Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

বিক্ষোভের নামে তপ্ত দফাহাট

সুতির থানার পুলিশ গিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় তলব হয় বড়সড় পুলিশ বাহিনীর।

ভাঙচুরের ফলে উত্তেজনা দেখা দেয় বেলডাঙাতেও। ছবি: পিটিআই।

ভাঙচুরের ফলে উত্তেজনা দেখা দেয় বেলডাঙাতেও। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:১৬
Share: Save:

উত্তাপ কমলেও থামেনি বিক্ষোভ।

রবিবার সকাল থেকে সুতির দফাহাট এলাকায় তারই নজির ছড়িয়ে থাকল দফায় দফায়। নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা-বিক্ষোভের নামে তাণ্ডব দেখল সুতির ওই ছোট্ট জনপদ। পুলিশ জানায়, একাধিক দোকান ভাঙচুর করে আগুন লাগানো থেকে লুটপাট, ভাঙচুর বাদ যায়নি কিছুই।

সুতির থানার পুলিশ গিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় তলব হয় বড়সড় পুলিশ বাহিনীর। জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় শ’তিনেক কমব্যাট ফোর্স নিয়ে গিয়ে প্রায় ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় আয়ত্তে আনেন পরিস্থিতি। উত্তেজিত জনতাকে হটাতে প্রথমে লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। পাল্টা পুলিশকে লক্ষ্য করে উড়ে আসে বোমা, ইট।

আরও পড়ুন: বাংলায় পাল্টা বিজ্ঞাপন দিন, শাহকে অনুরোধ স্বপনের, আক্রমণ মমতাকে, বিশিষ্টদেরও

গ্রামবাসীদের দাবি, পুলিশ শূন্যে এগারো রাউন্ড গুলি ছোড়ে। দুপুরে ঘটনাস্থলে আসেন জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার। তবে তিনি গুলি চালানোর কথা মানতে চাননি। মুকেশ বলেন, ‘‘বিক্ষোভকারীরা গ্রামে ঢুকে কিছু বাড়িতে লুটপাট চালিয়েছে। বহু দোকানপাট পুড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশ তাদের সরাতে লাঠি চার্জ করতে গেলে বোমা মারে বিক্ষোভকারীরা। তবে গুলি চালানো হয়নি।’’ ওই ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ওই ঘটনার পরে জেলার মুখ্য ইমাম নিজামুদ্দিন বিশ্বাসকে শান্তির আবেদন জানিয়ে বার্তা দিতে বলে প্রশাসন। নিজামুদ্দিন জেলার মানুষের প্রতি আবেদন করেন— ‘‘শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন করুন। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে, তাঁদের পাশে নিয়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলুন।’’ জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার দাবি, ‘‘গত দু’দিনের তুলনায় এ দিন পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল।’’

এ দিন দফাহাটে, সুতির প্রাক্তন বিধায়ক তৃণমূলের ইমানি বিশ্বাস খবর পেয়েই ছুটেছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বিক্ষোভকারীরা ইমানির কথা তো শোনেইনি, উল্টে তাঁকে ও তাঁর সঙ্গীদের তাড়া করে। যদিও তাড়া করার কথা অস্বীকার করেন ইমানি। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘যারা এই কাণ্ড করেছে তারা সকলেই এলাকার ছেলে। আমি বার বার তাদের নিষেধ করলেও তারা কথা শোনেনি।’’ যা শুনে স্থানীয় ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আলফাজউদ্দিন বিশ্বাসের টিপ্পনি, ‘‘লুট করে ভোটে জিতলে এমনটাই হয়। এলাকায় কেউই তৃণমূল নেতাদের কথা শোনে না। তাদের আমল দেয় না।’’

বিক্ষোভ হয়েছে সাগরদিঘির মণিগ্রাম স্টেশনেও। সেখানেও ভাঙচুর চালানো হয়। ভাঙচুর চলে ফরাক্কার তিলডাঙা স্টেশনেও। শেখদিঘিতেও বিক্ষোভকারীরা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক বেশ কিছু ক্ষণ অবরোধ করে। রেজিনগরে বিক্ষোভকারীদের একাংশ স্থানীয় স্টেশনে ভাঙচুর চালায়। আগুন ধরিয়ে দেয় জিআরপি-র ঘর, পুরনো টিকিট কাউন্টারের ছাউনি এবং পুলিশ ও জিআরপি-র গাড়িতে। বিক্ষোভকারীদের বাধা দিতে গিয়ে জখম হন তিন রেল পুলিশকর্মী।

এ দিন ভোরে বহরমপুরে বিজেপির একটি মণ্ডল কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। বিজেপির জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক যোগ নেই। বিক্ষোভকারীদের একাংশই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’’

রবিবার বিকেল ৩টে থেকে সোমবার বিকেল ৩টে পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে বলে জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy