Advertisement
২১ ডিসেম্বর ২০২৪
Cyclone Yaas

Cyclone Yaas: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর আতঙ্কে দেগঙ্গায় গ্রাম ছাড়ছেন মানুষ

পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে মাইকিং করে গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হচ্ছে।

বিদ্যাধরী নদীর ভাঙন এবং ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর আতঙ্কে গ্রামবাসীরা। নিজস্ব চিত্র।

বিদ্যাধরী নদীর ভাঙন এবং ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর আতঙ্কে গ্রামবাসীরা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২১ ১৯:০৫
Share: Save:

আমপানের স্মৃতি এখনও টাটকা। ২০২০-র ২০ মে বিপুল গতিতে আছড়ে পড়েছিল সেই ঘূর্ণিঝড়। সেই ক্ষত মিলিয়ে যেতে না যেতেই আবারও চোখ রাঙাচ্ছে আরও এক ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’। প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে সেটি ২৬ মে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশায় আছড়ে পড়তে পারে। সেই আতঙ্কেই এ বার আগেভাগে এলাকা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়া শুরু করেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার দেগঙ্গার চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই গ্রামের মানুষ।

বিদ্যাধরী নদীপাড়ের দুই গ্রাম গাংনিয়া এবং গাংধুলাট। এক গ্রামবাসী চন্দ্রা বিশ্বাস জানান, গত বছরে আমপানে তাঁদের ঘরবাড়ি সব তছনছ হয়ে গিয়েছিল। সেই আতঙ্ক এখনও তাড়া করে বেড়ায় তাঁদের। আরও একটা ঘূর্ণিঝড় আসছে শুনে তাই আগেভাগেই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছেন বাড়ির বয়স্কদের নিয়ে। গাংধুলাট গ্রামের এক বাসিন্দা মুছা হক বলেন, “এখানে মানুষের আতঙ্ক নদীভাঙন। তার মধ্যে ঝড় আসছে। ফলে এই দুই আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন গ্রামবাসীরা।” চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের প্রধান হুমায়ুন রেজা চৌধুরী বলেন, “পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে আমরা মাইকিং করে গ্রামবাসীদের সতর্ক করার কাজ করছি। তাঁদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। অনেকে স্থানীয় স্কুলবাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। অনেকে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন।”

তবে এখানকার মানুষের সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক নদী ভাঙন। বিদ্যাধরী নদীর গ্রাসে দুই গ্রামের বহু ঘরবাড়ি চলে গিয়েছে। নদীবাঁধ তৈরির কথা হচ্ছে দীর্ঘ দিন ধরেই। কিন্তু এখনও তা হয়ে ওঠেনি বলেই জানিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান। চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত ৩০ বছর ধরে গাংনিয়া ও গাংধুলাট এলাকায় নদী ভাঙন অব্যাহত। তার উপর ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়লে শতাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে একশোরও বেশি বাড়ি। তাই এলাকার মানুষ আতঙ্কিত গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

ইয়াস-এর মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনগুলো ইতিমধ্যেই প্রস্ততি শুরু করে দিয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলার ফরাক্কাতেও জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে। শনিবারই এ নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেন ফরাক্কার বিডিও সঞ্জয় বিশ্বাস। মূলত নদীর ধারে যাঁদের বাড়ি তাদের কাছাকাছি প্রাথমিক স্কুলে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা, ঝড়ের সময় যাতে কোনও মৎস্যজীবী গঙ্গায় মাছ ধরতে না যান সেই দিকে বিশেষ নজর রাখার কথা বলা হয়েছে এই বৈঠকে। প্রতিটি পঞ্চায়েত প্রধানকে সতর্ক থাকার বার্তাও দিয়েছেন বিডিও। তিনি বলেন, “এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করার জন্য আমরা আগেভাগেই সমস্ত রকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।”

অন্য দিকে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় শনিবারই হাওড়ায় এসো পাঁছেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী(এন ডি আর এফ)-র এর বিশেষ দল। লুধিয়ানা থেকে অ্যাসিস্ট্যান্ট কম্যান্ডান্ট রঞ্জিত সিংহের নেতৃত্বে এই দল জেলাশাসক মুক্তা আর্যর সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ বৈঠক করেন। বিপর্যয়ের আগে ও পরে কী ভাবে কাজ করা হবে তা নিয়ে আলোচনা হয় জেলাশাসকের সঙ্গে। এনডিআরএফ-এর ৩০ ব্যাটেলিয়নের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ড্যান্ট জানান, শনবার হাওড়ায় গঙ্গার ধারের দোকানপাট ও জনবসতি এলাকায় ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। আগে থেকে কী করা উচিত সেটাও বোঝানো হয় এলাকাবাসীদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Deganga Cyclone Yaas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy