Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
flood

Flood Situation: বৃষ্টি কমলেও আতঙ্ক বাড়াচ্ছে ব্যারাজের ছাড়া জল, প্লাবনের আশঙ্কা দক্ষিণের পাঁচ জেলায়

ঝাড়খণ্ড, দুর্গাপুর এবং আসানসোলে প্রবল বৃষ্টি কারণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি মহকুমা এলাকায়।

মাইথন বাঁধ থেকে জল ছাড়া  হচ্ছে।

মাইথন বাঁধ থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২১ ১০:৫১
Share: Save:

বৃষ্টি কমলেও আশঙ্কা কাটছে না দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায়। টানা দু’দিন প্রবল বৃষ্টির জেরে ব্যারাজগুলিতে জল বেড়েছে। নদীগুলি ফুলে ফেঁপে উঠেছে। কোথাও আবার নদীর জল গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত করেছে। ফলে বৃষ্টির পর নতুন করে আতঙ্ক ধরাচ্ছে ব্যারাজ থেকে ছাড়া জল। আর তাতেই বানভাসি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে দক্ষিণবঙ্গের পাঁচ জেলা— হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম এবং বাঁকুড়ায়।

এই মুহূর্তে নিম্নচাপটি ঝাড়খণ্ডে অবস্থান করার ফলে সেখানে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। সেই বৃষ্টির জল এ রাজ্যের দিকে নেমে আসছে। ফলে ব্যারাজগুলির উপর চাপ বাড়ছে। সেই চাপ কমাতে ব্যারাজগুলি থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। যার ফলে নতুন করে বানভাসি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর তাতেই চিন্তার ভাঁজ বেড়েছে জেলা প্রশাসনগুলির। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য জেলা প্রশাসনগুলিকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।

শুক্রবার সকালেই মাইথন জলাধার থেকে ৮০ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে ৫৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। অন্য দিকে, দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে দেড় লক্ষে কিউসেকেরও বেশি জল ছাড়া হয়েছে। ফলে নতুন করে হাওড়া, হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক হয়। নদীবাঁধ পরিদর্শন করেন উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা। গত জুলাই-অগস্টে ভয়াবহ বন্যার ফলে নদীবাঁধ-সহ বেশির ভাগ জায়গার ব্যাপক ক্ষতি হয়। উদয়নারায়ণপুরের পাশাপাশি হুগলির আরামবাগ, খানাকুলের বিস্তীর্ণ এলাকাও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জল থইথই ঘাটালের মনসুখা।

জল থইথই ঘাটালের মনসুখা। নিজস্ব চিত্র।

ঝাড়খণ্ড, দুর্গাপুর এবং আসানসোলে প্রবল বৃষ্টি কারণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি মহকুমা এলাকায়। শুক্রবার সকাল থেকে মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুর ব্লকের অন্তর্গত কল্লা, ছত্রপুর, গুন্দুরিয়া-সহ বিস্তীর্ণ গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কান্দি-ভরতপুর রাজ্যে সড়কের উপর দিয়ে জল বইছে। দুর্গাপুর, ম্যাসেঞ্জোর ও তিলপাড়া ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার ফলে এই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

পূর্ব মেদিনীপুরের অনেক জায়গায় জলছবিটা আগের মতোই রয়েছে। ভগবানপুর, এগরা, পটাশপুর এলাকাতে জল যন্ত্রণা থেকে এখনও মুক্তি মেলেনি বাসিন্দাদের। অভিযোগ, কেলেঘাইয়ের বাঁধ মেরামতি এতটাই ঢিমেতালে চলছে যার জেরে এখনও বেশ কিছু জায়গা থেকে গ্রামে জল ঢুকছে। ইতিমধ্যেই ২০-২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের দাবি, কেলেঘাইয়ের বাঁধ মেরামতিতে কিছুটা সময় লাগলেও দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার ফলে ঘাটাল মহকুমা নতুন বানভাসি হয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ঘাটালের মনসুখা গ্রামে বন্যার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই প্রশাসনের তরফে সতর্ক করা হয়েছিল স্থানীয়দের। অন্য দিকে, বৃষ্টির কারণে পুরসভার বেশ কিছু এলাকাতে আগেই জল জমে ছিল। সেই সব এলাকা আবার নতুন করে জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শিলাবতী ও ঝুমি নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, “ঘাটালের নদীগুলিতে জল বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে। ফলে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা দেখা গিয়েছে। মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে।”

পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার বসনছরা গ্রাম এবং দাসপুর ব্লকে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কায় ভুগছেন মানুষজন। বৃহস্পতিবার রাতে ডিভিসি থেকে জল ছাড়ায় অজয় নদী ফুলে ফেঁপে উঠেছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে ২০-৩০টি গ্রাম। কয়েকশো বিঘা চাষের জমি এই মুহূর্তে জলের তলায়। বোলপুর-নতুনহাট রাজ্য সড়কের উপর জল উঠেছে, ফলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অন্য দিকে অজয়নদের বাঁধ ভাঙল পূর্ববর্ধমানের আউশগ্রামের ভেদিয়া অঞ্চলের সাঁতলা গ্রামের কাছে। এর ফলে সাঁতলা ও সুয়ারা দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি জল ঢুকেছে ভেদিয়া, বাগবাটি, কল্যানপুর, ফতেপুর, আওগ্রাম, কাঁঠালবাগান, প্রভৃতি গ্রামেও।বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই হুহু করে বাড়তে থাকে অজয়নদের জল। তাই দুর্বল অংশগুলি জলের চাপে ভেঙে পড়ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

flood West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy