সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলল বাম ও কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন।—নিজস্ব চিত্র।
সংগঠনের ঝান্ডার পাশাপাশি জাতীয় পতাকা। গলায় জাতীয় সঙ্গীত। শহরের রাস্তায় একসঙ্গে পা মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের পক্ষে আওয়াজ তুলল বাম ও কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন। প্রতিবাদ হল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিলিপি ছিঁড়ে ও পুড়িয়ে।
ছাত্রদের দেখানো পথ বেয়েই আগামী ২৭ ডিসেম্বর, শুক্রবার কলকাতার রাজপথে একত্রে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাম ও প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) প্রতিবাদে এবং আগামী ৮ জানুয়ারির সাধারণ ধর্মঘটের প্রতিবাদে শুক্রবার সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে মহাজাতি সদন পর্যন্ত মিছিল হবে। আলিমুদ্দিনে সোমবার ১৭ বাম দলের বৈঠকের পরে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়েছেন, ওই দিন কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে যৌথ মিছিলে সব ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক সংগঠন ও ব্যক্তিকে তাঁরা আহ্বান জানাচ্ছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রও তাঁদের দলের সাংসদ, বিধায়ক-সহ সব স্তরের নেতা-কর্মীদের পূর্ণ শক্তিতে মিছিলে যোগ দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন এবং মৌলানা আজাদ কলেজের সামনে থেকে এ দিন মিছিল করে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন পড়ুয়ারা। বামফ্রন্টের চার শরিক দলের ছাত্র সংগঠন এসএফআই, এআইএসএফ, পিএসইউ এবং ছাত্র ব্লকের পাশাপাশিই আমন্ত্রিত হয়ে ‘জনগণমন যাত্রা’য় শামিল হয়েছিলেন কংগ্রেসের ছাত্র পরিষদ এবং সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের সংগঠন আইসা-র প্রতিনিধিরা। বড়দের মিছিলে কংগ্রেসের সঙ্গে হাঁটতে লিবারেশন রাজ্য নেতৃত্বের প্রাথমিক আপত্তি থাকলেও বিমানবাবু-সহ অন্য বাম নেতাদের যুক্তি ও আবেদনে তাঁরা শেষ পর্যন্ত সাড়া দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মশানজোড় নীল-সাদা হবেই, দাবি অনুব্রতের
সমাবেশে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, গোটা দেশে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের বিভাজনের নীতি ও অপচেষ্টা’র বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। তাঁরাই প্রতিরোধের পথ দেখাচ্ছেন। ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা ভোটের ফল উল্লেখ করে সুজনবাবু বলেন, ‘‘মোদী-শাহেরা বিরোধীমুক্ত ভারত চাইছেন। কিন্তু ঝাড়খণ্ডের মানুষ দেখালেন, তাঁরা বিজেপির বিভাজনশূন্য ভবিষ্যতের দিকে এগোতে চান।’’ পরে বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেনবাবুও বলেন, ‘‘বিজেপি যতই ধর্মীয় উন্মাদনার চেষ্টা করুক, মানুষ অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সচেতন বলেই ঝাড়খণ্ড এমন রায় দিয়েছে।’’
ঝাড়গ্রামের এক গ্রাম থেকে রানি রাসমণির সমাবেশে এসেছিলেন এক দল কলেজ ছাত্র। পাথরপ্রতিমার রাক্ষসখালি হাইস্কুল থেকে দল বেঁধে এসেছিল ১০ জন দশম শ্রেণির ছাত্র। তাদের এক জন সুমন দাসের বক্তব্য, ‘‘নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আমাদের ক্লাসের স্যারেরা বলেছেন। যতটা বুঝেছি, মনে হয়েছে এর একটা প্রতিবাদ হওয়া দরকার।’’
আরও পড়ুন: পড়ুুয়া বিক্ষোভে বিদায়, কিন্তু আজও যাদবপুর যাবেন, বললেন ধনখড়
এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দেশে বেকারির সমস্যা, কাজ নেই, শিল্প নেই, পড়ার খরচ বাড়ছে। নয়া নাগরিকত্ব আইন এনে এ সব সমস্যা থেকে সাধারণ মানুষের মুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’’ কলেজ স্কোয়ারে এ দিন প্রতিবাদ-অবস্থান করেন ‘শিল্পী, সাংস্কৃতিক, বুদ্ধিজীবী মঞ্চে’র তরফে বিভাস চক্রবর্তী, সুজাত ভদ্র, মীরাতুন নাহার প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy