সাইনি দাস।
উত্তরপ্রদেশের নয়ডায় এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী, নদিয়ার চাকদহের বাসিন্দা সাইনি দাসের (২৫) ঝুলন্ত দেহ মেলে গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে গৌতম বুদ্ধ নগরের বিসারক থানা এলাকায় তাঁরই ভাড়া করা ফ্ল্যাটে।
পুলিশ ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও সাইনির বাবা, চাকদহের নরেন্দ্রপল্লির বাসিন্দা শান্তনুর অভিযোগ, খুন করা হয়েছে মেয়েকে। পুলিশ তা ধামাচাপা দিচ্ছে। পুলিশ খুনের অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেছে দাবি করে শান্তনু জানিয়েছেন, আদালতে মামলা করবেন তিনি। পুলিশের দাবি, গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন সাইনি।
শান্তনু জানিয়েছেন, গত বছর এক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ‘বিবিএ’ পাশ করে ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ দিয়ে মেয়ে প্রথমে নয়ডায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়েছিলেন। পরে অন্য প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি কলকাতায় এসেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। পর দিন সকালেই ফিরে যান। ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে মেয়ের দেহ উদ্ধার হয়।
শান্তনু বলেন, ‘‘২৩ ফেব্রুয়ারি সকালে পুলিশ আমাকে ফোনে জানায়, মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। আমার মেয়ে এত ভীরু নয়। ওই দিন রাতে মেয়ের আবাসনে গিয়ে দেখি, তখনও ফ্ল্যাট সিল করা হয়নি। ঘরের ছিটকিনি ভাঙা। ফ্ল্যাটের পিছনের দিকের ব্যালকনির স্লাইডিং জানলা খোলা। আবাসনের এক বাসিন্দা আমাকে জানান, তিনি ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে অপরিচিত কয়েক জনকে আবাসন থেকে বেরোতে দেখেছেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও তা ধরা পড়ে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মেয়ের চার জন সহকর্মীর সঙ্গে মৃত্যুর ঘটনার যোগ আছে। তাদের মধ্যে এক জন সাইনিকে উত্ত্যক্ত করত। আবাসনের সিসি ক্যামেরায় তাদের ছবি ধরা পড়েছে। সাইনির এক বন্ধু তাদের চিহ্নিত করেছেন। পুলিশকে তা বলা হলেও তাদের ডেকে জেরা পর্যন্ত করা হয়নি।’’
ময়না-তদন্তের পরে নয়ডাতেই মেয়ের অন্তেষ্টি সারেন শান্তনু। ফিরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে ই-মেল করে বিষয়টি জানান। শান্তনুর দাবি, গৌতম বুদ্ধ নগর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (মহিলা সুরক্ষা) প্রীতি যাদব-সহ পুলিশের বেশ কয়েক জন কর্তার সঙ্গে দেখা করে তিনি অভিযোগ জানিয়েছেন। তবু পুলিশ খুনের লিখিত অভিযোগ নেয়নি। প্রীতি বলেন, ‘‘ঘটনাস্থল আমার আওতায় পড়ে না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট জায়গায় পাঠিয়েছি।’’ ঘটনার তদন্তকারী আধিকারিক প্রমোদ কুমারের বক্তব্য, ‘‘ওই তরুণী আত্মহত্যা করেছেন। ময়না-তদন্তেই তা স্পষ্ট হয়েছে। তাঁকে খুন করা হয়েছে, এমন কোনও তথ্য-প্রমাণ মেলেনি।’’ তবে তিনি জানান, সাইনির ঘরে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি। আত্মহত্যার কারণও জানা যায়নি। প্রমোদের দাবি, ‘‘তরুণীর ফোনের কললিস্ট পরীক্ষা করে কোনও সূত্র মেলেনি। তবে জানা গিয়েছে, এক জনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। পরে বিচ্ছেদ হলে অন্য এক জনের সঙ্গে সম্পর্ক হয় তরুণীর।’’
শান্তনুর অভিযোগ, ‘‘পুলিশ বলতে চাইছে, সাইনি উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করত। খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই এই গল্প ফাঁদা হচ্ছে। খুনের তদন্ত চেয়ে আমি নয়ডার স্থানীয় আদালতে মামলা করব কিছু দিনের মধ্যেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy