Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
COVID-19

Vaccine: টিকা চাই, যে করেই হোক! ফোনে ফোনে ব্যতিব্যস্ত বাগবাজারের স্টোরের কর্মচারীরা

এখন টিকার আকাল পড়েছে। যোগানও অনিয়মিত। ফলে হু-হু করে বেড়েছে চাহিদা। কিন্তু তার তুলনায় টিকা অপ্রতুল।

সোজা পথে টিকা না পেয়ে অতঃপর চেনা-পরিচিতদের ধরে-করে টিকা নেওয়ার ব্যবস্থা করছেন মানুষ।

সোজা পথে টিকা না পেয়ে অতঃপর চেনা-পরিচিতদের ধরে-করে টিকা নেওয়ার ব্যবস্থা করছেন মানুষ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২১ ১১:৫৭
Share: Save:

দয়া করে কোভ্যাক্সিনের একটা টিকার ব্যবস্থা করে দিন!

বাবা-মায়ের বয়স হয়েছে। ওঁদের জন্য কোভিশিল্ডের প্রথম টিকা কি পাওয়া যাবে? আপনাদের হাতে তো সব টিকা রয়েছে। একটা অন্তত ব্যবস্থা করে দিন না!

নিত্যদিন ফোনে বেসামাল অবস্থা অমল হালদার, সমর রায়দের (নাম পরিবর্তিত)। এঁরা বাগবাজারে সরকারি ভ্যাকসিন স্টোরে কর্মরত। ফলে তাঁদের পরিচিত, অল্প পরিচিতেরা ধরে নিয়েছেন, তাঁদের অনুরোধ করেই হাতে আসবে মহার্ঘ কোভিড টিকা। প্রথম যখন কোভিডের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছিল, তখন অনেকেই অনীহা দেখিয়েছিলেন। অবহেলা এবং হেলাফেলায় বহু টিকা নষ্ট করে ফেলতে হয়েছে। কারণ, একটি ভায়াল একবার খুলে ফেললে সেটি শেষ না করে আর বন্ধ করা যায় না! তখন টিকা নষ্ট হয়েছে। কিন্তু কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আসার পর পরিস্থিতি যখন ক্রমশ ঘোরাল হচ্ছে, প্রতিদিন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা, তখন টিকা নিতে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভিড় জমিয়েছেন রাজ্যের মানুষ।

কিন্তু এখন টিকার আকাল পড়েছে। যোগানও অনিয়মিত। ফলে হু-হু করে বেড়েছে চাহিদা। কিন্তু তার তুলনায় টিকা অপ্রতুল। সোজা পথে টিকা না পেয়ে অতঃপর চেনা-পরিচিতদের ধরে-করে টিকা নেওয়ার ব্যবস্থা করছেন মানুষ। সেই জাঁতাকলেই পড়ে গিয়েছেন বাগবাজারের সরকারি ভ্যাকসিন স্টোরের কর্মীরা। সারা দিনে শ’য়ে শ’য়ে ফোন আসছে— টিকা দিন! ফোনকারীদের কেউ তাঁদের ব্যক্তিগত স্তরে চেনা। অনেকেই অচেনা!

গত জানুয়ারি মাস থেকে এখনও পর্যন্ত বাগবাজারের ওই স্টোরে ১কোটি ২৫ লক্ষের উপর কোভিড টিকা এসেছে। প্রতি ডোজের হিসাব ঠোঁটস্থ সেখানে কর্মরত সরকারি কর্মীদের। প্রতি ভায়াল গুনে জেলায় জেলায় টিকাবন্টন থেকে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণের মতো গুরুদায়িত্ব সামলাচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের দৈনিক হাজারো কাজের মাঝে কয়েক’শ অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসছে কোভিড টিকা চেয়ে। স্টোরের এক কর্মীর কথায়, ‘‘একদিকে কাজের চাপ। অন্যদিকে পরিচিত-অপরিচিতদের টিকার বায়না। আমাদের তো নাভিশ্বাস উঠেছে!’’ কখনও আবেগতাড়িত আবেদন। কখনও বাড়তি টাকার লোভ। সব ধরনের অভিজ্ঞতাই তাঁদের হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন কর্মীদের একাংশ। এক কর্মীর কথায়, ‘‘কিছুদিন আগেই ১৫ জনের একটা দল ফোন করেছিল। টিকা প্রতি ২,০০০ টাকা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাঁদের বুঝিয়ে বলেছি, এটা সম্ভব নয়।’’ ওই কর্মীদের বক্তব্য, ‘‘আমাদের কর্তব্য প্রতিষেধকের প্রতিটি টিকার হিসাব রাখা। টিকার স্টোর থেকে টিকা দেওয়া হয় না। এটাই বোঝাচ্ছি সকলকে।’’

কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পর্যাপ্ত টিকার যোগান নেই বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রাজ্য সরকারও টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা সিরাম এবং ভারত বায়োটেকে টিকার বরাত দিয়েছে। কিন্তু তারাও পর্যাপ্ত যোগান দিতে পারছে না। ফলে টিকার খোঁজে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আর বাগবাজারের টিকার স্টোরে অনবরত ফোন বাজছে অমল-সমরদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Vaccine Corona Vaccine COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy