিষ্ট ব্লক অফিসে। ব্লক থেকে সেই শর্তগুলির সত্যতা যাচাই করে পাঠানো হয় মহকুমাশাসকের অফিসে। শংসাপত্র সেখান থেকে দেওয়া হয় আবেদনকারীর হাতে। বিষয়টি বেশ সময়সাপেক্ষ। হাওড়ায় ১৪টি ব্লক, মহকুমাশাসকের দফতর দু’টি। প্রতিটি ব্লক থেকে গড়ে রোজ ৫-৬টি আবেদনপত্র যাচাই করে নিয়ে যেতে হচ্ছে মহকুমাশাসকের অফিসে।
একই ছবি পশ্চিম মেদিনীপুরেও। ভোট ঘোষণার পর থেকে জাতিগত শংসাপত্রের আবেদন জমার পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে ছ’টি ব্লক মেদিনীপুর মহকুমায়। সেখানে সাধারণ দিনে গড়ে ৭-১০টি আবেদন আসে। এখন আসছে দিনে গড়ে ২০-৩০টি। পুরোটাই ভোটের জন্য। আগে এই শংসাপত্র করাননি কেন? এক আবেদনকারী বলেন, ‘‘যদি জানতাম দল প্রার্থী করবে, তা হলে তো আগেই ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে আবেদন করতাম!’’ মেদিনীপুরে তৃণমূলের মনোনয়ন পর্বের তদারকি করছেন দলের জেলা চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক দীনেন রায়। তিনিও মানলেন, ‘‘দলের বেশ কয়েক জন জাতিগত শংসাপত্র চেয়ে আবেদন জমা করেছেন। ওঁদের কাছে জাতিগত শংসাপত্র ছিল না।’’
প্রতি বারই পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে এই দৃশ্য দেখা যায়। কিন্তু জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদেরই একাংশের বক্তব্য, ২০১৮ সালে ‘দুয়ারে সরকার’ ছিল না। এখন আছে। তার পরেও এই পরিস্থিতি কেন, সেই প্রশ্নই উঠছে বার বার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy