—ফাইল চিত্র।
আনলক-৪ পর্বে ৭ সেপ্টেম্বর থেকে দেশ জুড়ে মেট্রো চলাচলে ছাড় দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। শনিবার জারি করা নির্দেশিকায় অবশ্য শহরতলির এবং দূরপাল্লার ট্রেন চালুর বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো চলাচল শুরুর ব্যাপারে রাজ্যের আগ্রহের কথা জানিয়ে শুক্রবারই রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনোদ যাদবকে চিঠি লিখেছেন স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। দূরত্ব-বিধি এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দিষ্ট নির্দেশিকা মেনে পরিষেবা শুরু করার কথা বলার পাশাপাশি কোন পরিস্থিতিতে কী ভাবে ট্রেন চলবে তা চূড়ান্ত করার আগে রাজ্যের সঙ্গে পরামর্শ করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
এই অবস্থায় ৮ সেপ্টেম্বর থেকে কলকাতায় মেট্রো চলাচল শুরু হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট রেল কর্তারা। কারণ, ৭ তারিখ এ রাজ্যে সার্বিক লকডাউন। দেশের মধ্যে এক মাত্র কলকাতা মেট্রোই রেল বোর্ডের অধীনে। মেট্রো রেলের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, পরিষেবা চালুর আগে রেল বোর্ডের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হবে। তার পরেই কথা বলা হবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: দুর্যোগ মোকাবিলা আইন প্রয়োগ করে পরীক্ষা আটকে দেওয়ার জন্য চিঠি মুখ্যমন্ত্রীদের
তবে মেট্রো রেল সূত্রে বলা হচ্ছে, পরিষেবা শুরুর যাবতীয় প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই সেরে রাখা হয়েছে। আপাতত টোকেন কিনে মেট্রোয় সফর করা যাবে না। স্মার্ট কার্ডই ব্যবহার করতে হবে। সেই কার্ড রিচার্জের জন্য প্রতিটি স্টেশনে একটি মাত্র কাউন্টার খোলা থাকবে। তবে মেট্রোর কর্মীদের সঙ্গে যাত্রীদের সংস্পর্শ যতটা সম্ভব এড়াতে মেট্রো রেলের অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে স্মার্ট কার্ড রিচার্জ করার উপরেই জোর দেওয়া হবে। স্যানিটাইজ়েশনের জন্য প্রতিটি স্টেশনে অ্যালকোহল ডিস্পেন্সার থাকবে। যাত্রীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। স্টেশনে প্রবেশের আগে থার্মাল গানের সাহায্যে তাঁদের তাপমাত্রা মাপবেন মেট্রোর কর্মীরা। বয়স্ক এবং শিশুদের মেট্রোয় না-চড়ার জন্য অনুরোধ করা হবে।
তবে, পুজোর মরসুমে এসপ্ল্যানেড, দমদম, কালীঘাট, রবীন্দ্রসদন, চাঁদনি চক, রবীন্দ্র সরোবর, কবি নজরুলের মতো স্টেশনে ভিড় সামাল দেওয়া নিয়ে চিন্তিত মেট্রো কর্তৃপক্ষ। গোড়ায় কম সংখ্যক ট্রেন চালানো হলেও পুজোর মুখে দু’টি ট্রেনের মধ্যে সময়ের ব্যবধান কমানোর কথা ভাবা হয়েছে। ভিড় সামাল দিতে রাজ্যের সহায়তা চাওয়া হতে পারে বলেও খবর।
আরও পড়ুন: রাজ্যের ক্ষমতা কমল চতুর্থ পর্বের আনলকে, লকডাউনে নতুন রাশ
আপাতত শহরতলির ট্রেন চালুর অনুমতি দেওয়া না-হলেও সে ব্যাপারে প্রস্তুতিও সেরে রেখেছেন রেল কর্তৃপক্ষ। পূর্ব রেলের হাওড়া, শিয়ালদহ এবং অন্যান্য ডিভিশনের আধিকারিকেরা একাধিক বার বৈঠক করেছেন। তৈরি দক্ষিণ-পূর্ব রেলও।
মাস দুয়েক আগে আরপিএফ এবং রেলের আধিকারিকেরা বিভিন্ন স্টেশনের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন। জনবহুল স্টেশনে ভিড় নিয়ন্ত্রণে যাত্রীদের ঢোকা এবং বেরোনোর জন্য আলাদা প্রবেশদ্বার চিহ্নিত করা ছাড়াও প্ল্যাটফর্মে হকার ও ভেন্ডরদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার কথা ভাবা হয়েছে। হাওড়া-বর্ধমান, শিয়ালদহ উত্তর, মেন এবং দক্ষিণ শাখায় জনবহুল স্টেশনগুলোর কথা মাথায় রেখে বেশ কিছু ট্রেনকে সব স্টেশনে দাঁড় না-করানোর (গ্যালপিং) কথাও ভাবা হয়েছে। ঠিক হয়েছে, শিয়ালদহ ডিভিশনে শুধু ১২ কামরার ট্রেন চালানো হবে। প্রতিটি যাত্রার পরে স্যানিটাইজ় করা হবে ট্রেনের কামরা।
তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিন কয়েক আগে এক চতুর্থাংশ ট্রেন চালানোর যে কথা বলেছেন, তা কার্যকর করা যাবে কি না, সে ব্যাপারে সন্দিহান রেল কর্তারা। তাঁদের একাংশের মতে, ট্রেনের সংখ্যা সীমিত রাখলে প্ল্যাটফর্মে ভিড় বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। পুজোর মরশুমে কলকাতার বিভিন্ন বাজারে মফসসল থেকে যাত্রীদের আনাগোনা বাড়বে। সেই ভিড় নিয়ন্ত্রণে আনা না-গেলে স্টেশনে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হবে। তাঁরা বলছেন, শিয়ালদহ, নিউ মার্কেট, বড়বাজার, পোস্তা-সহ কলকাতার প্রধান বাজারগুলি সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে ভাগ ভাগ করে খোলা রাখলে একই দিনে স্টেশনে ভিড় এড়ানো যেতে পারে।
নবান্ন সূত্রে বলা হচ্ছে, রেল বোর্ডের সঙ্গে বৈঠকেই এই সব খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে মত বিনিময় করা হবে। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা জানান, রেল কী ভাবছে, তা প্রথমে জানা দরকার। সরকারেরও নিজস্ব চিন্তাভাবনা রয়েছে। রেল বা মেট্রো পরিষেবা শুরু করলে সংক্রমণ যাতে না-বাড়ে, তা নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে রেলকে সব রকম সহযোগিতাই করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy