Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Visva-Bharati University

বিশ্বভারতীতে এবিভিপিকে বৈঠকের অনুমতি! গৈরিকীকরণের অভিযোগ তৃণমূল-সহ অন্য ছাত্র সংগঠনের

দীর্ঘ দিন ধরে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্ত রাজনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, সেখানে এবিভিপি কী ভাবে বৈঠকের অনুমতি পায়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল-সহ অন্যান্য ছাত্র সংগঠন।

Picture of Visva-Bharati University

উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর সমস্ত রাজনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৩ ১৫:৫৯
Share: Save:

বিশ্বভারতীর ভিতর অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-র পড়ুয়াদের বৈঠক করার অনুমতি দিয়ে বিতর্কে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ দিন ধরে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্ত রাজনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, সেখানে এবিভিপি কী ভাবে বৈঠকের অনুমতি পায়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল-সহ অন্যান্য ছাত্র সংগঠন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গৈরিকীকরণের অভিযোগও তুলেছেন তারা। যদিও একে বিশ্বভারতীর অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব।

এবিভিপির সাধারণ সম্পাদক যাজ্ঞবল্ক্য শুক্লকে পাঠভবন এলাকায় তাঁদের সংগঠনের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করার অনুমতি দিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার সেই বৈঠক হয়েছে। এর পরেই তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

বিশ্বভারতীতে সমস্ত ছাত্র সংগঠন থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ দিন ধরেই তার প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য ভোটাভুটিও হয়নি। অভিযোগ, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর সমস্ত রাজনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মিটিং-মিছিল তো দূরের কথা, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলেও নিরাপত্তারক্ষীদের বাধার সম্মুখীন হতে হয় বলে অভিযোগ ছাত্রছাত্রীদের একাংশের। এই আবহে আরএসএসের এই ছাত্র সংগঠনটি কী করে বৈঠকের অনুমতি পেল, তা নিয়ে সরব হয়েছেন তাঁরা।

এর আগেও বিজেপির নানা কর্মসূচিকে ঘিরে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছিলেন উপাচার্য তথা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এ বার বিশ্বভারতীর আশ্রম চত্বরে ভিতরেই এবিভিপির বৈঠককে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যে আশ্রম চত্বরে পর্যটকদেরও প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, সেখানে এই রাজনৈতিক সংগঠন কী ভাবে বৈঠক করল, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। বিশ্বভারতীর সাঁওতালি বিভাগের ছাত্র তথা ছাত্রনেতা শুভ নাথের দাবি, ‘‘ছাত্র-ছাত্রীদের অধিকার ও দাবিদাওয়ার পক্ষে সরব যে সমস্ত সংগঠন, তাদের কণ্ঠরোধ করেন, তাদের উপর গুন্ডা লেলিয়ে দেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। কিন্তু বিজেপি, আরএসএসের মতো উপাচার্যের তোষামোদ করা লোকজনদের, এবিভিপির মতো ছাত্র সংগঠনকে বৈঠক করার অনুমতি দেন। বিজেপির পরিকল্পনামাফিক উপাচার্য চলছেন, এটাই স্পষ্ট। ছাত্র সংগঠনগুলি একত্রিত হয়ে এর জবাব দেবে।’’ প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছে দর্শন বিভাগে গবেষণারত ছাত্রী তথা তৃণমূলের বিশ্বভারতী ইউনিটের সভানেত্রী মীনাক্ষী ভট্টাচাৰ্যের কথায়। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীতে যে রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরাই আন্দোলন করুন না কেন, তাঁদের ব্রাত্য করে রাখা হয়। শিক্ষকদের পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঢুকতে দেওয়া হয় না। সেখানে আশ্রম প্রাঙ্গণের মধ্যে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের বহিরাগত ছাত্ররা বৈঠক করছেন, এটা ভাবনার বিষয়। এগুলি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের মদতেই হচ্ছে। আমরা এর বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করব, তা আলোচনার পর স্থির হবে।’’ যদিও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বার বার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি তাঁরা।

গোটা ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজেদের বিষয়, বলেছেন বীরভূম জেলা বিজেপির সভাপতি ধ্রুব সাহা। তিনি বলেন, ‘‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। এটা সম্পূর্ণ বিশ্বভারতীর অভ্যন্তরীণ বিষয়। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকরা রয়েছেন, তাঁরা এই বিষয়টি বুঝবেন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE