Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
State News

শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে টিএমসিপি-র ধর্নামঞ্চে উপাচার্যেরা, শুরু বিতর্ক

শিক্ষা শিবিরের একাংশের মতে, আচার্য-রাজ্যপালের ভূমিকা ঘিরে সম্প্রতি যে-বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে এবং উপাচার্যদের বার বার যে-ভাবে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে, এই পরিষদের উদ্দেশ্য তারই মোকাবিলা করা।

এনআরসি, সিএএ-বিরোধী টিএমসিপির ধর্নামঞ্চের নীচে (বাঁ দিক থেকে) সিধো কানহু বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপক কর, পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

এনআরসি, সিএএ-বিরোধী টিএমসিপির ধর্নামঞ্চের নীচে (বাঁ দিক থেকে) সিধো কানহু বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপক কর, পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২০ ০৬:২৯
Share: Save:

পারস্পরিক সমন্বয় বাড়াতে তাঁদের একটি পরিষদ গঠনের কথা মঙ্গলবার ঘোষণা করেন রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যেরা। আর তার পরেই উপাচার্যদের একাংশকে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ধর্নামঞ্চের চত্বরে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। উপাচার্যেরা ছাত্র সংগঠনের ধর্নায় থাকবেন কেন, সেই প্রশ্নকে ঘিরে শিক্ষক শিবিরের একাংশে বিতর্ক শুরু হয়েছে। তার মধ্যেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় মন্তব্য করেন, এ রাজ্যে উপাচার্যেরা খাঁচাবন্দি ও ভীত হয়ে রয়েছেন।

উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রের পরিস্থিতি নিয়ে ধনখড়ের নানা বিরূপ মন্তব্যের জেরে তাঁর সঙ্গে রাজ্য সরকার তথা উপাচার্যদের ঠান্ডা লড়াই চলছে। সেই আবহে এ দিন দুপুরে সল্টলেকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে পরিষদ গড়ার কথা ঘোষণা করা হয়। সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়, সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে এই পরিষদ গঠন করা হয়েছে। এর প্রথম সভাপতি হয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস।

শিক্ষা শিবিরের একাংশের মতে, আচার্য-রাজ্যপালের ভূমিকা ঘিরে সম্প্রতি যে-বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে এবং উপাচার্যদের বার বার যে-ভাবে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে, এই পরিষদের উদ্দেশ্য তারই মোকাবিলা করা। তবে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য জানান, রাজ্যপালের সঙ্গে কোনও সংঘাতের আবহ থেকে এই পরিষদ গড়া হয়নি। এই পরিষদ গঠনের পরিকল্পনা অনেক পুরনো। এমন একটি পরিষদ গড়া হলে উপাচার্যদের মধ্যে সমন্বয় বাড়বে।

আরও পড়ুন: গুলির হুমকিতে নালিশ দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে

ওই পরিষদ গঠনের মঞ্চেই উপাচার্যেরা জানিয়ে দেন, রাজ্য সরকারের দিক থেকে তাঁদের উপরে কোনও চাপ নেই। সরকার পোষিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ৯৫ শতাংশ টাকা আসে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে। তাই সরকারের কাছে তাঁদের যেতেই হবে। তবে রাজ্যের দ্বারা তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রভাবিত হয় না। তাঁরা স্বাধীন ভাবেই কাজকর্ম করেন।

তার পরেই বিকেলে দেখা যায়, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপি-র ধর্নামঞ্চের নীচে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বসে আছেন সিধো কানহু বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপক কর, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশবাবু, কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায়। ধর্নামঞ্চের চত্বরে এ দিন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা গিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকেও।

রাজ্যের স্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যেরা কেন ছাত্রদের ধর্নায় উপস্থিত, প্রশ্ন তোলেন শিক্ষা শিবিরের একাংশ। সুবীরেশবাবু বলেন, ‘‘আমরা তো উপাচার্য হিসেবে ওখানে যাইনি। সাধারণ মানুষ হিসেবে গিয়েছিলাম। ছাত্রছাত্রীরা যে-বিষয়ে আন্দোলন করছেন, তাকে সমর্থন জানাতে গিয়েছিলাম। ধর্নার মঞ্চে উঠিনি আমরা। মঞ্চের নীচে ছিলাম।’’

সুবীরেশবাবুরা এ কথা বললেও বিতর্ক থেকেই গিয়েছে। রাজ্যপাল ধনখড় এ দিন বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজ়িয়ামে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘উপাচার্যেরা ভীত ও খাঁচাবন্দি। তাই ওঁদের প্রকাশ্যে বলতে হচ্ছে যে, ওঁরা ভীত নন। এটাও বলতে হচ্ছে যে, ওঁদের উপরে রাজ্য সরকারের কোনও চাপ নেই।’’ রাজ্যপালের দাবি, কয়েক জন উপাচার্য তাঁকে ফোন করে জানিয়েছেন, তাঁরা ভয়ে ভয়ে আছেন।

ছাত্র সংগঠনের ধর্নামঞ্চের চত্বরে উপাচার্যদের একাংশের উপস্থিতি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রত্যেকেরই প্রতিবাদ করার অধিকার আছে। আমার পাশে ওঁরা থাকবেন না তো কি গুন্ডারা থাকবে?’’ চাপ বা চাপহীনতার প্রসঙ্গও উড়িয়ে দিয়েছেন পার্থবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমরা উপাচার্যদের কোনও চাপ দিই না। ওঁরা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Partha Chatterjee TMC CAA NRC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy