জগদীপ ধনখড়— ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছিল বুধবার। তার ৭২ ঘন্টা পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শনিবার অমিত-ধনখড় বৈঠক। যে বৈঠক ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে জোরাল জল্পনার জন্ম হয়েছে। জল্পনা এই যে— রাজ্যপাল কি ‘দূত’ হিসাবে কোনও ‘বার্তা’ নিয়ে যাচ্ছেন? নইলে আচমকা তাঁর কেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার দরকার পড়বে? ঠিক যেমন আচমকা মমতা রাজভবনে চলে গিয়েছিলেন! রাজভবন সূত্রে অবশ্য এমন কোনও ‘বার্তা’র কথা নিছক ‘অমূলক কল্পনা’ বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বুধবারের সাক্ষাৎ নিয়ে রাজ্যপাল বা মমতা— কেউই বিশদে মুখ খোলেননি। উভয় তরফ থেকেই বিষয়টিকে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ বলে বর্ণনা করা হয়েছিল। তবে ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, এক ঘন্টার উপর যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালের সাক্ষাৎ হয়, তখন তার মধ্যে ‘সৌজন্য’ তো থাকেই। তার সঙ্গে আরও ‘অন্যকিছু’ও থাকতে পারে। মোদ্দা কথায়, কেউই ওই সাক্ষাৎকারকে নিছক ‘সৌজন্য সাক্ষাৎকার’ বলে মনে করছেন না। যেমন ‘দূত’ হিসাবে ‘বার্তা’ নিয়ে যাওয়ার কথা উড়িয়ে দিয়েছে রাজভবন এবং নবান্ন। বস্তুত, উভয় তরফই এখনও সৌজন্য সাক্ষাতের তত্ত্বই বজায় রেখেছে। ওয়াকিবহালদের বক্তব্য, বিষয়টি তেমনই থাকবে। প্রসঙ্গত, গত ৩০ অক্টোবর দিল্লি গিয়ে শাহের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন রাজ্যপাল। তারপর সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে নৈরাজ্য চলছে। সাংবিধানিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মুখে। সিনিয়র আইএএস-আইপিএস অফিসারেরা রাজনৈতিক কর্মীর মতো আচরণ করছেন।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, শুক্রবার নদিয়ায় কল্যাণীতে একটি সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে বক্তৃতার সময়েও রাজ্যপাল পুলিশকে ‘কাঠগড়ায়’ দাঁড় করিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘কেউ আদালতে বিচার চাইতে গেলেই পুলিশ তাঁর বাড়িতে সমন পাঠাচ্ছে! এটা পুলিশের কাজ নয়।’’
ঘটনাপ্রবাহ বলছে, মমতা-ধনখড়ের সম্পর্ক বরাবরই যথেষ্ট ‘মধুর’ থেকেছে। প্রায় পাঁচ মাস পর বুধবার সন্ধ্যায় রাজভবনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে গত ১৫ অগস্ট তাঁকে রাজভবনে দেখা গিয়েছিল। মাঝের সময়টুকুতে করোনায় মৃত্যু ‘আড়াল করা’ থেকে বিরোধীদের উপর ‘হামলার’ মতো নানা বিষয়ে রাজ্য সরকার এবং শাসকদলকে নিশানা করেছেন রাজ্যপাল। জবাবে তৃণমূলের তরফে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিজেপি-র হয়ে কাজ করার অভিযোগ তোলা হয়েছে। এমনকি, তৃণমূলের তরফে ধনখড়কে রাজ্যপালের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক ভাবে রাষ্ট্রপতি রামলাল কোবিন্দের কাছে লিখিত আর্জিও জানানো হয়েছে। কৌতূহল এ নিয়েও তৈরি হয়েছে যে, তাঁর দল যে সময়ে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ‘অল-আউট’ রাজনৈতিক আক্রমণে যাচ্ছে, তখন মুখ্যমন্ত্রী কেন রাজভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যাবেন ধনখড়ের সঙ্গে। তবে ঘটনাচক্রে, মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপাল সৌজন্য সাক্ষাতের পর থেকে তৃণমূল রাজ্যপালের বিরুদ্ধে দৈনিক গোলাগুলি ছোড়া বন্ধ রেখেছে।
আরও পড়ুন: আদালতে গেলেই বাড়িতে পুলিশি সমন, কল্যাণীতে অভিযোগ রাজ্যপালের
প্রসঙ্গত, বুধবার মুখ্যমন্ত্রী রাজভবন থেকে বেরনোর পর একটি টুইট করেছিলেন রাজ্যপাল। সেখানে লেখা ছিল, তাঁদের মধ্যে ‘নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়’ হয়েছে। কিন্তু সেই টুইটটি কিছুক্ষণের মধ্যেই রাজ্যপালের সরকারি টুইটার হ্যান্ডল থেকে মুছে ফেলা হয়। নতুন টুইটে লেখা হয়, মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে আসায় ‘সস্ত্রীক আমি তাঁকে স্বাগত জানিয়েছি’।
আরও পড়ুন: নড্ডার সফরের আগে কোভিড নিয়ে সতর্ক বিজেপি, জনে জনে টেস্ট
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy