Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Moloy Ghatak

আমার কাছ থেকে ১৪ হাজার টাকা পেয়েছে সিবিআই, আর বাড়ির হিসেবও খুব পরিষ্কার: মন্ত্রী মলয়

কয়লা পাচার মামলার তদন্তে বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মলয়ের ডালহৌসির সরকারি আবাসন-সহ বেশ কয়েকটি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা।

মলয় ঘটক

মলয় ঘটক

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২০:৪৭
Share: Save:

প্রায় সাড়ে আট ঘণ্টা ধরে সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হওয়ার পরেই বুধবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। কয়লা পাচার মামলার তদন্তে বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মলয়ের ডালহৌসির সরকারি আবাসন-সহ বেশ কয়েকটি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। কিন্তু ওই তল্লাশি অভিযানে সিবিআই বিশেষ কিছু উদ্ধার করতে পারেনি বলেই জানালেন মলয়। তিনি জানান, ডালহৌসির বাড়িতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তল্লাশি চালিয়ে ১৪ হাজার টাকা পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। কিন্তু অর্থের পরিমাণ এতটাই নগণ্য যে, ওই টাকা ফিরিয়ে দেন তাঁরা। পাশাপাশিই মলয় জানান, যে ভাবে তাঁর একাধিক বাড়ির কথা সংবাদমাধ্যমে টেনে আনা হচ্ছে, তা সঠিক নয়। তারও হিসাব দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমায় কালিমালিপ্ত করতেই এ সব করা হচ্ছে।’’

বুধবার সকাল থেকেই আসানসোল এবং কলকাতায় মলয়ের পাঁচটি বাড়িতে তল্লাশি অভিযান শুরু করে সিবিআই। তল্লাশি চালানো হয় আলিপুর এলাকায় মন্ত্রীর এক ঘনিষ্ঠের বাড়িতেও। পরে রাজভবনের পাশে ডালহৌসি চত্বরে মন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে গিয়েও কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তা চলে প্রায় বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত। তার পরেই বাড়ি থেকে হাসিমুখে বেরিয়ে এসে মলয় বলেন, ‘‘বিচারাধীন বিষয়। কোনও মন্তব্য করব না।’’

তার কিছু ক্ষণ পরেই সরকারি আবাসনে ফিরে এসে সাংবাদিক বৈঠক করলেন মলয়। তিনি বলেন, ‘‘তল্লাশি চালিয়ে আমার কাছ থেকে ১৪ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। টাকার পরিমাণ এত নগণ্য দেখে তা গোয়েন্দারা বাজেয়াপ্ত করলেন না। মিডিয়াও প্রচার করছে মলয় ঘটকের ৬-৭টা বাড়ি!’’ এর পরেই বাড়ির তথ্য দিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি যেখানে বসে সাংবাদিক বৈঠক করছি, সেটা সরকারি বাড়ি। আসানসোলের বাড়িটা আমাদের পৈতৃক বাড়ি। সকলেই থাকেন সেখানে। লেক গার্ডেন্সের বাড়িটা বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। যে বাড়িতে আমাদের ছেলে থাকে, ৮৮ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে সেটি কেনা হয়েছিল। তার ২০ লক্ষ টাকা আমি বিধানসভার অ্যাকাউন্ট থেকে দিয়েছি। একটা টাকাও অন্যায়ের নয়। সব তথ্য-নথি রয়েছে।’’ মলয় জানান, সিম ফেরত দিয়ে তাঁর তিনটি ফোনই সিবিআই নিয়ে গিয়েছে।

তবে গোয়েন্দারা যে ভাবে তাঁর বাড়িতে হানা দিয়েছে, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মলয়। তিনি বলেন, ‘‘সকালে ঘুমোচ্ছিলাম। হঠাৎ ৮টার সময় ওরা এসে হাজির। ইডি আগে আমায় তলব করেছে। আমার কাছে যা কাগজপত্র চেয়েছে, সব দিয়েছি। কিন্ত আমার অদ্ভুত লাগল যে, সিবিআই আমায় ডাকল না। আমি আইনমন্ত্রী। আমার বাড়িতেও হাজার একটা আইনের বই আছে, ফাইল আছে। আমার মিটিং ছিল। আজ কোনও কাজই করতে পারলাম না।’’

সম্প্রতি কয়লা পাচার মামলায় অতি সক্রিয় হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। গত শুক্রবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। এর আগে এই মামলাতেই মলয়কে ইডি নোটিস পাঠিয়েছিল। আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ইডির তলব পেয়ে এক বার দিল্লিতেও গিয়েছেন। তবে অভিযোগ, তার পর ইডির একাধিক নোটিস পাওয়া সত্ত্বেও সাড়া দেননি মলয়। সে প্রসঙ্গে বুধবার মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাকে ডাকা হয়েছে আসানসোল পুরনিগমের ভোটের চার দিন আগে। ডাকা হয়েছে আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের সময়। ওই সময় আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। প্রত্যেকটা চিঠিতে আমি তদন্তকারী সংস্থাকে বলেছি, ভোটের ফল প্রকাশের পর ডাকুন। আমি যাব। আমায় রাজনৈতিক কারণে নিশানা করা হচ্ছে।’’

সূত্রের খবর, বুধবার সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের পরেই আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর মলয়কে দিল্লিতে তলব করেছে ইডি। তার প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, ‘‘নোটিস দেওয়া হলে আবার যাব আমি। আমি এজেন্সির সঙ্গে সহযোগিতা করছি। যা সাহায্য লাগে, করব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Moloy Ghatak
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE